পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টুজি, থ্রিজি-ফোরজির পর এখন ফাইভজি যুগে প্রবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। তথ্য-প্রযুক্তির মহাসড়ক গড়ে তোলা এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এগিয়ে যেতে চাইছে সরকার। অগ্রসরমান বিশ্ব প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে অবকাঠামো গঠন, জনসম্পদ তৈরি, ডিজিটাল প্রযুক্তির উদ্ভাবন, প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণের সাথে জনগণের সেতুবন্ধন সৃষ্টির লক্ষ্যে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ ও সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু যাদের জন্য এই আয়োজন সেই গ্রাহকরাই সব সময় বঞ্চিত হচ্ছেন কাক্সিক্ষত সেবা থেকে। টাকা দিয়ে সেবা কিনে পাচ্ছে না কাক্সিক্ষত অভিজ্ঞতা। কলড্রপ আর ধীরগতির ইন্টারনেট নিয়ে অতিষ্ট গ্রাহকরা। মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে নিম্নমানের সেবার কারণে প্রতিদিনই ভূক্তভোগীদের শত শত অভিযোগ জমা পড়ছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসিতে। হাজারো অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ফেইসবুক পেজে। সেবার মান নিয়ে গ্রাহকদের পক্ষ থেকে এতো অভিযোগ জমা পড়লেও বাড়েনি সেবার মান। বরং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বলছে, অপারেটররা গ্রাহক সংখ্যা বাড়ালেও সেবার মান বাড়াতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করছে না। স্বল্প ও অপ্রতুল তরঙ্গ দিয়ে বিপুল পরিমান গ্রাহককে সেবা দিতে গিয়ে এই বিপত্তি।
অথচ ফোরজির লাইসেন্স দেয়ার সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার অপারেটরদের মানসম্মত সেবা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানুষ তাদের কষ্টার্জিত অর্থের বিনিময়ে নিরবচ্ছিন্ন সেবা চায়। গুণগত মানহীন সেবা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এখন তিনি বলছেন, আমাদের কাছে প্রচুর তরঙ্গ আছে। তাদের যে পরিমাণ তরঙ্গ দরকার সে পরিমাণ তারা নেয়নি। যদি তারা প্রয়োজনীয় তরঙ্গ নিতো তাহলে সেবার মান স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেড়ে যেতো।
বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গতির করুণ অবস্থা ফুটে উঠেছে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট স্পিডটেস্টের গ্লোবাল ইনডেক্সের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত সূচকে। ওই সংখ্যার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মোবাইল ইন্টারনেটের গতির দিক দিয়ে ভারত কিংবা পাকিস্তানের থেকে পিছিয়ে পড়া দেশ বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় শুধু বাংলাদেশের চাইতে কম গতির ইন্টারনেট রয়েছে আফগানিস্তানে। এমনকি আফ্রিকার দরিদ্র দেশ বলে পরিচিত ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার চাইতেও খারাপ অবস্থা বাংলাদেশের।
প্রতিষ্ঠানটি মোট ১৪০টি দেশের মোবাইল ইন্টারনেটের গতি জরিপ করেছে, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৬তম। যা গত বছরের চাইতে এক ধাপ পিছিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে মালদ্বীপ। দেশটির অবস্থান ৪৫তম। এরপরেই ৮৮তম অবস্থানে রয়েছে মিয়ানমার। নেপালের অবস্থান ১১৪তম। এর চার ধাপ পিছিয়ে ১১৮তম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। ১২০তম অবস্থানে শ্রীলঙ্কা। ভারত ১৩১তম অবস্থানে। এবং সবচেয়ে নীচে ১৪০তম অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তান।
যদিও একের পর এক প্রজন্মের প্রযুক্তিতে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ কিন্তু টেলিযোগাযোগ সেবার মান নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে গ্রাহকদের। ফোরজি’র কথা বলে টুজি ইন্টারনেট সেবা, কথা বলতে গেলেই কলড্রপ, মিউট (সংযোগ সচল থাকে কথা শোনা যায় না) কলের বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন প্রায় সব মোবাইল ফোন গ্রাহকই। টাকা ব্যয় করে নিম্নমানের সেবা পাওয়ায় জাতীয় সংসদেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপি। বিটিআরসির জরিপেই ওঠে এসেছে, ফোরজি সেবায় মানসম্মত যে গতিসীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে তিন অপারেটর (গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক)। কোন অপারেটরেই গতিসীমা নেই বেঞ্চমার্কের ধারের কাছে।
এদিকে গ্রাহকরা যাতে ভালো সেবা পান এজন্য বিটিআরসি আজ তরঙ্গ নিলামের আয়োজন করেছে। নিলামে সবকটি অপারেটরই অংশগ্রহণ করবে। নিলামে বিক্রির জন্য ২২ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ জমা আছে বিটিআরসিতে। দুটি ব্যান্ডে প্রতিটি তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৩১ মিলিয়ন ও ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার এ কে এম শহীদুজ্জামান জানান, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ নিলামে দেশের চার মোবাইল অপারেটর অংশ নিচ্ছে। ১৮০০ মেগা হার্টজ ব্যান্ডে ৭ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ মোট পাঁচটি বøকে নিলাম করা হবে। এর মধ্যে দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গে দুটি, ২ দশমিক ২ মেগাহার্টজ তরঙ্গে দুটি এবং ২ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গে একটি- মোট পাঁচটি বøকে এ নিলাম হবে। নিলামের ভিত্তিমূল্য ২০১৮ সালের ভিত্তিমূল্য অনুযায়ী ৩১ মিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে বলে জানান শহীদুজ্জামান। আর ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ২০ মেগাহার্টজ ব্যবহারযোগ্য তরঙ্গ ৫ মেগাহার্টজ করে মোট চারটি বøকে নিলাম করা হবে। এর ভিত্তিমূল্য হবে ২০১৮ সালের নিলামের ভিত্তিমূল্য অনুযায়ী ২৭ মিলিয়ন ডলার। নিলামের শর্ত অনুযায়ী, কোনো অপারেটর যদি ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের নিলামে অংশ না নেয়, তাহলে তাকে ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের নিলামে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।
বর্তমানে টুজির ৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড এবং থ্রিজির ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের মিলিয়ে গ্রামীণফোনের হাতে মোট তরঙ্গ ৩৭ মেগাহার্টজ, রবির ৩৬ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ, বাংলালিংকের ৩০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ ও টেলিটকের ২০ দশমিক ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ আছে।
উন্নত দেশগুলোতে ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গ দিয়ে ১ লাখ গ্রাহককে সেবা প্রদান করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে ১ মেগাহার্টজ দিয়ে গ্রামীণফোন ২১ লাখ, রবি ১৪ লাখ, বাংলালিংক ১২ লাখ ও টেলিটক ২ লাখ গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে।
রবি আজিয়াটার হেড অব কর্পোরেট এন্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স শাহেদ আলম বলেন, তরঙ্গ থেকে কত রাজস্ব আয় হবে সেটির উপর ভিত্তি করেই তরঙ্গ মূল্য নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে আমরা দেখেছি তরঙ্গ মূল্য সব সময় নির্ধারণ করা হয় সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্য রেখে। যার কারণে মোবাইল অপারেটররা কখনোই তাদের প্রয়োজনীয় সংখ্যক তরঙ্গ কিনতে পারেন না। তিনি বলেন, তরঙ্গ যদি যৌক্তিক মূল্যে বরাদ্দ দেয়া হয় সেক্ষেত্রে সেবার মান ও ইন্টারনেটের গতি বাড়বে।
বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট এন্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স তাইমুর রহমান বলেন, নিলামে যদি বেশি তরঙ্গ কেনা সম্ভব হয় তাহলে উন্নত টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে। তরঙ্গ বরাদ্দ পেলে গ্রাহকরাই উপকৃত হবে বলে তিনি মনে করেন। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।