পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর কাকরাইলে বখাটের ছুরিকাঘাতে নিহত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার রিশার (১৪) হত্যাকারীকে আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গ্রেপ্তারের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছে তার সহপাঠীরা। পুলিশ গতকাল সোমবার রিশার সন্দেহভাজন খুনি ওবায়দুলকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছিল। তবে এরই মধ্যে ওবায়দুলকে না পেয়ে তার বোন ও ভগ্নিপতিকে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থেকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। প্রায় চার ঘণ্টা পর বেলা সোয়া তিনটার দিকে তারা অবরোধ তুলে নেয়। দীর্ঘ সময়ের এ অবরোধের কারণে কাকরাইলসহ আশপাশের সড়কে প্রচ- যানজট দেখা যায়। রিশার মৃত্যুর পর প্রতিদিনই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে তার সহপাঠীরা। অবরোধ শেষে শিক্ষার্থীরা হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারে সময় বেঁধে দেয়ার পাশাপাশি কর্মসূচিও ঘোষণা করে। সে অনুযায়ী আজ বুধবার নিজেদের স্কুলে দোয়া ও শোকসভা এবং ১ সেপ্টেম্বর সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয় তারা।
প্রসঙ্গত, মাস ছয়েক আগে স্কুলের ড্রেস বানাতে রিশা মায়ের সঙ্গে গিয়েছিল দরজির কাছে। সেই দরজি ফোন নম্বর পেয়ে উত্ত্যক্ত করত তাকে এবং পিছু নেয় তার। মৃত্যুর আগে রিশা বলে গেছে, ওই দরজি ওবায়দুলই ছুরি মেরেছে তাকে। পুলিশকেও সে এই জবানবন্দি দিয়েছে।
পুলিশ জানায়, রিশা গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে জবানবন্দিতে বলেছে, বখাটে ওবায়দুল তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেছে। হামলার আগের দিনও সে তার পিছু নিয়েছিল। রিশা হত্যার ঘটনায় ওবায়দুল রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সে যেন পালাতে না পারে, সে জন্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে পুলিশ। রমনা থানার উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, গত সোমবার এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ওবায়দুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওবায়দুলকে ধরতে তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জে অভিযান চালানো হয়েছিল। হত্যার পর সেখানে সে অবস্থান করেছিল। কিন্তু গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশিত হলে সে পালিয়ে যায়।
রিশার হত্যাকারী ওবায়দুলকে ধরিয়ে দিতে তথ্য দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। মেট্রোপলিটন পুলিশের পোর্টাল ডিএমপি নিউজের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও তাকে ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে। কেউ যদি ওবায়দুলের বর্তমান অবস্থান জেনে থাকেন, তাহলে মেট্রোপলিটন পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ইনবক্সে তথ্য দিতে অনুরোধ করা হলো। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক ঠিকানা, ভধপবনড়ড়শ.পড়স/ফসঢ়ফযধশধ/
ওবায়দুলকে ধরিয়ে দিতে জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রীও। তিনি বলেন, ‘ঘাতক ওবায়দুলের ছবি গণমাধ্যমে এসেছে। সে এখন আর অপরিচিত নয়। তাকে যে যেখানে দেখবেন, সেখানেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেবেন।’
স্কুল প্রাঙ্গণে উপস্থিত নিহত রিশার বাবা মো. রমজান হোসেন বলেন, ‘রিশার হত্যাকারীকে ধরিয়ে দেয়ার দায়িত্ব যদি মন্ত্রী গণমানুষের হাতে দিয়ে দেন, তাহলে সরকারের কাজ কী?’ সরকারের দায়িত্ব না নেয়ার বিষয়টিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেন তিনি। ‘আমি মেয়ে হারিয়েছি, কিন্তু এ হত্যাকা-ের জন্য কি কেবল আমরাই দায়িত্ব পালন করবো, এটা কি শুধুমাত্র আমাদেরই দায়িত্ব?’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রমজান হোসেন।
রিশার স্কুলের দু’জন সিনিয়র শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যা করার সব তো আমরাই করছি সেই ঘটনার দিন থেকে। ওবায়দুলের ছবি গণমাধ্যমে এসেছে, তারপরও কেন তাকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না? ওবায়দুল কি পুলিশের চেয়েও শক্তিশালী?’ অপরাধীদের বিচারের আওতায় না আনতে পারার বিষয়টিকে তুলে ধরে তারা বলেছে, ‘তনু হত্যার বিচার যদি হতো, তাহলে আজকে আমাদের রিশাকে হারাতে হতো না, অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যায় বলেই পুনরায় অপরাধ সংঘটিত হয়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।