পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ফারাক্কা বাঁধে বাংলাদেশের মানুষের মরণদশা। শুধু বাংলাদেশেই নয়, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে নির্মিত পরিবেশ বিপর্যয়কারী ফারাক্কা বাঁধ তুলে দেয়ার দাবি উঠেছে ভারতেই। ভারতের জনপ্রতিনিধিরাই বাঁধ তুলে দেয়ার দাবি করছেন।
ভারতের অঙ্গরাজ্য ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমারা ফারাক্কা বাঁধ তুলে দেয়ার দাবি তুলেছেন। ফারাক্কার নেতিবাচক দিক তুলে ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাঁধটি তুলে দেয়ার দাবি জানান নিতীশ কুমার। সারাবিশ্বের প্রভাবশালী মিডিয়াগুলোতে ফারাক্কার খবর প্রচার হচ্ছে।
আবার ভারত হঠাৎ করে ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় বাংলাদেশের রাজশাহী-কুষ্টিয়ার বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভারতের ‘ফারাক্কা নীতি’ নিয়ে যখন সর্বত্রই ক্ষোভ তখন বাংলাদেশের পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ দাবি করেছেন, রাজশাহী-কুষ্টিয়ায় হঠাৎ বন্যার জন্য দায়ী ফারাক্কা বাঁধ নয়। সব গেট খুলে দেয়ার কারণে বাংলাদেশে বন্যা হয়নি। বর্তমানের বন্যা এমনিতেই হয়েছে এবং বাংলাদেশ পানির ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছে। ফারাক্কা ইস্যুতে পানিসম্পদমন্ত্রীর সুরের সঙ্গে সুর মিলিয়েছে ভারত সরকার। তারাও দাবি করছে, ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ার জন্য বাংলাদেশে বন্যা হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বর্ষা মৌসুমে গঙ্গা নদীর পানিপ্রবাহ ‘স্বাভাবিক রাখতে’ ফারাক্কা বাঁধ খোলাই থাকে। এর কোনো বিকল্প নেই। গত শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, বাংলাদেশের রাজশাহী-কুষ্টিয়া অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যার জন্য ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়াকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সেগুলো ‘ভুল ও বিভ্রান্তিকর’। উল্লেখ বাংলাদেশে ব্যাপক বিরোধিতার মধ্যে পদ্মার পানি সরিয়ে নিতে চার দশক আগে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলায় অভিন্ন নদী গঙ্গায় ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে ভারত সরকার। ওই ব্যারাজের মাধ্যমে ভারতের পানি প্রত্যাহারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়। এরপর বাংলাদেশ তার প্রাপ্য পানির দাবি জানালে ঢাকা ও নয়া দিল্লীর মধ্যে চুক্তি হয়। গঙ্গার মূলপ্রবাহ পদ্মা চাঁপাইনবাবগঞ্জের কাছ দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে যমুনা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
শুষ্ক মৌসুমে ভারত তার প্রয়োজন মেটাতে পানি আটকে রাখলেও বর্ষা মৌসুমে নিজেদের এলাকায় বন্যা এড়াতে পানি ছেড়ে দেয়, যা বাংলাদেশকে প্লাবিত করে। গত সপ্তাহে পদ্মায় পানি বেড়ে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হলে ফারাক্কা ব্যারাজের সব ফটক খুলে দেওয়াকে দায়ী করেন রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মীর মোশাররফ হোসেন। অথচ ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ দিল্লীকে খুশি করতে বিবিসির অনুষ্ঠানে স্পষ্ট করে বলেন, ফারাক্কার সবগুলো গেট হঠাৎ করে খুলে দেয়ার কারণে বাংলাদেশ বন্যা হয়নি। আবার এই ইস্যুতে বাংলাদেশের দুইজন মন্ত্রী দুই রকমের বক্তব্য দিয়েছেন। জাসদ নেতা তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বন্যা পরিস্থিতির জন্য ফারাক্কার সব গেট খুলে দেওয়াকে দায়ী করলেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, ফারাক্কা পুরো খুলে দিলেও বাংলাদেশে কোনো প্রভাব পড়বে না। প্রশ্ন হলো কোন মন্ত্রীর কথা সঠিক?
এদিকে বিবিসির খবরে বলা হয়Ñভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, তাদের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়েছে, গঙ্গা নদীর পানিপ্রবাহ ঠিক রাখার জন্যই ফারাক্কা বাঁধের গেটগুলো পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমের খবর উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ভারত হঠাৎ করে ফারাক্কার গেট খুলে দেয় না। বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কা ব্যারাজ দিয়ে পানিপ্রবাহের জন্য সব গেট খুলে দেওয়া হয়, এটা নতুন কিছু নয়। এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নদী কমিশনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই হয় বলে দাবি করেন মুখপাত্র। দিল্লীর দাবি, ‘নিয়মিত প্রক্রিয়া হওয়ায় ফারাক্কা গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে বিশেষ কোনো সতর্কতা বা অ্যালার্ট জারি করা হয় না। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের মিডিয়াতেই বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পানি বৃদ্ধি ছিল স্বাভাবিক। আগস্ট মাসের জন্য এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।