Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৫ নিশাচর ছিনতাইকারী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

রাতে এরা হয়ে ওঠে দুর্ধষ ছিনতাইকারী। ছিনতাইয়ের কাজটিও করতো ছিনতাই করা পিকআপ ভ্যান বা ট্রাকে চড়ে। রাজধানীর নির্জন জায়গাগুলো ছিল তাদের ছিনতাই কর্মকান্ডের স্পট। চক্রের সদস্যরা মূলত নিশাচর ছিনতাইকারী। গ্রেফতারকৃতদের কেউ রাজমিস্ত্রী, কেউ হোটেল বয় কিংবা ডেকোরেশনের কাজ করে। রাতে তারা নির্দিষ্ট জায়গায় মিলিত হয়ে ভোর পর্যন্ত ছিনতাই ও ডাকাতি করতো। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ একটি ছিনতাই চক্রের ৫সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। গতকাল বুধবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। গ্রেফতারকৃতরা হলো-শাওন আহম্মেদ, জাহিদুল ইসলাম, ইয়ামিন, হৃদয় ও বাবুল।
তিনি আরো বলেন, গত ২৮ জানুয়ারি ভোর সোয়া ৪টায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এলাকা থেকে দুই ব্যক্তিকে ৬/৭ জন ডাকাত একটি পিকআপ গাড়ি দিয়ে গতিরোধ করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোবাইল ফোনসহ নগদ অর্থ ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় চকবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলা গোয়েন্দা ডিবি লালবাগ বিভাগ ছায়া তদন্ত জানা যায় এ চক্রটি ওই ছিনতাইয়ের কার্যক্রমে জড়িত। এ ঘটনার তদন্তে নেমে গত মঙ্গলবার ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫জনকে গ্রেফতার করে। এ সময় ছিনতাই-ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দু’টি পিকআপ, একটি চাপাতি, তিনটি ছুরি ও ১১টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এ চক্রটি গত ২ ফেব্রুয়ারি একটি ডিমবাহী একটি পিকআপ নরসিংদী থেকে ঢাকায় আসছিল। পথিমধ্যে নারায়ণগঞ্জে গাউসিয়া ফ্লাইওভার এলে চালক নূর মোহাম্মদ ও পথচারী রিপনকে দুইজনকে ছুরিকাঘাত ও মারধর করে ছিনতাইকারীরা ২২হাজার ডিমবাহী একটি পিকআপসহ ৫২ হাজার টাকা, চারটি মোবাইলফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে হাজী মো. রিপন ও নূর মোহাম্মদকে স্থানীয়রা একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাফিজ আক্তার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায় যে, তারা রাজধানী এবং আশপাশের এলাকা থেকে পিকআপ বা ছোট মাহেন্দ্র ট্রাক ছিনতাই করে। ছিনতাইকৃত ওই যানবাহনের মাধ্যমে রাত ১২টার পর তারা হয়ে ওঠেন ভয়ঙ্কর ছিনতাইকারী। রাজধানীর মাহখালী, সাভার, শাহআলী, মিরপুরের গুদারা ঘাট, শেরেবাংলা নগরসহ আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ এবং ভুলতা এলাকার রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ছিনতাই ডাকাতি করে থাকেন। চকবাজার থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তে জানা যায়, ওই ডাকাতির ঘটনায় সাতজন ডাকাত অংশ নেন। যার মধ্যে উল্লিখিত ৫জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি অভিযুক্তসহ এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি, দস্যুতাসহ অন্য মামলা রয়েছে। কিছুদিন আগে ডাকাতির প্রস্তুতির মামলায় চক্রটির দলনেতা শাওন আহমেদ জয় জেলে গেছে। জেলে বসেই তার ডাকাতি-ছিনতাই দলের সদস্য সংগ্রহ করেন। জেল থেকে বেড়িয়ে ফের শুরু করেন ছিনতাই-ডাকাতি। তিনি সর্বশেষ গত রাতে ফের গ্রেফতার হন।
ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, আমরা দেখেছি এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটলেও পুলিশি অভিযোগ হয় খুবই কম। আবার কোনো চক্র গ্রেফতার হওয়ার পর বেশ অভিযোগ আসে। আমরা মহানগর এলাকাসহ এর আশপাশে এধরনের ঘটনার সম্মুখীন হলে পুলিশকে জানান। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। নিয়মিত সিসিটিভি মনিটরিং করছি। তবে অভিযোগ না আসলে তো তদন্ত কাজও ব্যাহত হয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ৫-নিশাচর-ছিনতাইকারী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ