পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নাগরিক সমাজ আয়োজিত সমাবেশে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনানো হয়। ড. কামাল হোসেন ‘স্বাধীন কমিশনের’ মাধ্যমে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর তদন্ত দাবি করেন। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ডিজিটাল আইন প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। তাদের উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখার কথা থাকলেও ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আসতে না পেরে লিখিত বক্তব্য পাঠান।
ড. কামাল হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, লেখক মুশতাক আহমেদের কাশিমপুর কারা হেফাজতে মৃত্যুর সংবাদ পড়েছি। তার জামিন আবেদন ৬ বার নামঞ্জুর করা হয়। শেষবার যখন তাকে আদালতে আনা হয় তখন তার শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট অবনতি ঘটেছিল। কিন্তু তার পরও তাকে জামিন দেয়া হয়নি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে মুক্ত চিন্তা, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা চরমভাবে খর্ব করা হয়েছে। মানবাধিকার কর্মী ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এই আইনের নিবর্তনমূলক ধারাগুলো সংশোধনের জন্য বার বার অনুরোধ করা সত্তে¡ও সরকার এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বরং এর অপব্যবহার বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। এইভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সরকারের অত্যাচার ও নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। এই কালো আইনটির অপব্যবহারের চরম বহিপ্রকাশ হচ্ছে লেখক মুশতাক আহমেদের কারা হেফাজতে মৃত্যু। একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে তার মৃত্যুর সার্বিক অবস্থার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত অপরিহার্য।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যখন চালু করা হয় তখন সরকার ও তার সমর্থক ছাড়া সকল মহল থেকেই শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল যে এর অপ্রয়োগ ঘটবে। মতপ্রকাশের অধিকার আরো ক্ষুন্ন হবে। হয়তো কণ্ঠরোধের ঘটনাই ঘটবে। প্রতিবাদ করা হলেও কাজ হয়নি। দেখা গেল আশঙ্কাটা মিথ্য ছিল না। ইচ্ছা মতো মামলা দেয়া হচ্ছে। মানুষ গ্রেফতার হচ্ছে, নাজেহাল হচ্ছে। সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল তো গুম হলেন। সীমান্ত এলাকায় যখন দেখা গেল তাকে, তখন অসুস্থ মানুষটিকে ধরে এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গেফতার দেখনো হলো। দেশ বিদেশের বিভিন্ন মহল থেকে যখন প্রতিবাদ হলো, লেখালেখি হলো তখন কোনো মতে জামিন পেলেন। মুশতাক আহমেদ ৬ বার জামিনের আবেদন করেছেন, গ্রাহ্য হয়নি, সপ্তমবার আর করার প্রয়োজন হলো না, তিনি চিরমুক্ত হয়ে চলে গেলেন। তিনি বলেন, মুশতাক হচ্ছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগের প্রথম শহীদ? আশা করব এটাই শেষ ঘটনা। মুশতাক আহমেদ একজন লেখক, তিনি একজন উদ্যোক্তাও। ফৌজদারী বা দেওয়ানী কোনো অপরাধে অপরাধী নন। দেশের সম্পদ পাচার করেননি, কাউকে ঘুম করেননি। বলা হচ্ছে তিনি রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমর্যাদার জন্য ক্ষতিকর লেখা লিখেছিলেন। রাষ্ট্র কি এতই দুর্বল যে একজন লেখকের সামান্য কিছু লেখার জন্য বিব্রত বোধ করবে? সরকারের দায়িত্ব নাগরিকদের চিন্তার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নিরাপত্তা দেয়া। রাষ্ট্রের দায়িত্ব তো সেটাই। পাকিস্তান আমলেও শুনিনি যে লেখার জন্য কোনো লেখককে আটক করা হয়েছে এবং হেফাজতে তার মৃত্যু ঘটেছে। লেখার জন্য ধরে এনে জেলে এবং বন্দি অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটতে দেয়া দু’টোই ভয়ংকর অন্যায়। এতে বহির্বিশ্বে রাষ্ট্রের ও সরকারের ভাবমর্যাদা যে উজ্জ্বল হবে এমন আশা নিতান্ত দূরাশা। মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় দ্রæত, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই, সে সঙ্গে ভীতিপ্রদ আইনটির প্রত্যাহারও চাইব অবিলম্বে । ডিজিটাল অপরাধের জন্য প্রচলিত ফৌজদারী আইন যথেষ্ট। মতপ্রকাশের ভীতি চিন্তার স্বাধীনতার কষ্ঠরোধ করে সেটা গণতন্ত্রের ওপর তা অবশ্যই মানুষের মনুষত্বের ওপরও আঘাত। আমরা আমাদের মনুষত্বের রক্ষা করতে চাই। যে জন্য দীর্ঘকাল ধরে আমরা লড়ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।