পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পবিত্র মেরাজের বহুমুখী শিক্ষা গ্রহণ করে মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে হবে। ঈমানদার ব্যক্তিদের জন্য সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে মেরাজের ঘটনা। মেরাজের ঘটনা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। রাসুল (সা.) সশরীরে জাগ্রত অবস্থায় আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করে গোটা উম্মতকে গৌরবান্বিত করেছেন। বিভিন্ন মসজিদে আজ জুমার খুৎবাপূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম ও খতিবরা এসব কথা বলেন। রাজধানীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজম কমপ্লেক্সে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রচুর মুসল্লির সমাবেশ ঘটে। নগরীর বিভিন্ন মসজিদগুলোতে জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় রাস্তার ওপর মুসল্লিদের জুমার নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম ও ভারপ্রাপ্ত খতীব মুফতি মুহাম্মদ মুহিব্বুলল্লাহিল বাকী আজ জুমার বয়ানে বলেন, রাসুল (সা.) এর বায়ান্ন বছর বয়সে নবুওয়াতের দ্বাদশ বর্ষে এশারের নামাজের পর হাতিমে কা’বা থেকে বায়তুল মুকাদ্দিস হয়ে সপ্তাকাশ পাড়ি দিয়ে জান্নাত, জাহান্নাম দেখে ছিদরাতুল মুনতাহা অতিক্রম করে আল্লাহ তায়ালার সাথে দিদার লাভ করেন।
পেশ ইমাম বলেন, ঘর থেকে বের হওয়ার সময় যে দরজার কড়া নড়াচড়া শুরু হয়েছিল তা বন্ধ হওয়ার আগেই এত স্বল্প সময়ে সব ভ্রমণ শেষ করে ফিরে আসার ঘটনাটিই ইসরা ও মেরাজ নামে খ্যাত। বিজ্ঞান এক সময় তার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে ঘটনাটিকে অস্বীকার করেছিল। বর্তমান বিজ্ঞানের কাছে আল্লাহ তায়ালা তাঁর রহস্য ভান্ডার থেকে একটু রহস্য উন্মোচন করায় বিজ্ঞান বলছে এতো স্বল্পসময়ে এরকম ঘটনা ঘটা সম্ভব। কারণ কারো গতি আলোর গতি থেকে বেশী হলে সময় শুধু তার জন্য থেমে থাকে না বরণ সময় তার জন্য উল্টো দিকে তথা অতীতের দিকে চলতে থাকে।
আমরা জানি রাসুলেপাক (সা.) এর বাহনের নামই ছিল বোরাক তথা বিদ্যুৎ আলো, মেরাজ শুধু অলৌকিকত্ব প্রকাশ করার জন্য ঘটানো হয়নি বরং তার মধ্যে বহুমুখী উদ্দেশ্য রয়েছে। যেমন প্রথমত রাসুলেপাক (সা.)কে খোদ আল্লাহ তায়ালা নিজের কাছে ডেকে নিয়ে সান্তনা দেয়া। যেহেতু হযরত খাদিজা (রা.) এবং পরম হিতাকাঙ্খী আবু তালেবের ইন্তেকাল, মুশরিকদের জোর-জুলুম অত্যাচার বেড়ে যাওয়ার কারণে বছরটি ছিল শোকের বছর। দ্বিতীয় ইলাহী সমরাজ্যের ব্যবস্থাপনা ও কুদরতের নির্দেশনাবলী পর্যবেক্ষণ করানো। তৃতীয়ত কল্যাণমুখী ও ইসলামী রাষ্ট্রের রূপ-রেখা প্রদান। চুতর্থ বিরল সম্মাননা ও সংবর্ধনা দেয়া। পঞ্চমত সংবর্ধিত হয়ে নামাজ নামের হাদিয়া ও অন্যান্য সুসংবাদ উম্মতের জন্য আল্ল¬াহ তায়ালার পক্ষ থেকে গ্রহণ করা। মেরাজুন-নাবী থেকে শিক্ষা না নিয়ে মেরাজুন নবীকে শুধু অনুষ্ঠান হিসেবে উদযাপন করা হলো ফলের মূল সারবত্তা বাদ দিয়ে ফলের খোসা চিবানোর মত। আল্ল¬াহ তায়ালা আমাদেরকে মেরাজুন-নবীর ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন!
ভোলা সদর নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন জামে মসজিদের খতীব মাওলানা এ কে এম মুশাররফ হুসাইন আজ জুমার খুৎবার বয়ানে বলেছেন, বরকতময় রমজানের রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত পাওয়ার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করা কর্তব্য, যে জিনিষের প্রস্তুতি যত সুন্দর, তার রেজাল্টও তত সুন্দর। আমাদের দেশে রমজানের প্রস্তুতির দিকে তাকালে আফসুস করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। যেমন সরকারের প্রস্তুতি হলো খাদ্য জাতীয় বস্তু আমদানি করা। মিডিয়ার প্রস্তুতি হলো ঈদের নাটক, সিনেমা তৈরীর আশ্লিলতার মহা উৎসব, ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি হলো খাদ্য জাতীয় বস্তু মজুদ করে দাম বাড়িয়ে রোজাদারদের কষ্ট দেয়া,সাধারণ মানুষের প্রস্তুতি হলো, রমজানের প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য আগাম খরিদ করা আর ঈদের কাপড় কেনার জন্য এক মার্কেট থেকে আর মার্কেটে ঘুরার মহা প্রতিযোগিতা। এগুলো পরিহার করে, প্রথম প্রস্তুতি পর্ব হলো, দীর্ঘ এগারোটি মাসের মধ্যে এমন কোনো গুনাহ হয়তবা আমরা করে ফেলেছি, যে গুনাহ মাফ হবার নয় এবং এ গুনাহের কারণে আগত রমজানের নেক আমল গুলো কবুল নাও হতে পারে, তাই আল্লাহ তায়ালার কাছে এখন থেকেই খালেস দেলে তওবা করে পিছনের গুনাহ গুলো মাফ করিয়ে নিতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তওবাতুন নছুহা করে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করার তৌফিক এনায়েত করুন। আমীন!
রাজধানীর জুরাইন ২২৭ নং মুরাদপুর শাহী জামে মসজিদেও খতীব মুফতি মুরশিদুল আলম আজ জুমার বয়ানে বলেন, আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, প্রত্যেক প্রাণীকেই একদিন মৃত্যুর স্বাধ গ্রহণ করতে হবে। আমাদেরকেও একদিন দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হবে। খতীব বলেন, রাসুল (সা.) শাবান মাসে অধিক পরিমাণ নফল রোজা রাখতেন। আম্মাজান আয়শা সিদ্দিকা (রাযি.) তাঁকে রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিঁনি বলেন, শাবান মাস এমন একটি মাস। যে মাসে বান্দার হায়াত, মউত, রিজিক, দৌলতসহ সর্ব বিষয়ে ফয়সালা হয়ে থাকে। তাই আমি চাই আমার বিষয়ে যখন আল্লাহ সিদ্ধান্ত নেবেন তখন যেনো আমি রোজাদার অবস্থায় থাকি। এ জন্যই আমি এ মাসে বেশি বেশি রোজা রাখি। আল্লাহ সবাইকে শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখার তৌফিক দান করুন। আমীন!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।