পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চাল আমদানিতেও চলছে ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের কারসাজি। সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে আমদানি না করে চতুরতার সাথে তারা চালের মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে এই সিন্ডিকেট সাধারণ ভোক্তাদের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সরকার বার বার তাদের সাথে আলোচনা করে এমনকি হুঁশিয়ারি দিয়েও কিছু করতে পারছে না।
বাজার স্থিতিশীল রাখতে শুল্কহার কমিয়ে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি উন্মুক্ত করেছে সরকার। বেসরকারিভাবে চাল আমদানি শুল্ক আগের ৬২ দশমিক ৫০ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। তাতেও কোনো লাভ হচ্ছে না। সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েও ব্যবসায়িরা কারসাজির মাধ্যমে চালের মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। ব্যবসায়িরা সরকারের হুঁশিয়ারিতে কর্ণপাত না করে তাদের ইচ্ছা মতো চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
গত ৫ জানুয়ারি বেসরকারিভাবে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। মোট ২৯টি প্রতিষ্ঠান এ চাল আমদানি করবে। এরমধ্যে প্রথম ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেয়া হয়। চাল আমদানির শর্তে বলা হয়েছে, এই বরাদ্দপত্র ইস্যুর সাত দিনের মধ্যে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে হবে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা পাঁচ হাজার টন বরাদ্দ পেয়েছেন, তাদের এলসি খোলার ১০ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ চাল এবং ২০ দিনের মধ্যে পুরোটাই স্থানীয়ভাবে বাজারজাত করতে হবে।
এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান ১০ থেকে ৫০ হাজার টন বরাদ্দ পেয়েছে তাদের এলসি খোলার ১৫ দিনের মধ্যে অর্ধেক এবং ৩০ দিনের মধ্যে সব চাল বাজারজাত করতে হবে। কিন্তু সরকারের এ শর্ত কেউই মানছে না। এখন পর্যন্ত বেসরকারিভাবে দেশে ৫০ হাজার টন চালও আমদানি করা হয়নি। আমদানির এলসি খোলার ক্ষেত্রে ব্যবসায়িরা ইচ্ছাকৃত সময়ক্ষেপণ করেছে এবং বাজারে চালের মূল্য বৃদ্ধি করছে। ব্যবসায়িদের এ চালাকি সরকার বুঝতে পারলেও কিছুই করতে পারছে না। উল্টো বার বার আমদানির সময়সীমা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
প্রথমে এলসি খোলার সময়সীমা বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়। এ সময়ের মধ্যে ব্যবসায়িরা চাল আমদানিতে অত্যন্ত ধীর গতির নীতি অবলম্বন করে। ফলে সরকার আবারো এলসি খোলার সময়সীমা ১৫ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে। সেই সাথে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে আমদানিকারক এই সময়ের মধ্যে এলসি খুলতে পারবে না তাদের বরাদ্দ প্রত্যাহার করা হবে।
গত ১১ ফেব্রæয়ারি সরকারের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারন কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, এলসি খোলার সর্বশেষ সময়সীমা ১৫ ফেব্রæয়ারি করা হয়েছে। এর পরে আর কেউ এলসি খুলতে পারবেন না। সভার এ সিদ্ধান্ত আমদানিকারকদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। যারা ১৫ তারিখের মধ্যে এলসি খুলতে পারবে না তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে আমদানির অনুমতি দেয়া হবে।
মিলারদের কারসাজিতে গত বছর জুন-জুলাই থেকে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছিল। পরে খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মিল মালিকদের দফায় দফায় বৈঠকের পর দাম কিছুটা কমে আসে। কিছুদিন নিশ্চুপ থাকার পর চলতি বছরের শুরুতে মিলাররা ফের তৎপর হয়ে ওঠায় বাড়তে শুরু করে চালের দাম। ধানের দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) দাম বাড়ানো হয়েছে ১০০-২০০ টাকা। ফলে রাজধানীসহ সারা দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে বাড়ছে চালের দাম। এর ফলে খেটে খাওয়া ও নি¤œআয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে।
এমন পরিস্থিতিতে সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির ঘোষণা দেয়। ইতোমধ্যে সরকারি পর্যায়ে ১ লাখ মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে। আমদানি করা চাল প্রথম দিকে বাজারে এলে দাম কিছুটা স্থিতিশিল ছিল। কিন্তু বেসরকারি আমদানিকারকদের কারসাজিতে চালের বাজার আবার বাড়তে শুরু করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন সরকার যদি তার নিজস্ব মজুদ বৃদ্ধি করতে না পারে তাহলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। ব্যবসায়িরা যখন বুঝবে সরকারের কাছে পর্যাপ্ত মজুদ নেই তখন তারা কারসাজির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে। বর্তমানে সরকারি গুদামে চালের মজুত তলানিতে নেমে গেছে। খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত ৬ দশমিক ৬৯ লাখ মেট্রিক টন চাল মজুত আছে। এরমধ্যে চাল ৫ দশমিক ২৮ লাখ মেট্রিক টন, আর গম ১ দশমিক ৪১ লাখ মেট্রিক টন।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সাড়ে আট লাখ ধান চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। কেজি প্রতি ২৬ টাকা দরে ২ লাখ মেট্রিক টন ধান আর ৩৭ টাকা মূল্যে ৬ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং ৩৬ টাকা দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার কথা ছিল। সময় শেষ হয়ে এলেও মাত্র ৮ শতাংশের বেশি খাদ্যশষ্য অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য অধিদফতর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।