Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোয়ারী বন্ধ, সর্বনাশ স্টোন ক্রাশার শিল্পে

সিলেটে পাথরের কান্না ২

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০২ এএম

দীর্ঘ এক বছর পরিবেশ বিপর্যয়ের অভিযোগে বন্ধ রাখা হয়েছে সিলেটের পাথর উত্তোলন। এতে পাথর সম্পদের শুধু ধ্বংস নয় শেষ হয়ে যাচ্ছে বিকাশমান স্টোন ক্রাশার শিল্প। অপূরণীয় ক্ষতির মুখে থাকা এ খাতটি এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে।

পাথর উত্তোলন বন্ধের পর আর্থিক ও মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছেন ক্রাশার মিল মালিকসহ শ্রমিক-মজুর। পাথর কোয়ারী কেন্দ্রিক ক্রাশার মেশিন শিল্প রয়েছে সিলেট জুড়ে। ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি, জাফলং এমনকি ধোপাগুলে এ শিল্পের বিরাট কর্মকান্ড ছিল। সচল ক্রাশার মেশিনে হাজার হাজার শ্রমিক রাত দিন ব্যস্ত থাকতো।

সংশ্লিষ্টদের মতে, সিলেটের অন্যতম পাথর কোয়ারী ভোলাগঞ্জ। ভোলাগঞ্জের পাড়–য়া ও কলাবাড়িতে রয়েছে ছোট বড় প্রায় ৪০০টি ক্রাশার মেশিন। বলতে গেলে এ অঞ্চলটি ‘ক্রাশার জোন’। জীবনের প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা ছিল আশপাশ। গড়ে উঠেছে দোকানসহ নানা ব্যবসা বাণিজ্য।

প্রতিটি ক্রাশার মেশিনের পেছনে খরচ প্রায় কোটি টাকার মতো। বিনিয়োগ করা এ অর্থের পেছনে রয়েছে ব্যাংক লোন। কিন্তু পাথর কোয়ারী বন্ধ, নেই পাথরের সরবরাহ। এখন ক্রাশার মেশিনগুলো নিস্তব্ধ প্রাণহীন। এই শিল্পের সাথে জড়িতরা এখন আর্থিকভাবে দেউলিয়া। ব্যাংকের লোন পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে তারা দেউলিয়ার পথে। এছাড়া প্রতিটি ক্রাশার মিলে ৬০ থেকে ৭০ জন শ্রমিক কাজ করতে পারে। মিল বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা নিয়ে দুর্বিষহ যন্ত্রণায় বিপর্যস্ত। একই অবস্থা অন্যান্য ক্রাশার জোনগুলো।

ভোলাগঞ্জের বন্ধু স্টোন ক্রাশার মিল মালিক হোসেন আলী বলেন, প্রায় কোটি টাকা খরচ করে তিনি ক্রাশার মেশিন মিল গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু কোনো ধরনের আগাম নোটিশ ছাড়াই পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয়ায় আর্থিক দিক থেকে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি। ব্যাংক লোনের দেনাসহ অন্যান্য দায় এখন তার মাথার উপর। একই অবস্থা অন্যান্য মিল মালিকদের।

ভোলাগঞ্জ ক্রাশার মিল মালিক সমিতির সম্পাদক আফতাব আলী বলেন, ক্রাশার শিল্প এখন ধ্বংসের মুখে। বর্তমানে এ খাতে বিনিয়োগকারীরা দিশেহারা। ব্যাংক লোন পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেক মিল মালিক।

সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পাথর কোয়ারী কেন্দ্রিক দুর্বৃত্তপনা দীর্ঘদিনের। এ সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ ও ভোগদখল রক্ষায় একটি শ্রেণি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। চাঁদাবাজিসহ অপরিকল্পিত ও বেআইনী প্রক্রিয়ায় পাথর উত্তোলনে সাধারণ শ্রমিকের মৃত্যুর খবরও আমরা পেয়েছি। একই সাথে পরিবেশ ধ্বংসের অশুভ প্রতিযোগিতা ছিল প্রবল। পাথর সম্পদকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতিক ফায়দা হাসিল করতে হলে পরিবেশ অটুট রাখার প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন দরকার। প্রতিবেশী দেশও পরিবেশ রক্ষায় মনোযোগ দিয়ে পাথর আহরণ করছে।



 

Show all comments
  • নুরজাহান ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৩:০৮ এএম says : 0
    পাথর সম্পদকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতিক ফায়দা হাসিল করতে হলে পরিবেশ অটুট রাখার প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন দরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • শান্ত ছেলে মুজাম্মেল ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৮:০৬ এএম says : 0
    এদেরকে দেখার কি কেউ নেই ?
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৮:০৬ এএম says : 0
    এজন্যই আমাদের দেশের উন্নতি হচ্ছে না
    Total Reply(0) Reply
  • Alayer khan ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৮:০৬ এএম says : 0
    আমাদের দেশের মন্ত্রীরা দেশের মানুষ কিভাবে আছে এটা দেখেনা জেলা প্রশাসক এবং পরিবেশ বাদি সবাই এক সাথে যাহাতে সিলেট থেকে পাতর উত্তোলন না হয়। উত্তোলন বন্ধ থাকলে বিদেশ থেকে আমদানি করা যাবে। এই গরিব মানুষের পেটে যারা লাথি মারতেছে তাদের বিরুদ্ধে গন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ইনকিলাবের মত আর অন্যান্য গণমাধ্যম এই সব মানুষের সাহায্য আসা উচিত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্টোন ক্রাশার শিল্প
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ