Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সৈয়দপুরে নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান বিপুল পরিমাণ উপকরণ ধ্বংস ও কারখানা সিলগালা

প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সৈয়দপুর (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা : সৈয়দপুরে নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার শহরের নয়াটোলা আতিয়ার কলোনী গোলচত্বর এলাকায় এক অভিযান চালিয়ে ওই নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়। কারখানার দুই কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। তবে কারখানার মালিক স›দ্বীপ কুমার বিশ্বাসকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পশুখাদ্য ও ওষুধ তৈরির বিপুল পরিমাণ উপকরণ, কার্টন, লেবেলসহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। পরে উদ্ধারকৃত সামগ্রীর কিছু ধ্বংস করা হয়। এ ছাড়া ওই নকল কারখানায় তৈরি নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে।
অভিযানসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স›দ্বীপ কুমার বিশ্বাস নামের জনৈক ব্যক্তি সৈয়দপুর শহরের নয়াটোলা আতিয়ার কলোনী গোলচত্বর এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিল। সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. রফিকুল আলম বিশ্বস্ত সূত্রে ওই নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ কারখানার খবর পান। ওই সংবাদের ভিত্তিতে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবু ছালেহ মো. মুসা জঙ্গীর নেতৃত্বে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ওই নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ কারখানায় আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় কারখানার ভেতরে তিন কর্মচারী নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ তৈরির কাজ করছিল। অভিযানকালে পুরাতন ছাদ ঢালাই করা একতলা ওই বাড়ির ৫টি কক্ষে নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত তরল পদার্থসহ বিপুল পরিমাণ উপকরণ উদ্ধার করা হয়। পরে এসব ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া ওই নকল কারখানায় তৈরি পশুখাদ্য ও ওষুধ নমুনা হিসেবে জব্দ করে নিয়ে আসা হয়। সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ এলাকার মো. আমজাদ হোসেন (২৭) ও সৈয়দপুর শহরের মিস্ত্রিপাড়া আরমান (২১) নামের কারখানার কর্মচারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। কারাখানার অপর শিশু শ্রমিক ধলাগাছের আরিফকে (১২) ছেড়ে দেওয়া হয়। অনেক খোঁজখবর নিয়েও মালিক স›দ্বীপ কুমার বিশ্বাসের হদিস মিলেনি।
এ অভিযানে সৈয়দপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. রফিকুল আলম প্রাণিসম্পদ বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
একটি সূত্র জানায়, ওই নকল কারখানার মালিক স›দ্বীপ কুমার বিশ্বাসের বাড়ি নড়াইল জেলায়। তার বাবার নাম মৃত. সহদেব চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি চাঁদ নগর এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। সৈয়দপুর পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ‘মেসার্স ম্যাক্স এগ্রোভেট’ নামের ওই নকল কারখানা পরিচালনা করে আসছিল। ওই নকল কারখানায় গবাদিপশুর প্রায় ৪০ প্রকার খাদ্য ও ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছিল। কারখানায় তৈরি পশুখাদ্য ও ওষুধের বক্সের গায়ে শুধু ম্যাক্স এগ্রোভেট, আমিনুল হেলথ ডিভিশন, বাংলাদেশ লেখা রয়েছে। আর কারখানার মালের চালানের কপিতে হেড অফিস ৬৩/এফ (তৃতীয় তলা), লেক সাকার্স, কলাবাগান, ঢাকা-১২০৫ এবং ডিপো অফিস চৌধুরী ভিলা, নয়াটোলা, সৈয়দপুর নীলফামারী লেখা রয়েছে।
ওই নকল কারখানার পাশের বাড়ির বাসিন্দা সৈয়দপুর কলেজের শিক্ষক আহসান উদ্দিন বাদল জানান, ওই বাড়িটি এক সময় তার শ্বশুরের ছিল। পরে তিনি তা জনৈক খয়রাত হোসেন মাস্টারের কাছে বিক্রি করে দেন। তিনি আরো জানান,ওই বাড়ি পশুখাদ্য তৈরি হয় এটি তিনি জানতেন। তিনি কারাখানাও মালিককেও কোনদিন চোখে দেখেননি। তবে সেখানে যে নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ তৈরি হতো এটি তার জানা ছিল। ওই বাড়ির দরজা-জানালা প্রায় সময় বন্ধ রাখা হতো বলে জানান তিনি। তাছাড়াও ওই বাড়িতে কাউকে ঢুকতেও দেওয়া হতো না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা জানান, একটি আবাসিক এলাকায় এ ধরনের একটি নকল কারখানা থাকলেও তা তিনি জানতেন না। এমনকি এলাকার কেউই এ কারখানা বিষয়ে কিছুই বলতে পারেননি।
এ ব্যাপারে এ রিপোর্ট পাঠানো (বিকেল সাড়ে ৫টা) পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সৈয়দপুরে নকল পশুখাদ্য ও ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান বিপুল পরিমাণ উপকরণ ধ্বংস ও কারখানা সিলগালা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ