পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার একেক সময়ে একেকটা অস্ত্র বের করে, ইস্যু বের করে, সেই ইস্যু জনগণের দৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করে দেয়। এখন নিজেদের ফাঁদে নিজেরা পড়েছে। ক্ষমতাসীনরা বাংলাদেশকে অকার্যকর ও ‘জঙ্গি’ রাষ্ট্রে বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে ‘আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ যে গভীর একটা ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছে। বাংলাদেশকে একটা ফেল্ড স্টেটে পরিণত করবে তারা। এদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, এদেশকে জঙ্গিরাষ্ট্র পরিণত করতে চায়, এদেশকে আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়ার মতো করতে চায় তারা। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না।
আমাদের দেশটাকে সত্যিকার অর্থে একটা উদারপন্থি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত করাতে চাই। আমরা সেটার জন্য কাজ করছি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার একেক সময়ে একেকটা অস্ত্র বের করে, ইস্যু বের করে, সেই ইস্যু জনগণের দৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করে দেয়। এখন নিজেদের ফাঁদে নিজেরা পড়েছে। এই জঙ্গিবাদের কথা তারা নিজেরা সবচেয়ে বেশি বলেছেÑবাংলাদেশে বিএনপি জঙ্গি, অমুক জঙ্গি।
তিনি বলেন, আজকে জঙ্গিবাদ এসে গেছে। এখন তুমি যাবে কোথায়? যতই মিথ্যাচার কর এ কথা আজকে সবাই বলছে, এই জঙ্গিবাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রয়েছে। আমরা জানি না, সম্পর্ক আছে কি নেই, কারা করছে? সরকারের তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবেÑকে জঙ্গি কে জঙ্গি নয়। মিথ্যাচার করে যে জনগণকে যে বিভ্রান্ত করছে, সেটা আজ স্পষ্ট হয়ে গেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বলতে চাই, বিএনপি হচ্ছে উদারপন্থী গণতান্ত্রিক দল। বিএনপি যদি এখানে না থাকে, এখানে গণতন্ত্র থাকবে না। এটাই হচ্ছে মূল কথা। বিএনপি গণতন্ত্রকে প্রতিনিধিত্ব করে, বিএনপি গণতন্ত্রকে লালন করে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, জঙ্গিকে প্রশ্রয় তারা (সরকার) দিচ্ছেন। যাদেরকে গ্রেফতার করছেন সন্দেহভাজন হিসেবে, তাদের একটাকেও তো বিচারের আওতায় আনছেন না। তাদের সঙ্গে কী কথা হলো, কী দিল, তাও প্রকাশ করছেন না। তাদেরকে আপনাদের ভাষায় গান ব্যাটলের নামে হত্যা করছেন। তাহলে প্রশ্রয়টা দিচ্ছে কাকে? আসল যারা এই কাজগুলো ঘটাচ্ছে, তারা তো আড়ালেই থেকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আপনারা নতুন নতুন ইতিহাস তৈরি করছেন, আদালতের রায় দিয়ে ইতিহাস তৈরি করছেন আপনারা। আদালতের রায় দিয়ে নির্ধারণ করছেনÑকোনটা বলা যাবে, কোনটা বলা যাবে না, কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক। আমরা বলতে চাই, ইতিহাস কখনো আদালতের রায় দিয়ে নির্ধারিত হয় না। ইতিহাস তার ধারায় সত্য উদ্ভাসিত হয়।
এ ব্যাপারে দলের নেতা-কর্মীদের ‘সতর্ক ও সজাগ’ থাকার আহ্বানও জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাইকে বলব, সংগঠনকে পাড়ায়-মহল্লায় নিয়ে যান। যাতে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করুন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে পারি, কীভাবে গণতান্ত্রিকভাবে আমরা সামনের দিকে যেতে পারি, সেই পথ আমরা তৈরি করতে পারি। ইনশাল্লাহ সুদিন আমাদের আসবেই, এর কোনো বিকল্প নেই।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে বহু মিথ্যা মামলা। বিএনপির এমন কোনো নেতা-কর্মী খুঁজে পাবেন না, যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই। দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে এত মামলা কেন? হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এত মামলা কেন? একটিই কারণ আওয়ামী লীগ জানে যে জনগণের মধ্যে তাদের কোনো স্থান নেই। আমাদের নেতা (তারেক রহমান) ৭ বছরে সাজা দিয়েছে। নেত্রীর মামলাগুলো দ্রুত করার চেষ্টা হচ্ছে সাজা দেয়ার জন্য। আমাদের মামলাগুলো দ্রুত নিয়ে আসার জন্য ট্রাইব্যুনাল করা হয়েছে, যাতে সাজা দিতে পারে। আমরা কী এসব মেনে নেবো? মেনে নেবো না। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো, প্রতিবাদ করবো, জনগনকে সম্পৃক্ত করবো।
১০ ট্রাক মামলায় বিএনপির কয়েকজন নেতার ‘ফাসি’র রায় ঘোষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের আবদুস সালাম পিন্টুকে জড়িত করা হয়েছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামী করা হয়েছে। একজন সজ্জন নিবেদিত প্রাণ মানুষের জন্য। কিছুই নেই ভদ্রলোকের। তার স্ত্রী স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। দুই মেয়ে ভালো ছাত্রী বলে ডাক্তারি পড়ছে, আর কিছুই নেই তার। আজ ৯ বছর কারাগারে বন্দি হয়ে আছেন। প্রহর গুনছেন কখন তার রায় হবে, তার মৃত্যুদ- হবে। এই একটা কঠিন সময়।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন, এখন আমাদের দলের উপদেষ্টা হয়েছেনÑহাবিবুর রহমান হাবিব। তিনি জানেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ, এটা অস্বীকার করা যাবে না। সেই দলটি আজকে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে, আগে ১৯৭৫ সালেও করেছিল বাকশাল করে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ চরিত্র আছে, তারা ক্ষমতায় গেলে ফ্যাসিবাদী হয়ে যায়, ক্ষমতায় গেলে তারা ভাবে ভোগ করবার অধিকার তার, জনগণ তাদের প্রজা। আরেকটি কাজ করে, পুলিশ, র্যাব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৈরি করে জনগণকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করে। আগেও করেছিলো রক্ষীবাহিনী দিয়ে। কারণ আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে।
তারেক রহমানকে ভবিষ্যৎ নেতা অভিহিত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারেক রহমান কেন নির্বাসনে? শুধু কী শহীদ জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে বলেই। না, তারেক রহমান একটি রাজনীতির প্রতিনিধি। সেই রাজনীতি হচ্ছে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের রাজনীতি, বাংলাদেশের স্বাতন্ত্রের রাজনীতি, খেটে খাওয়া মানুষের মাথা উঁচু করার রাজনীতি। এই রাজনীতির ধারক-বাহক এবং ভবিষ্যতের কর্ণধার হচ্ছেন তারেক রহমান। সেজন্যই তাকে আজকে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী সরকার মিথ্যা মামলায় ষড়যন্ত্র করে তারেক রহমানকে সাজা দিয়েছে। যে মামলায় উনি খালাস পেয়েছিলেন, আবার সেই মামলায় ষড়যন্ত্র করে সাজা দেয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই, তারেক জিয়া যেন দেশে আসতে না পারে। আমি বলব, তারেক রহমানকে মুক্ত করে আনতে হলে আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করে আমাদের রাজপথে নামতে হবে।
বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ার, হাবিবুর রহমান হাবিব, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, কেন্দ্রীয় নেতা শরীফুল আলম, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আব্দুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, মীর হেলালসহ উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।