Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইলেক্ট্রনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় নতুন আইন আসছে

কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন মন্ত্রিসভায় : সরকারি ঋণ আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে ব্যাংকিং পরিচালনা, লেনদেন ও ব্যবস্থাপনায় নতুন একটি আইনের খসড়া এবং সরকারি ঋণ আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২১ এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। এর আগে মন্ত্রিসভা থেকে প্রাথমিকভাবে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তারপর ভেটিং শেষে আবার নিয়ে আসা হয়েছে এবং আজকে যার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।তিনি জানান, অন্যান্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনগুলোকে অনুসরণ করে নতুন এ আইন করা হচ্ছে। নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হলে দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হবে ৪৬টি, আর বর্তমানে ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চালু আছে। কুড়িগ্রামে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য গত বছরের ২১ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত আইনের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। খসড়া আইনটি আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হলো। এ আইনের নীতিগত অনুমোদন দেওয়ার দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, কুড়িগ্রাম এক সময় মঙ্গাপীড়িত ছিল, সেখানে যদি এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় হয় তবে গবেষণা হবে, ফার্মিং হবে। এর মধ্যে দিয়ে তাদের অবস্থার আরও উত্তরণ হবে।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও ফার্মিংয়ের মাধ্যমে যে টেকনোলজি ডেভেলপ হবে তা কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাটে বিস্তৃত হলে ওই লোকজন ফার্মিংয়ের মাধ্যমে ভুট্টা, শাক-সব্জি, মিষ্টি আলু ও মিষ্টি কুমড়া, মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে তাদের অবস্থার আরও উন্নত করতে পারবে। কুড়িগ্রামে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য নিয়ে সেদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, ওই এলাকার লোকজনের কৃষি ও সার্বিক অর্থনীতির উন্নয়ন করার লক্ষ্য নিয়ে সেখানে এ বিশ্ববিদ্যালয় করা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনায় পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পাটনারশিপ) এবং সরকার টু সরকারসহ নতুন আর্থিক ব্যবস্থাপনাগুলো সমন্বিত করে ‘সরকারি ঋণ আইন, ২০২১ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। আগে যে ঋণ ব্যবস্থাপনা ছিল, বাজেট কিংবা ফাইন্যান্সিং সিস্টেম ছিল সেটা অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। যেমন এখন পিপিপি আসছে, ইনভেস্টর ক্রেডিট, ডেফিসিট ফাইন্যান্সিং যেটা এগুলোর জন্য আরেকটু প্রিসাইজ করা দরকার। এখন পিপিপি, ইনভেস্টর ফাইন্যান্সিং, জিটুজি- সেগুলো আগের আইনে ছিল না। এগুলো নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সবার দায়-দায়িত্ব এবং এগুলোর ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, রি- পেমেন্ট সিস্টেম সব কিছু ক্লিয়ার হয়ে যাবে। এতদিন এগুলো বিধিমালা দিয়ে হ্যান্ডেল করা হতো।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৪৪ সালের পাবলিক ডেবট অ্যাক্ট ছিল, সেটা দিয়ে আমরা চলছিলাম। আইনটি সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন ও হালনাগাদ করে সরকারি ঋণ আইনের খসড়া হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। বিলটিতে আইনের প্রাধান্য, পরিদর্শন, সরকারের ঋণ সম্পর্কে জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার সংরক্ষণ ও দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সরকারের ঋণ কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত কোনো ব্যক্তি আইন ভাঙলে শাস্তি পেতে হবে। এ নিয়ে অভিযোগ আসতে হবে সঞ্চয় পরিদফতর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলমেন্ট সিস্টেমস আইন, ২০২১’ এর খসড়ায় এই অনুমোদন দেওয়া হয় ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে ব্যাংকিং পরিচালনা, লেনদেন ও ব্যবস্থাপনায় নতুন একটি আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে। বিশ্বায়নের যুগে দ্রæতগতিতে ব্যাংকিং ও আর্থিক ব্যবস্থার উন্নতির ফলে আইসিটি ভিত্তিক ব্যাংকিং এখন অপরিহার্য হয়ে গেছে। ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও লেনদেন হচ্ছে। এজন্য পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলমেন্ট আইন প্রণয়ন করা খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ব্যাংক ও কোম্পানিগুলোর পরিশোধ ব্যবস্থা’ পরিচালনা বা ইলেক্ট্রনিক মুদ্রায় পরিশোধ সেবা দেওয়ার আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদন নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক দেশে কার্যরত সকল পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনাকারী, অংশগ্রহণকারী ও সেবাদানকারীর কার্যক্রম পরিচালনায় অনুমতি প্রদান ও তদারকি করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক নিজে বা প্রয়োজনে তার অনুমোদিত কোনো কর্তৃপক্ষ দিয়ে আন্তঃব্যাংক ইলেক্ট্রনিক লেনদেন ব্যবস্থাগুলো যেভাবেই অবিহিত থাকুক না কেন, পরিচালনা করতে পারবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এতদিন পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে আলাদা কোনো আইন ছিল না। ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে টাকা পয়সা বা ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আইন না থাকায় এবং পরিশোধ ব্যবস্থায় বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক লেনদেন চালু থাকায় সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থার রুলস পরিচালনার জন্য চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করতে হত। সেজন্য কক্ট্রাক্ট ল থেকে বের করে নিয়ে এসে পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলমেন্ট আইন করা হয়েছে। পেমেন্ট সিস্টেম এ কন্ট্রাক্ট অ্যাক্ট দিয়ে পরিচালনা কাভার করা যাচ্ছে না, সেজন্য এ আইন করা হয়েছে।
তিনি সচিব বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইলেক্ট্রনিক লেনদেন বিস্তারের ফলে গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে। ব্যাংকের পাশাপাশি অব্যাংক পরিশোধ সেবাকারীদের তত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আইনি কাঠামোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। সেজন্য এ আইন করা হয়েছে। শুধুমাত্র কক্ট্রাক্ট আইন দিয়ে টেকিনিক্যালি কাভার করা যাচ্ছিল না সব, এজন্য একটি স্পেশাল আইন করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট আইন,২০২১ এর খসড়া চুড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইলেক্ট্রনিক ব্যাংকিং
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ