পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধূমপানবিরোধী আইনের সংশোধন এবং নাটক-চলচ্চিত্রে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয়ের সময় শিল্পীদের ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। গতকাল বুধবার মাদকবিরোধী সংগঠন ‘প্রত্যাশা’, ‘বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি এবং পপুলেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (পিডিও)র পক্ষে অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান লিংকন এ রিট করেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য সচিব এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে রিটে।
রিট সম্পর্কে অ্যাডভোকেট লিংকন বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার সংক্রান্ত আইন থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা অকার্যকর। ফলে দেশে এ জাতীয় দ্রব্যের অবাধ ব্যবহার ও আইন লঙ্ঘনের মহোৎসব চলছে। আমরা ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ এর ১৪(২) ধারা সংশোধন এবং আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়েছি। আইনের ১৪ (২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কতৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতিরেকে কোনো আদালত এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ বিচারের জন্য গ্রহণ করবে না।’ এটি সংবিধানের ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। কতৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পাশাপাশি ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্তরাও যেন মামলা করতে পারেন এজন্য আইনের ১৪(২) ধারা সংশোধন চেয়েছি। রিটে বলা হয়, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। রীতিমতো এ জাতীয় পণ্যের প্যাকেটের মোড়কেই ক্ষতির বিষয় উল্লেখ করা থাকে। যদিও ধূমপায়ীরা এসব ক্ষতি সম্পর্কিত বার্তা আমলে নেন না। এজন্য ধূমপান ও তামাক জাতীয় পণ্যের উৎপাদন উত্তরোত্তর বেড়েই চলছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এসব পণ্যের প্রচার-প্রচারণাও। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে প্রায় প্রতি বছর বাজেটে সরকার কর বাড়িয়ে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত করারোপ ও ক্রমশ দাম বৃদ্ধি পেলেও ব্যবহার সেই অর্থে কমানো যায়নি। পাশাপাশি ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে করা আইনও অনেক ক্ষেত্রে অকার্যকর বলা চলে। রিটে বলা হয়, ২০০৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫৬তম সম্মেলনে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য ‘ফ্রেমঅয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)’ নামের কনভেনশনে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। ওই কনভেশনের বিধানাবলী বাংলাদেশে কার্যকর করা লক্ষ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদন, ব্যবহার, ক্রয়-বিক্রয় ও বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করতে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ প্রণয়ন করে সরকার।
আইনানুযায়ী প্রকাশ্যে ধূমপান দন্ডনীয় অপরাধ। আইনে পাবলিক প্লেস কিংবা গণপরিবহনে ধূমপান করলে ৩শ’ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করার বিধান রয়েছে। কোনো ব্যক্তি একই অপরাধ দ্বিতীয়বার বা বারবার করলে পর্যায়ক্রমে দ্বিগুণ দন্ডে দন্ডিত হবেন। কিন্তু এই আইনের বাস্তবায়ন দৃশ্যমান নয়। আইনে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ এবং পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত ধারা ৫ (১)(ক) তে বলা হয়েছে, ‘প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়, বাংলাদেশে প্রকাশিত কোনো বই, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ডে বা অন্য কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করবেন না বা করাবেন না।’ একই আইনের ধারা ৫(১)(ঙ) তে বলা আছে, ‘বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত বা লভ্য ও প্রচারিত, বিদেশে প্রস্তুত কোনো সিনেমা, নাটক বা প্রামাণ্য চিত্রে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের দৃশ্য টেলিভিশন, রেডিও, ইন্টারনেট, মঞ্চ অনুষ্ঠান বা অন্য কোনো গণমাধ্যমে প্রচার, প্রদর্শন বা বর্ণনা করবেন না বা করাবেন না।’ অর্থাৎ আইনে প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন ও প্রচারণার ক্ষেত্রেও বিশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তবে বিশেষ প্রয়োজনে ধূমপান কিংবা তামাজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিতান্তই করতে হলে সতর্কবার্তাসমূহ ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। অথচ দেশের চলচ্চিত্র-নাটকে তামাকজাত দ্রব্যের অবাধ ব্যবহার লক্ষণীয়। অনেক ক্ষেত্রে আবার সতর্কবার্তাও ব্যবহার করা হচ্ছে না।
রিটে সাকিব খান অভিনীত ‘শাহেনশাহ’ চলচ্চিত্রের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, এই সিনেমার একাধিক দৃশ্যে সিগারেটের ব্যবহার করা হলেও কোনো সতর্কবার্তা ব্যবহার করা হয়নি। বরং নানা রঙে-ঢঙে সিগারেট খাওয়ার দৃশ্য আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করা হয়েছে। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার সম্পর্কিত এমন ভূরিভূরি দৃশ্য অন্যান্য নাটক-সিনেমায়ও পাওয়া যাবে। ফলে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য প্রণীত আইনটি শুধু পুঁথিগত ‘কালো অক্ষর’ হয়েই আছে। তাই রিটে ধূমপান বন্ধ এবং ধূমপানবিরোধী আইন সংশোধন চাওয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।