স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার রিশার হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে তার সহপাঠীরা। এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। রিশার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে
শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে এবং রাস্তা অবরোধ করে রাখে। এ সময় ওই রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ওবায়দুলকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে রাজপথ ছাড়ে।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে আলটিমেটাম ঘোষণা করে প্রতিষ্ঠানের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুনতাসির রহমান রিফাত। তিনি বলেন, কাকরাইলের মতো এতটি জনবহুল এলাকায় একজন ছাত্রীকে ছুরিকাঘাত করা হলো। অথচ পুলিশ এখনো অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারল না। আমরা পুলিশকে রোববার বেলা ১২টা থেকে সোমবার বেলা ১২টা পর্যন্ত আলটিমেটাম দিচ্ছি। তারা যেন রিশার হত্যাকারী বৈশাখী টেইলার্সের কর্মচারী ওবায়দুলকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনে।
শিক্ষার্থীদের দেয়া ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. ইউসুফ আলী রাইজিংবিডিকে বলেন, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ আসামিকে ধরার চেষ্টা চলছে। অপরাধী কোনোভাবেই পার পাবে না।
গত ২৪ আগস্ট বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্কুলের সামনে ফুটওভার ব্রিজের নিচে রাস্তার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় রিশাকে পাওয়া যায়। সহপাঠিরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার পরদিন রিশার মা বাদী হয়ে বৈশাখী টেইলার্সের কর্মচারী ওবায়দুলকে একমাত্র আসামি করে রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
তিন দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) থাকার পর গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মারা যায় রিশা। এর আগে রিশার মা তানিয়া হোসেন জানান, ওবায়দুল একটি টেইলার্সের কর্মচারী। সে রিশাকে উত্ত্যক্ত করত। এ ঘটনার সঙ্গে সেই জড়িত। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ছয় মাস আগে মায়ের (তানিয়া হোসেন) সঙ্গে ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সে বৈশাখী টেইলার্সে যায় রিশা। সেখানে একটি ড্রেস সেলাই করতে দেয়। দোকানের রিসিটে বাসার ঠিকানা ও মোবাইল ফোন নম্বর দেয়া হয়। রিসিট থেকে মোবাইল ফোন নম্বর নিয়ে ওবায়দুল ফোনে রিশাকে বিরক্ত করত। স্কুলে যাওয়া-আসার সময় রিশাকে উত্ত্যক্ত করত ওবায়দুল।
ছুরিকাঘাতে রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের এক ছাত্রীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুরাইয়া আক্তার রিশা নামে ওই ছাত্রীর মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে শিক্ষার্থীরা। সোয়া ১২টা পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে রাখে তারা।
গত বুধবার সুরাইয়া আক্তার রিশাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় এক বখাটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকালে সে মারা যায়।
সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার। তার কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে পরে অবরোধ প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীরা।