Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বেশির ভাগ কলেজে সকাল ১১টার পর ছাত্র-শিক্ষক থাকেন না : শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের বেশিরভাগ কলেজে বেলা ১১টার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, বেশিরভাগ কলেজে ১১টার পর থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত থাকে। কারণ শিক্ষকরা মনে করেন ক্লাসে পড়ালে কোচিং-প্রাইভেটে শিক্ষার্থীরা আসবে না। গতকাল সকালে রাজধানীর রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে দেশের মাধ্যমিক শিক্ষার শিক্ষণ কার্যক্রমের ওপর এক প্রতিবেদন প্রকাশ ও কর্মশালা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন। এতে দেশের জেলা উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তা ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা সকাল সাতটায় বাড়ি থেকে আসে। তারা আসে কোচিং করতে। সকালে যে শিক্ষার্থী আসে, সে কোচিং করে ক্ষুধার্ত হয়ে বাড়ি চলে যায়। তিনি শিক্ষা কর্মকর্তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তদারকের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। শিক্ষামন্ত্রী পরিদর্শনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান জানেন ১০ বছরেও তাঁর প্রতিষ্ঠানে কেউ পরিদর্শনে আসবে না। এ জন্য এসব সমস্যা হয়। তিনি শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার ওপর নজর দিতে শিক্ষা কর্মকর্তাদের জোর দেন।
নোট বই থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন না করার নির্দেশ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কেউ নোট বই থেকে প্রশ্ন করলে তা বাতিল করা হবে এবং তাকে শাস্তি পেতে হবে। মন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে নেওয়া পরীক্ষার বিরোধিতা করে বলেন, ‘এই লম্বা সময়ের পরীক্ষা কমিয়ে আনা হবে।’
শিক্ষার মানোন্নয়নে নিয়মিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও মনিটরিংয়ের জন্য শিক্ষা বিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ বলেন, পাবলিক পরীক্ষায় এমপিওভুক্ত অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হতাশাব্যঞ্জক ফলাফলে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পেছনে সরকারি অর্থ ব্যয়ের যোক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। নিয়মিত পরিদর্শন ও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা জানার জন্য পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো না, অনেক আগেই ব্যবস্থা নেয়া যেতো।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন কোন কোন শিক্ষক ক্লাসে শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে না পড়িয়ে কোচিংয়ে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের নোট বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনিয়মিত উপস্থিতি প্রভৃতি অভিযোগও কোন কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাওয়া যায়। নিয়মিত পরিদর্শন ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এ সব শিক্ষক নামধারী দুর্জন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়নে উদ্যোগী হওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা বিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, শিক্ষার হার পরিমাণের দিক থেকে বেড়েছে, কিন্তু গুণগতমান সে অনুযায়ী বাড়েনি। সে জন্য গুণগত মানের দিকে জোর দিতে হবে। মাঠপর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যে কলেজ থেকে একজনও পাস করেনি, মাত্র একজন পরীক্ষা দিয়ে একজনই ফেল। তাহলে আপনি কী পরিদর্শন করলেন?’
অনুষ্ঠানে গত বছর দেশব্যাপী পরিচালিত মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মূল্যায়ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানানো হয় মূল্যায়ণকৃত ৫২৭টি স্কুল ও মাদরাসার মধ্যে শিক্ষার মানের দিক থেকে সবচেয়ে ভালো বলে বিবেচিত হয়েছে রাজশাহীর বোয়ালিয়ার খাদেমুল ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং সবচেয়ে দুর্বল বলে বিবেচিত হয়েছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে উত্তর কুশিয়ারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয় ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে নির্ধারিত প্রশ্নপত্রে তাৎক্ষণিক শ্রেণি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এ মূল্যায়ণ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ২০১২ সাল থেকে এ ধরণের মূল্যায়ণের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেশির ভাগ কলেজে সকাল ১১টার পর ছাত্র-শিক্ষক থাকেন না : শিক্ষামন্ত্রী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ