পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন মেগা প্রকল্পে গতি এসেছে। কম সময় ও কম খরচে জ্বালানি তেল পরিবহনে ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শুরু হচ্ছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী এপ্রিল নাগাদ পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করতে যাবতীয় প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে। শেষ পর্যায়ে ভুমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল প্রক্রিয়া।
সেই সাথে পাইপসহ যাবতীয় সরঞ্জাম সংগ্রহও চলছে পুরোদমে। দুই হাজার ৭৫৮ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বর নাগাদ চট্টগ্রামের পতেঙ্গার গুপ্তখাল থেকে সরাসরি নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে জ্বালানি তেল পরিবহন শুরু করা যাবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন-বিপিসির চেয়ারম্যান মো. আবু বকর ছিদ্দীক ইনকিলাবকে বলেন, নিরাপদে এবং কম খরচ ও সময়ে জ্বালানি তেল পরিবহনের লক্ষ্যে প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। আশা করছি যথাসময়ে কাজ শেষ হবে। পাইপলাইন চালু হলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিরাপদ জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে। বিপিসি’র কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে জ্বালানি তেল পরিবহনের প্রধান মাধ্যম নৌপথ। দেশের মোট জ্বালানি তেলের ৯০ শতাংশ তেল পরিবহন হয় নৌপথে। বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল পরিবহনের জন্য তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর প্রায় ২০০টি কোস্টাল ট্যাঙ্কার নিয়োজিত রয়েছে। দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের অপ্রতুলতার কারণে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ছে। তবে অদূর ভবিষ্যতে চাহিদার বিপরীতে নৌপথে দ্রুত পরিবহন সম্ভব হবে না। তাছাড়া শুষ্ক মৌসুমে প্রায় নাব্যতা সঙ্কট দেখা দেয়। তাতে স্বাভাবিক জ্বালানি তেল পরিবহন বিঘিœত হয়।
বর্তমানে দেশে জ্বালানি তেলের গড় চাহিদা বছরে প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে মোট ব্যবহার হয় ৪২ শতাংশ। যার পুরোটাই চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল, ফুতল্লা ও চাঁদপুর ডিপোতে নেয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সড়ক পথে পরিবহন করা হয়। এতে খরচ হয় ২শ’ কোটি টাকারও বেশি। এছাড়া ঢাকায় অবস্থিত বিপণন কোম্পানিগুলো শ্যালো ড্রাফট ট্যাঙ্কারযোগে উত্তরবঙ্গের বাঘাবাড়ি, চিলমারী ও সাচনা বাজার ডিপোতে জ্বালানি তেল পাঠায়।
নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। অবরোধ, ধর্মঘটের মত কর্মসূচিতে ব্যাহত হয় জরুরি এ জ্বালানি পরিবহন। এসব বিবেচনায় নিয়ে জ্বালানি তেলের সাশ্রয়ী ও নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এ প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ শীর্ষক এ প্রকল্পটি বিগত ২০১৬ সালের অক্টোবরে একনেক-এ পাস হয়। তখন প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে নানা কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে তেমন অগ্রগতি হয়নি। এখন প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পের জন্য ১৯টি উপজেলার ৪৩৭ একর জমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা হয়ে চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত এলপিই কোটেড পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শুরু হবে কুমিল্লা থেকে। গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত আট কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। চট্টগ্রামের গুপ্তখাল থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল-ফতুল্লা পর্যন্ত পাইপলাইন হবে। এর পাশাপাশি কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত আরও ৬০ কিলোমিটার একটি শাখা পাইপলাইন বসানো হবে। ওই পাইপলাইন দিয়ে চাঁদপুর ডিপোতে যাবে জ্বালানি তেল। চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন দিয়ে দেশের মোট জ্বালানির প্রায় ৪০ শতাংশ পরিবহন করা হবে। বছরে ৫০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল সরবরাহ করা যাবে। তবে বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী আপাতত ৩০ লাখ মেট্রিক টন সরবরাহ করা হবে।
ঢাকার অদূরে গোদনাইল-ফতুল্লা ডিপো থেকে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে জ্বালানি তেল যাবে। অন্যদিকে বৃহত্তর কুমিল্লাসহ অন্যান্য জেলায় সরবরাহ দেয়া হবে চাঁদপুর ডিপো থেকে। পাইপলাইন দিয়ে প্রধানত ডিজেল সরবরাহ করা হবে। বিপিসির পক্ষে প্রকল্প বাস্তবায়ন তদারক করছে রাস্ট্রায়াত্ত্ব জ্বালানি তেল বিপণন কোম্পানি পদ্মা অয়েল।
প্রকল্পের পরিচালক ও পদ্মা অয়েলের মহাব্যবস্থাপক (প্রজেক্ট) মো. আমিনুল হক বলেন, এপ্রিল মাসের শুরুতে কুমিল্লা থেকে পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হবে। এ লক্ষ্যে যাবতীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ, ভূমি অধিগ্রহণসহ সব প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে। পতেঙ্গার গুপ্তখাল থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল পর্যন্ত মূল পাইপলাইনের ব্যাস হবে ১৬ ইঞ্চি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হবে। সময় বাড়ানো হলেও প্রকল্পের ব্যয় বাড়েনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।