Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ফেরত আসার অপেক্ষায় রিজার্ভের দেড় কোটি ডলার

প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সুইফট সিস্টেমের কোড জালিয়াতির মাধ্যমে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ ডলার ফিলিপাইনে পাচার করে একদল হ্যাকার। পরে একজন ক্যাসিনো ব্যবসায়ীর জমা দেওয়া দেড় লাখ ডলার নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করেছে ফিলিপিন্সের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস। তারপর এই অর্থ খুব শিগগিরই ফেরতের আশা দিয়েছেন ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টের আশার পরিপ্রেক্ষিতে খুব শিগগিরই অর্থ ফেরতের আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্গকর সাহা।
তিনি আরও বলেন, আমরা গত মাসে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিকে লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম ফিলিপাইনের তদন্ত শেষ হলেই আমরা অর্থ ফেরতের নির্দেশ পাব। এক মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই তদন্ত শেষ করেছে কর্মকর্তা, এখন শুধু নির্দেশের অপেক্ষা।
চার মাসের শুনানি শেষে সহকারী স্টেট প্রসিকিউটর গিলমারি ফে প্যাকামারা গত বৃহস্পতিবার তদন্ত কাজের সমাপ্তি টানেন বলে ডেইলি এনকোয়ারারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, উদ্ধার হওয়া দেড় কোটি ডলারের ক্ষেত্রে ফিলিপিন্সের ‘মুদ্রাপাচার’ আইন ভঙ্গ হয়েছিল কি না তা জানতে দেশটির রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগিতো, চার ক্যাসিনো ব্যবসায়ী ও মুদ্রা বিনিময় কোম্পানি ফিলিপিন্স রেমিট্যান্স লিমিটেডের (ফিলরেম) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ তদন্ত চালানো হয়।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারির শুরুতে সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় এক বিলিয়ন ডলার সরানোর চেষ্টা করে একটি সংঘবদ্ধ হ্যাকার দল। এর মধ্যে চারটি মেসেজের মাধ্যমে ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকে সরিয়ে নেওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের একটি বড় অংশ জুয়ার টেবিলে চলে যায়। রিজল ব্যাংকের (আরসিবিসি) যে শাখার মাধ্যমে ওই টাকা বেহাত হয়েছিল, দেগিতো সেই জুপিটার স্ট্রিট শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন। দেগিতোকে পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বরখাস্ত করে। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়; আরসিবিসিকে এক বিলিয়ন পেসো (প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ ডলার) জরিমানা করে ফিলিপিন্স সরকার।
রিজার্ভ চুরির বিষয়ে ফিলিপিন্সের সিনেট কমিটির তদন্ত চলাকালে কিম অং নামের এক ক্যাসিনো ব্যবসায়ী দেড় কোটি ডলার ফিলিপিন্স সরকারের হাতে ফেরত দেন। ওই টাকা দেশটির এন্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলে জমা হওয়ার পর বাংলাদেশকে তা ফেরত দিতে আদালতে প্রক্রিয়া শুরু করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি অর্থ স্থানান্তরে ‘মুদ্রাপাচার’ আইন লঙ্ঘন হয়েছিল কি না তা জানতে তদন্ত শুরু করে ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস।
এনকোয়ারারের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে দেগিতো, কিম অংসহ সবাই মুদ্রাপাচার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের ভাষ্য, বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাকিংয়ের ঘটনা ফিলিপিন্সের মাটিতে না হওয়ায় তাতে তাদের মুদ্রাপাচার আইন ভঙ্গ হয়নি। প্যাকামারার বরাত দিয়ে পত্রিকাটি লিখেছে, আগামী এক মাসের মধ্যে ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া অর্থের আরও ২৭ লাখ ডলার রয়েছে ফিলিপিন্সের অ্যামিউজমেন্ট অ্যান্ড গেইমিং করপোরেশনের হাতে। বাকি ৬ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বেশি অর্থের কোনো হদিস ফিলিপিন্স কর্তৃপক্ষ পায়নি।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিষয়ক সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিপিন্সের আদালত আদেশ দিলে ‘শিগগিরই’ রিজার্ভের দেড় কোটি ডলার ফেরত আসতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফেরত আসার অপেক্ষায় রিজার্ভের দেড় কোটি ডলার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ