পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার অফিস : উপকূলের ‘সাদা সোনা’ লবণের দাম বেড়েছে, সুদিন ফিরেছে লবণ চাষীদের। স্বাধীনতার পরে এই প্রথম কক্সবাজারের লবণ চাষীরা লবণের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন বলে জানাগেছে। মাঠ পর্যায়ে এখন প্রতিমণ লবণ ৫/৬ শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এটি সঙ্কট নয়, চাহিদার কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি বলে জানান লবণ চাষীরা। চাষীদের মতে, এটিই লবণের ন্যায্যমূল্য। এই ন্যায্যমূল্য এবং লবণ আমদানী বন্ধ থাকুক এটিই লবণ চাষীদের দাবী।
খবর নিয়ে জানাগেছে, স্বাধীনতার পর এবারই রেকর্ড ছুঁয়েছে মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত কাঁচা লবণের দাম। সরকার বিদেশ থেকে লবণ আমদানি এতোদিন স্থগিত রাখায় চাষীরা মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবণের রেকর্ড দাম পাচ্ছেন। গত এক সপ্তাহ আগে থেকে চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় লবণের দাম ৫/৬ শ’ টাকা হয়েছে। সে হিসেবে প্রতি কেজি কাঁচা লবণের দাম ১৫ টাকা করে পাচ্ছেন ক্ষুদ্র চাষীরা।
এদিকে মাঠে লবণের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষীদের মাঝে যেমন আনন্দের ধুম পড়েছে, অন্যদিকে লবণ আমদানী কারক কয়েকটি সিন্ডিকেট এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যাপক হারে লবণ অমদানীর প্রমাদ গুনছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে সরকার আপদকালীন সমস্যা মোকাবেলার জন্য দেড় লাখ মেট্রিক টন লবণ আমদানীর অনুমতি দিলেও সে লবণ এখনো বাজারে আসেনি বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের বিসিক সূত্র।
মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবনের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে উপকূলের লবণ চাষীরা সবচেয়ে বেশি উৎফুল্ল। এর ইতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাব পড়েছে স্থানীয় অর্থনীতিতে। লবণ এক সময় লোকসান পণ্য ছিল। গত কয়েক বছর মাঠে লবণ বিপ্লবে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় লোকসান গুনছে চাষীরা। সরকার বিদেশ থেকে লবণ আমদানি বন্ধ রেখে লবণের উৎপাদন নিশ্চিত ও চাহিদা মেটানোর জন্য দেশীয় উৎপাদন ব্যবস্থাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়। এতে করে বলাযায় চাষীদের উৎপাদিত লবণের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হয়েছে এবার।
লবণ শিল্পপণ্য না কৃষিপণ্য এনিয়ে চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক। এর পরেও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিসিক লবণ খাতের তদারকী করে থাকেন। কক্সবাজার বিসিক কর্মকর্তা আবছার উদ্দিন জানান, দিন দিন চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মাঠে মওজুদ লবণের দাম বেড়েছে। এতে চাষীরা খুশী। তবে গত মৌসুমে এক লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন মত ঘাটতি নিরূপিত হওয়ায় সরকার বছর শেষ এবং লবণ মৌসুম শুরুর আগে ‘ট্রাঞ্জেশনাল পিরিয়ডে’ দেড় লাখ মেট্রিক টন লবণ আমদানীর অনুমোদন দেয়। এখনো ওই লবণ বাজারে অসেনি।
জানাগেছে, মাঠ পর্যায়ে প্রতিমণ লবণ ৫/৬ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষীরা জানিয়েছেন, ঈদুল আযাহার সময় লবণের চাহিদা বেড়ে যায়। চামড়া শিল্প প্রক্রিয়াজাতের জন্য লবণের চাহিদা থাকে প্রচুর। মিল মালিকরা আগে ভাগে মজুদ করছে লবণ। বর্ষার সময় লবণ উৎপাদন না হলেও মাঠে মজুদকৃত লবণ বিক্রির ধুম পড়েছে। লবণের ঘাটতি নিরসন করতে সরকার ইতিমধ্যে বিদেশ থেকে দেড় লাখ মেট্রিক টন লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চাহিদাপত্র চূড়ান্তে টিসিবিকে লবণ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে কিছুটা হতাশা ভাব পরিলক্ষিত হয়েছে কৃষক পর্যায়ে।
লবণ কক্সবাজারসহ উপকূলের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। ‘সাদা সোনা’ খ্যাত লবণ খাতের বিকাশ সাধন হওয়া মানে উপকূলের দরিদ্র মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন ঘটানো। উপকূলের কৃষকের অর্থনৈতিক স্বপ্ন লবণের উপর অনেকটা নির্ভরশীল। লবণের দাম বেড়ে যাওয়ায় উপকূলের অর্থনীতির জীবন যাত্রাও দিন দিন বিকশিত হচ্ছে। উপকূলের লবণ সংশ্লিষ্ট লাখ লাখ মানুষ লবণ আমদানি বন্ধ চান। পাশাপাশি তারা চান দেশীয় উৎপাদিত লবণের ন্যায্য মূল্য অব্যাহত থাকুক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।