Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অবহেলিত দক্ষিণের উন্নয়ন গল্প

প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৬ পিএম, ৩১ আগস্ট, ২০১৬

তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের ও হাসান সোহেল : “১ জানুয়ারি ২০২৪, সোমবার, বিকেল ৫টা। পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের ২নং জেটি। তিনটি সাপোর্ট ক্রাফটের মাধ্যমে ধীর গতিতে ঘাটের দিকে এগিয়ে আসছে মার্কস লাইনের মাদার ভেসেল ‘এমসি কিন্নি মোলার’। প্রস্তুত পোর্টের কর্মীরা। টার্মিনালের কাছে আসতেই বড় বড় দড়ি নামল। মুহূর্তেই ১৯ হাজার টিইইউ ধারণক্ষমতার জাহাজটি ঘাটের সঙ্গে বেঁধে ফেললেন কর্মীরা। সূর্য মাত্র অস্ত গেল। বড় বড় বাতির আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠল পুরো পায়রা বন্দর এলাকা। ইতোমধ্যেই সাতটি বিশাল ক্রেনের মাধ্যমে কনটেইনার আনলোড শুরু হয়ে গেছে। একটি করে কনটেইনার নিয়ে লরিগুলো টার্মিনাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে কনটেইনার টার্মিনালের উদ্দেশে। সেখান থেকে নির্ধারিত প্রক্রিয়া শেষ করে কনটেইনারগুলো চলে যাবে রেলওয়ে টার্মিনালে। কিছু কনটেইনার লরিতে করেই পদ্মাসেতু পার হয়ে চলে যাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ট্রেনগুলোও কনটেইনার নিয়ে পার হবে পদ্মা সেতু। টার্মিনালে দাঁড়িয়েই সোজা নদীর ওপারে চোখে পড়ছে তেল শোধনাগার ও এলএনজি টার্মিনাল। এগুলোর একটু উত্তর দিক থেকে আলোর স্ফুলিঙ্গ চোখে পড়ছে। জাহাজ তৈরি হচ্ছে ওখানে। আরেকটু উত্তর থেকে বড় চারটি চিমনি দিয়ে বাষ্প বের হচ্ছে। দুটি উঁচু চিমনি দিয়ে বের হচ্ছে কয়লার ধোঁয়া। এটি ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র। সন্ধ্যা সাতটা বেজে গেছে। ঠা-া বাতাস হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে। বের হয়ে সোজা চলে গেলাম পাঁচতারকা হোটেলের সুইটে। দ্রুত হোটেল ছাড়তে হবে। কারণ ৮টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ছাড়বে ঢাকার উদ্দেশে। হোটেলের গাড়িতে উঠলাম এয়ারপোর্টে যাওয়ার জন্য।
ইকোনমিক জোন আর ইপিজেড এলাকা পার হলেই পায়রা বিমান বন্দর।”
এই সময়ের প্রান্তে দাঁড়িয়ে এটাকে সায়েন্স ফিকশনের কাহিনী মনে হলেও আজ থেকে ঠিক ৭ বছর পরে আর সেটা মনে হবে না। তখন ঠিক এমনই হবে এতকালের অবহেলিত জনপদ দক্ষিণাঞ্চলের চিত্র, কারণ বর্তমান সরকারের উন্নয়ন মহাপরিকল্পনার বড় অংশই বরাদ্দ হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য। সরকারের ১০টি ‘ফাস্টট্রাক’ প্রকল্পের চারটিই দক্ষিণে। এছাড়াও রয়েছে আরও অনেক উন্নয়ন কার্যক্রম ও পরিকল্পনা। শুধু চারটি প্রকল্পেই ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিনিয়োগ হবে ৮০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। অন্যসব উন্নয়ন প্রকল্প মিলিয়ে বিনিয়োগ হবে কয়েক লাখ কোটি টাকা, যা পাল্টে দেবে এই ব-দ্বীপের চিত্র।
দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীকে ‘সিঙ্গাপুরে’ পরিণত করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে রেল সংযোগ, চার লেন মহাসড়ক, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, গ্যাস সংযোগ, বিমান বন্দর, তেল শোধনাগার, সার কারখানা, এলএনজি টার্মিনাল, অর্থনৈতিক অঞ্চল, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, জাহাজনির্মাণ শিল্প, মেডিকেল কলেজ, ক্যাডেট কলেজ, বীজবর্ধন খামারসহ একগুচ্ছ প্রকল্প দক্ষিণাঞ্চলের জন্য খুলে দিচ্ছে অপার সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত। বর্তমান সরকারের নেয়া এসব প্রকল্পের মধ্যে কয়েকটি ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। বাকিগুলোর কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। যোগাযোগ, শিক্ষা, শিল্প-বাণিজ্যসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এসব প্রকল্পের ইতিবাচক প্রভাব এতটাই সুদূরপ্রসারী এবং বিস্তৃত হবে, যা দক্ষিণাঞ্চলকে অর্থনীতির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করবে। প্রকল্পগুলোর কারণে এ অঞ্চলের চিরচেনা দৃশ্যপটের অনেক কিছুই পাল্টে যাবে। শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে দ্রুত। দূরীভূত হবে বেকারত্ব। এ অঞ্চলের মানুষ এখন দিন গুনছে এসব প্রকল্পের সুফল ভোগের। উদ্যোক্তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিল্প কারখানা স্থাপনের।
পদ্মার ওপারের মানুষগুলো বরাবরই অবহেলিত। ২০০৮ সালের আগে কেউ খুব একটা ভাবেনি এই অঞ্চলের মানুষের জন্য। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বঞ্চনার ভাগ্য ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েই ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জোট। ক্ষমতায় এসে হাতে নেন একগুচ্ছ উন্নয়ন পরিকল্পনা। এর মধ্যে প্রধান হলোÑপদ্মা সেতু, রেল সংযোগ, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, মংলা বন্দরের উন্নয়ন, ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পায়রা ও রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন।
পদ্মা সেতু
পদ্মা নদীর মাধ্যমে বৃহত্তর ফরিদপুর ও বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চল বিচ্ছিন্ন পুরো দেশ থেকে। এ কারণে স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৫ বছরেও কোনো শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি এই অঞ্চলে। এই অঞ্চলের মানুষকে শিল্প স্থাপনের স্বপ্ন দেখার সাহস দেখান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশী-বিদেশী শত বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যান এই সেতু বাস্তবে রূপ দিতে। ইতোমধ্যে পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজ ৩২ ভাগ শেষ হয়েছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এই সেতুতে গাড়ি চলবেÑএমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
পদ্মা সেতুর কাজ চলা অবস্থাতেই পদ্মার ওই পাড়ে শিল্পকারখানা নির্মাণ প্রস্তুতির ধুম পড়েছে। সেতুর দুই পাড়ে রীতিমতো জমি কেনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। শিল্পকারখানা, আবাসন, শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই অনেক উদ্যোক্তা এখানে আগেভাগে জমি কেনা শুরু করেছেন। বিক্রি হয়ে গেছে শত শত একর জমি। যত দিন যাচ্ছে, এখানে জমি কেনাবেচা ততই বাড়ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে জমির দামও। যোগাযোগ সুবিধা, জমি ও শ্রমিকের সহজলভ্যতাসহ নানা সুবিধা বিবেচনায় মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় জমি কিনছেন শিল্পোদ্যোক্তারা।
মহাপরিকল্পনা নিয়ে দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপগুলো মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। শিল্পোদ্যোক্তারা মনে করছেন, দেশের বৃহৎ পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে এখানে স্বাভাবিকভাবেই অর্থনৈতিক কর্মকা-ের এক বিশাল মহাযজ্ঞ শুরু হবে। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য আগে থেকেই বলেছেন, এটি নিয়ে গ্রহণ করতে হবে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই পরিকল্পনা, যেখানে অন্তত আগামী ৫০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান থাকতে হবে। ইতোমধ্যে ফরিদপুরে অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষের ভাগ্য বদলের অন্যতম হাতিয়ার। এ উন্নয়নের সুফল পাবে সারা দেশের মানুষ। দেশ হবে সত্যিকারের সোনার বাংলা। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও সাহসিকতা ছাড়া এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল না। শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণসহ মংলা বন্দরের উন্নয়ন ও পায়রা বন্দর স্থাপনের কাজ শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চল হবে দক্ষিণ এশিয়ার ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের জোন’।
রেলসংযোগ
নদ-নদী, খাল-বিল আর সাগরঘেরা অঞ্চল বৃহত্তর বরিশাল আসছে রেল নেটওয়ার্কের আওতায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত আগ্রহে দক্ষিণ জনপদের মানুষ এখন স্বপ্ন দেখছে ট্রেনে করে পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকা আসার। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে শুরু হয়ে বরিশালের ওপর দিয়ে রেল সংযোগ যাবে সরাসরি পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত। রেলপথ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি প্রকল্প তৈরি করেছে।
বরিশালকে রেল সংযোগের আওতায় আনার বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, চীনের অর্থায়নে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেল সংযোগের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যাওয়া যাবে। এরপর ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এবং সেখান থেকে পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেল সংযোগ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। দ্বিতীয় ধাপে নির্মাণ করা হবে বরিশাল থেকে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত। কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত তাদের যে পরিকল্পনা তাতে এই রেলপথটি হবে ব্রডগেজ।
সরকারের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হলে পুরো দক্ষিণাঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন আসবে। ঢাকা থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে যাতায়াতের সময় অর্ধেকে নেমে আসবে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও গতি আসবে।
ঢাকা থেকে বরিশাল পর্যন্ত রেললাইনের স্বপ্ন প্রথম দেখান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশের ১০ জেলায় ৫১টি প্রকল্প ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী প্রথম ঘোষণা দেন, রেললাইন যাবে বরিশালেও। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশেই আমরা রেল যোগাযোগ গড়ে তুলতে চাই। যে বরিশালবাসী কখনো রেলের স্বপ্ন দেখেনি, তাদের আমি রেল সংযোগ দিতে চাই।’ বরিশাল থেকে সে সংযোগ পায়রা পর্যন্তও নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। গত মে মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী আবারও বরিশালে রেল যোগাযোগ স্থাপনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরপরই এ-সংক্রান্ত প্রকল্প প্রণয়ন করে সেটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেল সংযোগের অর্থায়নের জন্য কাজ চলছে। এখনো আনুষঙ্গিক অনেক কাজ বাকি আছে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা দিয়ে বরিশাল যাওয়ার রুট নির্ধারণ, নকশা প্রণয়ন ও এর খরচ কত হতে পারে সেজন্য বিস্তারিত সমীক্ষা করতে আলাদা একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের অনুমোদন পাওয়ার পরপরই ডাকা হবে দরপত্র।
দক্ষিণের উন্নয়ন কর্মকা- প্রসঙ্গে গত ১৮ আগস্ট পায়রা সমুদ্র বন্দর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণাঞ্চল সব সময় অবহেলিত ছিল। ওই অঞ্চলে বিশাল একটা সম্ভাবনা আছে, কিন্তু সেটার দিকে কেউ ফিরে তাকায়নি। ওই অঞ্চলের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নেয়া হবে। অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের সম্পদকে সরকার কাজে লাগাতে চায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

Show all comments
  • আকতার হোসাইন ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৩:১৮ পিএম says : 0
    এবার তাহলে বরিশালেও শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেবে!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অবহেলিত দক্ষিণের উন্নয়ন গল্প
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ