পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর বনানী-গুলশান লেক, রমনা পার্ক লেক এবং ধানমন্ডী লেককে ঘিরে বড় ধরনের অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্যতার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে লেক পার্ক গড়ে তোলা হবে নয়নাভিরাম। লেকের স্বচ্ছ পানিতে দেশীয় মাছ ও প্রাণিজ উদ্ভিদের জন্য অনুক‚ল পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। যা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রস্তাবিত ডেটেইল এরিয়া প্লানে (ড্যাপ) এই পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানীর আশপাশের ৫৪৪ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার নৌপথের নাব্য ফিরিয়ে আনতে রাজউক অঞ্চলের সব খাল ও নদ-নদী দখলমুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
জানতে চাইলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সদস্য মেজর (ইঞ্জি) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব:) বলেন, রাজধানীর লেকগুলো ঘিরে বড় ধরনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে রমনা পার্ক লেকের কাজ করছে গর্ণপূত। বাকি লেকগুলোর উন্নয়ন কাজ শুরু করা হবে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান ইনকিলাবকে বলেন, ড্যাপে নগর পরিকল্পনার অনেক আধুনিক করেছে এটা ভালো উদ্যোগ। পরিকল্পনায় পথচারীবান্ধব অবকাঠামো তৈরি ও বাইসাইকেল লেনকে উৎসাহিত করা এবং অযান্ত্রিক পরিবহনকে সামগ্রিক পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় করার মতো বিষয় জোরালোভাবে এসেছে।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ মাস্টার প্ল্যানটি ‘ঢাকা’ মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান (ডিএমডিপি) ১৫২৮ বর্গ কিমি (৫৯০ বর্গমাইল) নিয়ে একটি নতুন পদ্ধতি এবং বিদ্যমান সামাজিক প্রেক্ষাপটের দৃষ্টিকোণ নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। কাঠামো পরিকল্পনা, নগর এলাকা পরিকল্পনা এবং বিশদঞ্চল পরিকল্পনা যা বিভিন্ন শহুরে কৌশল, নীতি ও উন্নয়ন প্রোগ্রামগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে নগর পরিকল্পনা শাখা হতে অনলাইন পদ্ধতিতে জিআইএস ভিত্তিক ড্যাপ (২০১০-২০১৫) এর ম্যাপ সর্বসাধারণের জন্য অবমুক্ত করা হয়। সংশোধিত ড্যাপ প্রণয়নের কাজ রয়েছে শেষ পর্যায়ে। অনলাইন-অফলাইনে খসড়া ড্যাপের ওপর সাড়ে আট হাজারের মতো মতামত পাওয়া গেছে। এসব মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে বেশকিছু তথ্য হালনাগাদও করা হয়েছে। এখন ড্যাপ রিভিউ কমিটি প্রস্তাবিত পরিকল্পনার বিভিন্ন অংশ নিয়ে সুধীজনদের সঙ্গে বৈঠক করছে। বৈঠকে পাওয়া বিভিন্ন সুপারিশের ভিত্তিতে আগামী জুন মাস নাগাদ প্রস্তাবিত ড্যাপের গেজেট জারি হতে পারে।
ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা শহরের আশপাশ দিয়ে চারটি নদী বয়ে চলেছে। শহরের ভেতর দিয়ে খালও প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু আমরা এসব নদী বা খালের সত্যিকার ব্যবহার করতে পারিনি। বিভিন্ন সময় এসব খাল-নদী ভরাট হয়ে গেছে। খসড়া ড্যাপে আমরা এসব নদী খাল ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেছি। এসব নদী ও খাল ব্যবহার করে বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারব। ধানমন্ডি লেক কেবল পানিতে বাস করা প্রাণির জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এখন এটি একটি পাবলিক স্পেসও। রাজধানীর লেকগুলো ঘিরে বড় ধরনে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্যতাও লেক পার্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছে সরকার। পৃথিবীর অনেক শহরেই কৃত্রিমভাবে নদী বা খাল তৈরি করা হয়েছে। সে বিবেচনায় আমরা ভাগ্যবান।
ড্যাপের পরিকল্পনায় অবকাঠামো জরিপের বলা হয়েছে, বিদ্যমান সড়কপথের ২ হাজার ১৯৮ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার আর পানি পথের ৫৪৪ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার। বিদ্যমান রাস্তার কার্যকারিতার ওপর ভিত্তি করে পরিকল্পনায় চার ধরনের রাস্তার শ্রেণিক্রমের প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় রাস্তা ছাড়া অন্য রাস্তাকে নগরজীবন রেখায় বিবেচনা করা হয়েছে। সঙ্গতিপূর্ণ নগরজীবন রেখা বাস্তবায়নের জন্য গণপরিবহন, পথচারী, অযান্ত্রিক বাহন ব্যবহারকারীদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। পরিকল্পনায় রাস্তার দুই পাশে ২০ ফুট পরপর একসারি করে ৫০ ভাগ ফলের গাছ, ২৫ ভাগ ওষুধি গাছ ও ২৫ ভাগ কাঠের গাছ লাগানোর কথা বলা হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে পানিকেন্দ্রিক পার্ক নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ঢাকার ওপর চাপ কমিয়ে সুষম উন্নয়নে এলাকাভিত্তিক জনঘনত্ব জোনিং করা হয়। ঢাকা শহরের বিদ্যমান জনসংখ্যার অনুপাতে স্কুল-কলেজ, খেলার মাঠ, পার্ক, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্কট রয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে রিভাইজড ডিটেইলড প্ল্যানের প্রস্তাব এবং পানিবদ্ধতা নিরসনে খালগুলোকে উদ্ধারের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। ঢাকা শহরের ৫৪৪ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার নৌপথের নাব্য ফিরিয়ে আনতে রাজউক অঞ্চলের সব খাল ও নদ-নদী দখলমুক্ত এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছে।
নগরপরিকল্পনাবিদ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব ইনকিলাবকে বলেন, আমলাতান্ত্রিক রাজউকের বোর্ড গঠনে পরিবর্তন এনে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবমুক্ত করার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ ও পেশাজীবীদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন। ড্যাপে নেয়া নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনকল্যাণমুখী অর্থনীতি গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।