পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলীয় মেঘনার বুক চিরে কয়েকটি বিশাল চর জেগে ওঠছে। ভাসানচর সংলগ্ন পশ্চিম-দক্ষিণে চরটির অবস্থান। আয়তন ৩২ বর্গকিলোমিটার। স্থানীয় বন বিভাগের কল্যাণে জেগে ওঠা চরটি এখন গাছ গাছালিতে পরিপূর্ণ। জেলেরা চরটির নাম রেখেছে গাঙ্গুরিয়ার চর। চরটি এখন মহিষ পালনের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গাঙ্গুরিয়ার চরের অবস্থান হচ্ছে হাতিয়া মূল ভ‚খন্ড থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে এবং ভাসানচর থেকে ৪ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণে, স্বর্ণদ্বীপ থেকে ২৩/২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং স›দ্বীপ উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণে। এরআগে ২০১৬ সালে ঠেঙ্গারচর (বর্তমান ভাসানচর) নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন সর্বপ্রথম দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত হয়।
জেগে ওঠা চরটিতে এক সময় জেলেরা সাময়িক বিশ্রাম করতো। পরবর্তীতে নোয়াখালী বন বিভাগ নতুন চরটিতে বনায়ন কার্যক্রম শুরু করে। মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে গাঙ্গুরিয়ার চরটি সবুজ বন বেষ্টনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। স্থানীয় বন বিভাগ ও জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, ১৫/১৬ বছর পূর্বে চরটি জেগে ওঠে। চরটি ক্রমান্বয়ে বিস্তৃতি লাভ করে দক্ষিণ-পূর্ব-উত্তর অর্থাৎ ভাসানচরের পূর্ব-দক্ষিণেও এগুচ্ছে। আগামী এক দশকে চরটির আয়তন কয়েকটি ইউনিয়নের আয়তনের সমান হবে বলে স্থানীয়রা আশা করছেন। আর এটা সম্ভব হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে ঝড়-জ্বলোচ্ছাসের সময় ভাসানচরকে মহাপ্রাচীর হিসেবে রক্ষা করবে গাঙ্গুরিয়ার চর।
হাতিয়া মূল ভূখন্ডের নলচিরা নদীঘাট থেকে উত্তরে চেয়ারম্যান ঘাটের দূরত্ব ২৭ কিলোমিটার। এ নৌপথে তিনটি খাড়ি (নৌযান চলাচলের পথ) রুট রয়েছে। পলিমাটি জমে এ তিনটি রুট ক্রমান্বয়ে সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। আগামী এক থেকে দেড় দশকে এ রুটে চর জেগে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে চট্টগ্রামের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নৌ চলাচল রুট পরিবর্তন হবে। হাতিয়া নিঝুমদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব পাশের্^ প্রায় ২৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দমার চর। চরটিতে ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। দমার চরের দক্ষিণে আরও একটি বিশাল চর জেগে ওঠেছে। আগামী বছর স্থানীয় বন বিভাগের উদ্যোগে নতুন চরটিতে বনায়নের সম্ভাবনা রয়েছে। হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী ইনকিলাবকে জানান, হাতিয়া মূল ভূখন্ডের চারদিকে প্রায় অর্ধ শতাধিক চর জাগছে। এগুলোর কয়েকটিতে ইতিমধ্যে বসতি স্থাপন, চাষাবাদ ও গোচারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। যে হারে ভূমি জাগছে, তাতে করে আগামী এক থেকে দেড় দশকে এ অঞ্চলের মানচিত্র পাল্টে যাবে। এসব চরাঞ্চল ঘিরে দেশের অর্থনৈতিক সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে।
নোয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) বিপূল কৃষ্ণ দাস ও হাতিয়া দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থান নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল আলম নতুন নতুন চর জেগে ওঠার কারণ জানিয়ে বলেন, চাঁদপুর থেকে নদীর পানি ভোলার শাহবাজপুর নদী ও হাতিয়ার পূর্ব-পশ্চিম পাশ দিয়ে সমুদ্রে প্রবাহিত হয়। আবার সমুদ্র থেকে জোয়ারের পানি হাতিয়া মূল ভ‚খন্ড, ভাসানচর ও সন্দীপ ভ‚খন্ডে এসে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এসব স্থানে পলিমাটি জমে ডুবোচর থেকে বড় বড় চরের সৃষ্টি হচ্ছে। তারা আরও বলেন, আগামী দুই থেকে আড়াই দশকের মধ্যে এখানকার আয়তন বৃহত্তর নোয়াখালী তথা (নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষীপুর) জেলার আয়তনের সমান হবে।
মেঘনায় জেগে ওঠা নতুন চরে বন বিভাগের উদ্যোগে ব্যাপক বনায়ন করা হয়। কিন্তু এক শ্রেণির সুবিধাভোগী বনাঞ্চল উজাড় করে সেখানে চাষাবাদ ও বসতি স্থাপন করে পরিবেশ ধ্বংস করছে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে ঝড়-জ্বলোচ্ছাসের সময় বনাঞ্চল মহাপ্রাচীর হিসেবে জানমালের সুরক্ষা প্রদান করে। অপরদিকে, জেলা প্রশাসন থেকে ভূমিহীনদের মাঝে এসব জমি বন্দোবস্ত দিচ্ছে। আর এতে করে বন বিভাগ ও ভূমিহীনদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই জেগে ওঠা নতুন চর নিয়ে উভয় বিভাগের সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা না থাকলে জেগে ওঠা চরগুলো নিয়ে আরও বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।