পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগের বছরগুলোর মতো জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া আবারও সেরা করদাতা হয়েছেন। ৯০ বছর বয়সী কাউছ মিয়া হাকিমপুরী জর্দার স্বত্বাধিকারী। ২০১৯-২০ করবর্ষে ব্যবসায়ী শ্রেণিতে ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে এই ব্যবসায়ী সেরা করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি ব্যবসায়ী শ্রেণীতে সেরা করদাতাদের একজন নির্বাচিত হন।
গুলশান-বনানী কিংবা মতিঝিলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেম্বার নেই কাউছ মিয়ার। পুরান ঢাকার আগা নওয়াব দেউড়ি রোডে হাকিমপুরী জর্দার কারখানার একটি কক্ষই তার ‘চেম্বার’। মৌলভীবাজার থেকে সরু এই গলিপথ ধরে কিছুটা পথ হাঁটলেই তার কারখানা। সেখানেই বসেন তিনি। গুলশান-বনানী, মতিঝিলের ডাকসাইটে ব্যবসায়ীদের পেছনে ফেলে পুরান ঢাকার ঘুপচি গলির এই ব্যবসায়ীই প্রতিবছর সর্বোচ্চ করদাতা হন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি ব্যবসায়ী শ্রেণিতে সর্বোচ্চ করদাতার একজন।
অবশ্য অন্য শ্রেণির সর্বোচ্চ করদাতারা প্রতিবছর কর হিসেবে যত টাকা দেন, তারা কাউছ মিয়ার ধারেকাছে নেই বলে জানিয়েছেন এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তা।
জাতীয় ট্যাক্সকার্ড নীতিমালা, ২০১০ (সংশোধিত) অনুযায়ী স¤প্রতি ২০১৯-২০ করবর্ষের জন্য সেরা করদাতা হিসেবে ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে ব্যক্তি শ্রেণিতে ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে কাউছ মিয়া ছাড়াও সেরা করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, মো. নুরুজ্জামান খান ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কামাল।
কাউছ মিয়া ৬১ বছর ধরে কর দিয়ে আসছেন। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন তিনি। কেন কর দেওয়া শুরু করলেন, এর ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন। ২০১৯ সালে এনবিআরের অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, আগে টাকাপয়সা এখানে-সেখানে রাখতাম। এতে নানা ঝামেলা ও ঝুঁকি থাকত। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দিয়ে ‘ফ্রি’ হয়ে গেলাম। এরপর সব টাকাপয়সা ব্যাংকে রাখতে শুরু করলাম। হিসাবনিকাশ পরিষ্কার করে রাখলাম। ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ১ নম্বর করদাতা হয়েছিলেন কাউছ মিয়া।
কাউছ মিয়ার বাবা চাইতেন না তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যে নামেন। তার বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে। আর ব্যবসায় মন পড়ে থাকা কাউছ মিয়া ১৯৪৫ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দামামায় আর পড়াশোনা এগোয়নি। বাবার অনিচ্ছা সত্তে¡ও তিনি মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ১৯৫০ সালে চাঁদপুরের পুরান বাজারে মুদিদোকান দেন। এরপর ধীরে ধীরে ১৮টি ব্র্যান্ডের সিগারেট, বিস্কুট ও সাবানের এজেন্ট ছিলেন। পরের ২০ বছর তিনি চাঁদপুরেই ব্যবসা করেন। ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জে চলে আসেন এবং তামাকের ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে ৪০-৪৫ ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি।
তবে তার মূল ব্যবসা তামাক বেচাকেনা। রংপুরে তামাক কিনে সেখানেই বিক্রি করেন। একবার তিনি আমদানির ব্যবসায় নামতে লাইসেন্স নিয়েছিলেন। এ ব্যবসায় কারসাজি না করলে টিকে থাকা মুশকিল, এটা চিন্তা করে আমদানির ব্যবসা ছাড়েন। বর্তমানে নদীপথে পণ্য পরিবহনের জন্য বেশ কিছু কার্গো জাহাজ আছে কাউছ মিয়ার। এই ব্যবসা তার ছেলেরা দেখাশোনা করেন।
কী চিন্তাভাবনা থেকে এত বছর সরকারকে কর দেন, দেশপ্রেম নাকি দায়িত্ববোধ। জানতে চাইলে কাউছ মিয়া বলেছিলেন, এভাবে কখনো ভাবি নাই। ১৯৫৮ সাল থেকে নিয়মিত কর দিই। স্বাধীনতার পরও সেটি অব্যাহত রেখেছি। তিনি বলেন, কর দিলে টাকা হোয়াইট (বৈধ) হয়। আমার যা মন চায় তা-ই করতে পারব। কেউ হামলা করবে না। হয়তো এ জন্যই আমি সব সময় কর দিয়ে আসছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।