Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাজারে ৩০ নবজাতক অকাল মৃত্যুর শিকার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশে প্রতি এক হাজার জীবিত নবজাতকের মধ্যে ৩০জন অকালমৃত্যুর শিকার হয়। এদের মধ্যে ১৯ শতাংশের মৃত্যু হয় অকালজাত জন্ম (প্রিম্যাচিওর বার্থ) এবং জন্মকালীন কম ওজনের (লো বার্থ ওয়েট) কারণে। বাংলাদেশে অকালজাত জন্ম ও জন্মকালীন কম ওজনের সমস্যা, সমাধান ও উত্তরণের উপায় সম্পর্কে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান হয়। গতকাল বুধবার আইসিডিডিআর’বির মহাখালি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভা ইউএসএআইডি-র অর্থায়নে অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করে আইসিডিডিআরবি’র অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট ডা. আহমেদ এহসানুর রহমান জানান, অকালমৃত্যুর অন্যতম কারণ শিশুর অকালজাত বা প্রিম্যাচিওর জন্ম (গর্ভে ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার পূর্বে)। এছাড়া জন্মকালীন ওজন ২ দশমিক ৫ কেজির নিচে হওয়া। প্রতিবছর দেশে ৫ লাখ ৭৩ হাজার নবজাতক প্রিম্যাচিওর অবস্থায় এবং ৮ লাখ ৩৪ হাজার নবজাতক কম ওজন নিয়ে ভ‚মিষ্ঠ হয়। এদের মধ্যে এক লাখ ৯২ হাজার নবজাতকের জন্মকালীন ওজন হয় ২ কেজি বা তার নীচে। দেশে প্রতিবছর ১৭ হাজার ১০০ নবজাতক এই দুই কারণে মৃত্যুবরণ করে। এদের মধ্যে ৭২ শতাংশের মৃত্যু হয় জন্মের প্রথম দিন পূর্ণ করার আগেই। তিনি বলেন, এই ১৭ হাজার ১০০ নবজাতক মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ পরিবার কোন স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করেনা। আর অন্যদিকে ৪৩ শতাংশ মৃত্যু ঘটে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সহজে বাস্তবায়ন যোগ্য বিভিন্ন পদ্ধতি যেমন-এন্টিনেটাল কর্টিকোস্টেরয়েড (এসিএস), ক্যাংগারু মাদার কেয়ার (কেএমসি) এবং স্পেশাল কেয়ার নিউবর্ন ইউনিট (স্ক্যানু) ইতোমধ্যেই এসব মৃত্যুরোধে কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

এসময় জানানো হয়, বাংলাদেশ হেলথ ফ্যাসিলিটি সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী, দেশের মাত্র ৬৯ শতাংশ জেলা হাসপাতাল এবং ৬৫ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই ওজন পরিমাপক স্কেল আছে। দেশের মাত্র ২০০ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কেএমসি সেবাপ্রদানের ব্যবস্থা আছে। যেখানে সীমিত সংখ্যক কম ওজনস্মপন্ন নবজাতক সেবা পাচ্ছে। কেএমসি প্রদানের গুণগতমান, ফলোআপ সুবিধার অপর্যাপ্ততা এবং কম সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবস্থানের প্রবণতাও সমীক্ষায় উঠে আসে। ২০২০ সালে মাত্র ৫ হাজার ৭৩১ জন নবজাতক কেএমসি সেবা লাভ করে। যা সেবা প্রয়োজন এমন নবজাতকের সংখ্যার মাত্র একশতাংশ। সভায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নবজাতক স্বাস্থ্য বিষয়ক জাতীয় টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মাদ শহীদুল্লা এবং আইপাস বাংলাদেশের প্রধান ডা. সায়েদ রুবায়েত। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আইসিডিডিআর,বি’র ম্যাটার্নাল এন্ড চাইল্ড হেলথ বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর এবং আরডিএম প্রকল্প প্রধান ডা. শামস এল আরেফিন।

এসময় বক্তারা বলেন, কোভিড-১৯ এর মতো মহামারীর সময়েও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, উপযুক্ত সাবধানতা অবলম্বন করে কেএমসি প্রদান করলে নবজাতকের জন্য ঝুঁকি হ্রাস পায়। নবজাতক মৃত্যু রোধে কেএমসিসহ অন্যান্য সেবা সহজলভ্য করার পাশাপাশি এর সুবিধা সম্পর্কে পরিবার ও কমিউনিটিকে অবহিতকরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টেকসই লক্ষ্য মাত্রার ৩.২ নং লক্ষ্য অর্থাৎ ‘২০৩০ সালের মধ্যে নবজাতক ও অনূর্ধ্ব ৫-বছর বয়সী শিশুর প্রতিরোধ যোগ্য মৃত্যু বন্ধের পাশাপাশি প্রতি এক হাজার জীবিত জন্মে নবজাতকের মৃত্যুহার কমপক্ষে ১২-তে এবং প্রতি এক হাজার জীবিত জন্মে অনূর্ধ্ব ৫-বয়সী শিশুমৃত্যুর হার কমপক্ষে ২৫-এ নামিয়ে আনা’ নিশ্চিত করতে গুরুত্ব দিতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অকাল-মৃত্যুর-শিকার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ