পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720158864](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি চৌধুরী) দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানকে জাতীয় সংকট বলে উল্লেখ করে এই সংকট উত্তরণে জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে একটি কৌশল উদ্ভাবনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি সংকট নিরসনে সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান। অধ্যাপক বি চৌধুরী বলেন, দেশে এই জঙ্গিবাদী উত্থানকে সরকার ‘নব্য জেএমবি’ বলে উল্লেখ করেছে। এর ফলে দেশে অশান্তি ও উদ্বিগ্নতা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যেই অনেক মানুষের প্রাণ চলে গেছে।
তিনি বলেন, জঙ্গিদের মধ্যে দুটি শ্রেণির একটি স্বদেশে অথবা বিদেশে প্রশিক্ষিত ও প্রণোদিত হয়েছে এবং দেশে একটি উগ্র নেতৃত্ব সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এরা সন্ত্রাস ও রক্তপাত করেছে। ভবিষ্যতে আরও রক্তপাত হওয়ার হুমকিও রয়েছে। দেশের মানুষ এবং আমাদের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক সহযোগীগণ ভীতি এবং শংকার মধ্যে দিন যাপন করছেন।
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, জঙ্গিদের উগ্র নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানে শিক্ষিত এবং সমাজের উচ্চ ও মধ্যবিত্ত তরুণদের একটি অংশকে বিভ্রান্ত এবং ‘ব্রেইন ওয়াস’ করা হয়েছে। ফলে তরুণদের একটি অংশ মন্ত্রমুগ্ধের মতো উগ্রবাদী নেতৃত্বের আদেশ মেনে চলছে।
বর্তমান সমাজ ভ্রষ্ট উল্লেখ করে বি চৌধুরী বলেন, সামাজিক অনাচার, দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং ক্রমবর্ধমান মাদকে তরুণদের সংখ্যা বৃদ্ধি এটা একটি সামাজিক বাস্তবতা। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে অনেকেই বিষণœতা রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে বিষণœতায় ভোগা রোগীদের একটি বড় অংশ আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকে। ‘বিষণœœ’ তরুণরা অতি সহজেই ভয়ংকর কাজ করতে পারে, এটাও বৈজ্ঞানিক সত্য।
তিনি বলেন, আজকের প্রেক্ষাপটে সামগ্রিকভাবে সমস্যার সবদিক বিবেচনা করতে হবে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হচ্ছে দেশের সরকার। সরকার কয়েকটি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে। তারা তার কৃতিত্বের দাবিদার। কিন্তু জঙ্গিদের বড় নেতাদের জীবন্ত না পাওয়া পর্যন্ত তাদের মূল পরিকল্পনা উদঘাটন করা কঠিন হবে বলে মনে করি।
পুলিশ কর্মকর্তা পিতা ও মাতা হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ঐশীর প্রতি ইঙ্গিত করে বি চৌধুরী বলেন, যেখানে একজন সীমিত আয়ের কর্মচারীর কন্যা মাসে ৫০ হাজার টাকা পকেট খরচ পায়, যার অধিকাংশ মাদক সেবনে এবং বেপরোয়া জীবনযাত্রায় সে খরচ করে থাকে এবং তারপর তার পিতা-মাতাকে হত্যা করেÑ এটা সুস্থ সমাজের লক্ষণ নয়। একইভাবে হত্যা, গুম, রাহাজানি, যৌন হয়রানি এবং ছাত্রী ও মহিলা হত্যা কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে তার ফলাফল হবে সুদূরপ্রসারী। কারণ বের করতে হলে মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং দায়িত্বশীল সরকারি কর্মচারী, যুব প্রতিনিধিবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং মা-বোনদের সাথে আলোচনার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাস্তা বের করতে হবে। যেহেতু সরকারের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত সেহেতু সরকারকেই প্রধান দায়িত্ব নিতে হবে।
ডা. বি চৌধুরী বলেন, জঙ্গি ইস্যুতে সরকার দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিরোধী দলকে ঐক্যপ্রক্রিয়ায় শরিক করতে রাজি হননি। সরকারকে অবশ্যই বুঝতে হবে বাংলাদেশের মোট ভোটশক্তির একটি বড় অংশের মানুষ এখনও বিরোধীদলের পাশে রয়েছে। সরকার বিরোধীদলের কার্যকর শক্তিকে রাজনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে এই সংকটের সময় অনেক কাজে লাগাতে পারতেন। সুতরাং বিরোধীদলকে বাদ দিয়ে ঐক্যপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নয়, বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বি চৌধুরী এই সংকটের সময় বিরোধী দলের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, যদিও বিরোধীদলের দায়িত্ব সরকারের শক্তি-সামর্থ্য এবং প্রশাসনিক ক্ষমতার তুলনায় সীমিত। কিন্তু তাদেও পেছনে রয়েছে বড় একটি ভোটশক্তি। জনগণকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাগিয়ে তোলা তাদের কর্তব্য। এই সংকটের সময় বিরোধীদলগুলোর জনগণের কাছে যেভাবে যাওয়ার কথা ছিল, যেভাবে কথা বলার কথা ছিল, তারা এখনও করতে পারেনি।
বি চৌধুরী জঙ্গি ভাইরাসে আক্রান্ত দেশকে শঙ্কামুক্ত করে একটি শান্তি-সুখের বাংলাদেশে পরিণত করার প্রতিজ্ঞা গ্রহণের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় দলের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রউফ মান্নান, মাহবুব আলী, সাহিদুর রহমান, বেগ মহতাব, শাহ আহম্মেদ বাদল, বিএম নিজাম, রাবেয়া বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।