Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রাণভিক্ষা চাইবেন না মীর কাসেম : কারা কর্তৃপক্ষ

প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না। গতকাল বিকালে তিনি কারা কর্তৃপক্ষকে এ কথা জানিয়েছেন। জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, তবে শুক্রবার (গতকাল) ফাঁসি কার্যকরের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে সরকারি আদেশ বাস্তবায়নে কারা কর্তৃপক্ষ সব সময়ই প্রস্তুত থাকে। কখন ফাঁসি কার্যকর করা যেতে পারে তা জানতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ীই সময়-ক্ষণ ঠিক করা হবে।
কারা সূত্র জানায়, মানবতাবিরোধী অন্য আসামিদের মৃত্যুদ- যেভাবে কার্যকর করা হয়েছে ঠিক একই প্রক্রিয়ায় মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হবে। ফাঁসি কার্যকরের আগ মুহূর্তে মীর কাসেম আলীর স্বজনরা তার সঙ্গে আরও একবার দেখা করার সুযোগ পাবেন। এজন্যে কারা কর্তৃপক্ষ তাদের ডেকে পাঠাবে। তবে শুক্রবার তাদের ডাকার কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই।
জেলার নাশির আহমদ জানান, মীর কাসেম আলীকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর ৪০ নম্বর কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। তিনি সুস্থ আছেন। কারাগারের চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তাকে স্বাভাবিক খাবার দেয়া হয়েছে।
এদিকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ- প্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাচ্ছেন না। গতকাল শুক্রবার কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন।
এর আগে বৃহ¯পতিবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয়বারের মতো তার কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তিনি সময় নিয়ে শুক্রবার তার সিদ্ধান্ত জানান।
ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসির দ- কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি স¤পন্ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করে প্রাথমিক মহড়া দেয়া হয়েছে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে জল্লাদ দলকেও।
এ দিকে গতকাল সকাল থেকে গণমাধ্যমের কর্মীরা কাশিমপুর কারা ফটকের সামনে অবস্থান নেন। কারা কর্তৃপক্ষ কারা অভ্যন্তরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছেন। এ ছাড়া কারাগারের বাইরে পুলিশ ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিও লক্ষণীয়। পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা কারাগার এলাকায় অবস্থান করছেন। র‌্যাব ও আর্মড পুলিশের একাধিক টিম কারাগারের সামনে টহল দিয়েছে।
কারাসূত্র জানায়, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ আছে একটি। মঞ্চটি কারাগারের দক্ষিণ-পূর্ব কোণায় অবস্থিত। মঞ্চটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। মোম মাখানো দড়িতে তার যে ওজন ও উচ্চতা আছে তাসহ বালুর বস্তা দিয়ে প্রাথমিক মহড়া স¤পন্ন হয়েছে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে জল্লাদ শাহজাহান, রাজু, পল্টুসহ কয়েকজনকে।
এই জল্লাদ দল ইতিপূর্বে যুদ্ধাপরাধের মামলায় দ-িত আসামি মতিউর রহমান নিজামী, কাদের মোল্লা, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করেছিল। এখন সরকারের সিদ্ধান্ত পেলেই দ- বাস্তবায়ন করা হবে।
এর আগে বুধবার বিকালে মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন কারাগারে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করার পর কারা ফটকে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন- তার স্বামী মীর কাসেম আলী প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার সিদ্ধান্তের জন্য তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেম (আরমান)-এর জন্য অপেক্ষা করছেন। তার ছেলে ২৩ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার ছেলে নিখোঁজ বলে পরিবার দাবি করেছে। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
গত মঙ্গলবার রাত পৌনে একটার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মীর কাসেম আলীর রিভিউ খারিজ সংক্রান্ত রায়ের কপি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ পৌঁছানো হয়। রাত অনেক বেশি হওয়ায় তখন মীর কাসেম আলীকে তা পড়ে শোনানো হয়নি। গত বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে রায় পড়ে শোনানো হয়।
৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেম আলী ২০১২ সালে গ্রেফতারের পর থেকে এ কারাগারে রয়েছেন। ২০১৪ সালের আগে তিনি এ কারাগারে হাজতবাসকালে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির মর্যাদায় ছিলেন। পরে ফাঁসির দ-প্রাপ্তির পর তাকে ফাঁসির কনডেম সেলে পাঠানো হয়।



 

Show all comments
  • আসমা ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১:১৩ পিএম says : 1
    আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রাণভিক্ষা চাইবেন না মীর কাসেম : কারা কর্তৃপক্ষ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ