Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি টাকা ঋণ

প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ৫

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

ঢাকা ব্যাংকসহ ১১ আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেয়ার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রতারক চক্র। এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে ফ্ল্যাট মালিক বা ক্রেতা সেজে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে প্রতারণা করা হয়। আর এনআইডি পরিবর্তন করে তাদের এই জালিয়াতির কাজে সহায়তা করতো নির্বাচন কমিশনেরই নিম্ন শ্রেণির কয়েকজন কর্মকর্তা। জালিয়াতিতে জড়িত ৪৪ জনকে ইতোমধ্যে বরখাস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। গ্রেফতার করা হয়েছে চক্রটির সাথে জড়িত ৫ জনকে। গত মঙ্গলবার রাজধানীর খিলগাঁও ও রামপুরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়েজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আল আমিন ওরফে জমিল শরীফ, খ ম হাসান ইমাম বিদ্যুত, আব্দুল্লাহ আল শহীদ, রেজাউল ইসলাম ও শাহ জাহান।
তিনি বলেন, ভুয়া এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট ব্যবহার করে ঢাকা ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর খিলগাঁও থানায় এবং গত ১৩ ডিসেম্বর পল্টন থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়। ওই মামলা দুটির তদন্তে নেমে ঘটনার মূলহোতা বিপ্লবকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করে ডিবি।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে বিপ্লব জানান, ভুয়া এনআইডি তৈরির সাথে জড়িত নির্বাচন কমিশন অফিসের নিচের শ্রেণির কিছু অসাধু কর্মচারী। ১ মার্চ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দেন তিনি। বিপ্লবের দেয়া তথ্যে ডিবি পুলিশ আল আমিন নামে একজনকে গ্রেফতার করে। আল আমিনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার সাথে জড়িত অনেকের সন্ধান পাওয়া যায়। তার দেয়া তথ্য মতে, বিদ্যুতকে গ্রেফতার করা হয়। বিদ্যুত এবং আল আমিন তাদের অন্যান্য সহযোগীদের প্রয়োজন অনুয়ায়ী কখনও ক্রেতা, আবার কখনও বিক্রেতা, কখনও জমির মালিক, কখনও ফ্ল্যাটের মালিক সাজাতেন। আব্দুল্লাহ আল শহীদ ভুয়া এনআইডি তৈরির মধ্যস্ততাকারী হিসেবে কাজ করতেন। আর রেজাউল ইসলাম ও শাহ জাহান ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট তৈরি করে দিতেন।
তিনি আরো বলেন, প্রতারকরা ১/২ মাসের জন্য একটি অফিস ভাড়া করেন। ব্যাংক কর্মকর্তাদের সেই অফিস পরিদর্শনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ব্যাংক কর্মকর্তারা ভিজিটে গিয়ে অফিস গোছানো, সবকিছু সঠিক আছে দেখতে পান। ফ্ল্যাট, রেজিস্ট্রেশন করার দিন ব্যাংকের লোক উপস্থিত থাকেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এনআইডি সার্ভারে এনআইডি কার্ড এবং তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট সঠিক পাওয়ায় ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন হওয়ার ১/২ দিন পর পে-অর্ডারের মাধ্যমে প্রতারকরদের ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য লোনের টাকা পরিশোধ করে দেন। প্রতারকরা যখন লোনের কিস্তি পরিশোধ করে না তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের দেয়া এনআইডি কার্ডের তথ্য সার্ভারে অনুসন্ধান করলে ভুয়া এনআইডি কার্ডের কোনো তথ্য দেখতে পান না। তখন ব্যাংক বুঝতে পারে যে তারা প্রতারিত হয়েছেন।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, কয়েকটি ব্যাংকসহ মোট ১১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর মধ্যে শুধু ঢাকা ব্যাংকের প্রায় দেড় কোটি টাকা চক্রটি আত্মসাৎ করেছে। এসব প্রতারণায় ব্যাংকের কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ৪৪ কর্মচারিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন থেকে ডিবি পুলিশকে জানানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আর্থিক-প্রতিষ্ঠান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ