Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মীর কাসেমের বিচারপ্রক্রিয়া

প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৫ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বিচার শুরু হয়
মালেক মল্লিক : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর মামলার বিচারপ্রক্রিয়া চলে দীর্ঘ প্রায় তিন বছর। ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এ বিচারের কার্যত্রম শুরু হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ পর্যন্ত চলে তার বিচারকার্যক্রম। এর আগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের এই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৩ সালের ১৬ মে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরু হয়।
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আসে ট্রাইব্যুনালে মীর কাসেমের মৃত্যুদ-ের রায়। চলতি বছর ৮ মার্চ আসে আপিলের রায়। আপিলেও মীর কাসেমের মৃত্যুদ- বহাল থাকে। ১১ নম্বর অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা কিশোর জসীম হত্যার দায়ে মৃত্যুদ- বহাল। সর্বশেষ গত ৩০ আগস্ট রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। ফলে তার মৃত্যুদ-াদেশ বহাল থাকে। দীর্ঘ বিচারকার্যক্রম শেষে আজ ফাঁসির মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর প্রভাবশালী নেতা মীর কাসেম আলীর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হলো।
ট্রাইব্যুনালের রায় : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মীর কাসেম ও নিজামীকে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মৃত্যুদ-াদেশ দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২। মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, নির্যাতনের ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ৯টিতে সর্বসম্মতভাবে এবং একটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে দ- ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল। বাকি চারটিতে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রায়ে নির্যাতনসংক্রান্ত আটটি ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১০ ও ১৪ এবং হত্যাসংক্রান্ত দু’টি ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। হত্যাসংক্রান্ত দু’টি অভিযোগে মীর কাসেমকে মৃত্যুদ-াদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া আটটি অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ-াদেশ দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ২ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর; ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগের প্রতিটিতে ৭ বছর করে এবং ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর কারাদ- দেয়া হয়।
আপিলের রায় : ট্রাইব্যুনাল রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর আপিল করেন মীর কাসেম। আপিলে তার খালাস চাওয়া হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে চলতি বছর ৮ মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তার আপিল আংশিক মঞ্জুর করে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ১১ নম্বর অভিযোগে তার ফাঁসি বহাল রাখা হয়। এই অভিযোগটি ছিল কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসীমকে অপহরণ, ডালিম হোটেলে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা এবং লাশ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেয়ার অপরাধ সংক্রান্ত। খালাস দেয়া হয় ১২ নম্বর অভিযোগ থেকে। এছাড়া আপিলের রায়ে ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হওয়া তিনটি অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়। অভিযোগ নম্বর ২, ৩, ৭, ৯, ১০, ১১ এবং ১৪-তে তার সাজা বহাল রাখা হয়।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ : চলতি বছর ৬ জুন মীর কাসেমের ফাঁসির রায় বহাল রেখে আপিলের রায় প্রকাশ করে। ১৯ জুন মীর কাসেম রিভিউ আবেদন করেন। ২৪ আগস্ট রিভিউ শুনানি শুরু হয়। সর্বশেষ ৩০ আগস্ট রিভিউয়ে মৃত্যুদ- বহাল রেখে রায় দেন আদালত। একই দিন বিকালে সুপ্রিম কোর্ট ওয়েবসাইটে রায়ের অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এর আগে ২৯ পৃষ্ঠার রিভিউয়ের এই রায়ে সই করেন প্রধান বিচারপতিসহ সংশ্লিষ্ট বিচারপতিরা। কারাগারে পাঠানো হয় ওই অনুলিপি। মীর কাসেমের কাছে জানতে চাওয়া হয় প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা বিষয়ে। মীর কাসেম প্রাণভিক্ষা আবেদন না করায় এরপর দ- কার্যকর করা হয়। আজকের ফাঁসির মধ্য দিয়ে সব প্রক্রিয়াসহ তার বিচারকার্যক্রম সমাপ্তি হলো।



 

Show all comments
  • ফোরকান ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৭:১৭ এএম says : 1
    এরা কখনও প্রাণভিক্ষা চাইবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • মুন্না ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৭:১৯ এএম says : 3
    বাকী সকলের বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হওয়া দরকার
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মীর কাসেমের বিচারপ্রক্রিয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ