Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্লাবিত হচ্ছে বিভিন্ন এলাকা

প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

* ৬ জেলায় পানিবন্দি লাখো মানুষ
* পদ্মা উপচে পড়বে যে কোনো সময়
ইনকিলাব রিপোর্ট : পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। আজকের মধ্যেই তা বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। ভারতের বিহার রাজ্যের বন্যা থামাতে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়ায় এই নদীর পানি বাড়ছে। পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চাঁপাইনবাবগজ্ঞ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়ার নি¤œাঞ্চল তলিয়ে গেছে। প্লাবিত এলাকার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে। বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে অনেকে এলাকায় চুলা জ্বালাতে পারছে না। শুকনা খাবারেরও অভাব দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েকটি জেলার নি¤œাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। সেইসাথে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ক্ষেতের ফসল, বীজতলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অনেক এলাকায় পানি বৃদ্ধির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই চলছে নদীভাঙন। গতকাল (রোববার) সকালে শ্রীরামপুর শহর রক্ষা বাঁধসংলগ্ন টি-বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। টি-বাঁধের পশ্চিম-দক্ষিণ অংশে ব্রিক ম্যাট্রেসিংয়ের কিছু অংশ সরে গেছে, তা জিওব্যাগ দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পানি বৃদ্ধির ফলে নগরীর জিয়ানগর, বুলনপুর, পঞ্চবটি ও শ্যামনগর এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। এছাড়া সিমলা পার্ক, বিজিবি গার্ডেন, পদ্মা গার্ডেন, বড়কুঠি, লালনশাহ পার্কসংলগ্ন এলাকায় পানি বাঁধ স্পর্শ করেছে।
ভেড়ামারায় প্রতি মুহূর্তে বেড়েই চলেছে পদ্মা নদীর পানি। হুমকির মুখে পড়েছে ভেড়ামারা শহর রক্ষা বাঁধ। রায়টা বাঁধ এবং মসলেমপুর বাঁধে পানি উপচে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে শহরের দিকে পানি চলে আসার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। ফলে চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। পদ্মা ও মহানন্দায় হঠাৎ পানি দ্রুতবেগে বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। আর পানিবন্দি রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ফলে ওইসব ইউনিয়নের স্কুল-মাদরাসা ও কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া, বন্যার ফলে ফসলের মাঠে থাকা পাকা-আধাপাকা ফসলও তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে নাটোরের লালপুর পদ্মা নদীতে। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ থেকে ১০ সেন্টিমিটার। পানি বৃদ্ধির কারণে বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটছে এখানকার পদ্মাপারের মানুষ। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে লালপুর উপজেলার বিলমাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, গৌরিপুর, তিলকপুর এবং দক্ষিণ লালপুর এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরজাজিরা, নওসারা সুলতানপুর, দিয়ার শংকরপুরসহ বেশ কয়েকটি চরের ফসল ডুবে গেছে।
রাজশাহীতে পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই
রাজশাহী ব্যুরো : ফারক্কা বাঁধের গেট খুলে দেওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে পদ্মার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়ছে। নদীর ধারঘেঁষে গড়ে ওঠা বসতবাড়ি তলিয়ে গেছে। গত তিন দিনে পানি বেড়েছে ৪৬ সেন্টিমিটার। গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পদ্মার পানি প্রবাহ ছিলো ১৮ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার মাত্র ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ সেটি অতিক্রম করে পানি বিপদসীমায় পৌঁছাতে পারে বলে জানা গেছে। পদ্মার ভাঙনে নদীর ওপারের গ্রাম ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী শহররক্ষা বাঁধসহ জেলায় বিভিন্ন স্থানে পদ্মার অস্থায়ী বাঁধ ধসে যাওয়াসহ বন্যার আতঙ্কে রয়েছে নগরবাসী। এদিকে রাজশাহী শহরের পুলিশ লাইনের পিছনে দীর্ঘদিনের টি বাঁধে এই ফাটল দেখা দিয়েছে। বাঁধের পশ্চিমে প্রচ- পানির চাপে এই ফাটলের উৎপত্তি হয়েছে। জি.আই তারের নেট ছিড়ে ইট সরে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান বলেন হঠাৎ করেই শনিবার রাতের কোন এক সময়ে এই ঘটনা ঘটে। সকালে তারা জানেতে পেরে ফাটল ও ভাঙন নিয়ন্ত্রনে বালির বস্তা সেখানে ফেলা হচ্ছে। ফাটল এবং সাইডে সামান্য ভাঙন দেখা দিলেও নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
নগরীর পদ্মা নদী সংলগ্ন সিমলা পার্ক, লালন শাহ পার্ক, পদ্মা গার্ডেন, বড়কুঠি, কুমারপাড়া, আলুপট্টি এলাকায় বাঁধের উচ্চতার সমান পানির উচ্চতা হয়ে গেছে। আর কয়েক সেন্টিমিটার পানি বাড়লে পানি শহররক্ষা বাঁধ অতিক্রম করবে। এরই মধ্যে রাজশাহী শহর এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও রাজশাহী শহররক্ষা বাধ চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। জেলার পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের তিনটি চর এলাকা, গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের অন্তত ৬০ ভাগ, বাঘার চক রাজাপুর ইউনিয়নের পুরো এলাকা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধির পরিমাণ অব্যাহত থাকলে আজকালের মধ্যেই পদ্মার পানি বিপদসীমা ছাড়িয়ে যাবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে করে হুমকির মধ্যে পড়তে পারে রাজশাহী শহররক্ষা বাঁধসহ জেলার বিভিন্ন স্থানের অস্থায়ী বাঁধগুলো। আর এসব বাঁধ ধসে গেলে গোটা রাজশাহীতেও বড় ধরনের বন্যা দেখা দিতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করছেন পদ্মা তীরবর্র্তী মানুষরা। নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার বাসীন্দারা জানান, ‘হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারণে এলাকার শতাধিক বাড়ি-ঘর পানিতে ডুবে গেছে। উপায়ন্তর না দেখে ঘরের আসবাবপত্র নিয়ে বাঁধের ওপরে আশ্রয় নিয়েছি।’ একই অবস্থা নগরীর গুড়িপাড়া, তালাইমারী এলাকাতেও গিয়ে দেখা গেছে।
পাবনায় বিপদসীমার খুব কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি
মুরশাদ সুবহানী/এস এম রাজা, পাবনা থেকে : ভারতের ফারাক্কা ব্যারাজের সব পেট খুলে দেওয়ায় এবং বিহারের পাহাড়ি ঢলে দেশের পদ্মা নদী এই নদীর প্রধান শাখা নদী গড়াই ও আত্রাইসহ প্রায় ৫৩টি নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নদী কূলবর্তী নি¤œাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। পাবনার ভূ-পরিস্থ পানি জরিপ দফতরের (সাবেক হাইড্রোলজি দফতর) নির্বাহী প্রকৌশলী জহরুল হক মোবাইলে পদ্মা নদীর পানি প্রবাহ বিষয়ে আজ (রবিবার) মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি কিছুটা কমেছে। বর্তমানে বিপদসীমার ১২ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে বিপদসীমা হলো ১৪.২৫ মিটার।’ বিপদ সীমার খুব কাছ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মাত্র ১২ সে.মি. পানি কমেছে, এটা খুব বেশী কম কি? এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘বেশী না কমলেও নতুন করে আর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’ এদিকে, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডে এক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিনিধিকে বলেছেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি কমছে। পানি বৃদ্ধির সম্ভবনা না থাকলেও আবার যদি এর মধ্যে বিহারে বা হিমালয়ের অববাহিকায় প্রবল বৃষ্টি হয়; তাহলে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। আর তা না হলে এখন আর পানি বৃদ্ধির তেমন কোনো সম্ভবনা নেই।
রাজবাড়ীর পদ্মায় ভয়াবহ ভাঙন
নজরুল ইসলাম, রাজবাড়ী থেকে : ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় পদ্মা নদীর রাজবাড়ী জেলার অংশে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। গত দুই দিনে নদীতে পানি বৃদ্ধি না হলেও তীব্র ¯্রােত দেখা দিয়েছে। সেই সাথে নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। জেলা সদরের বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা ও লালগোলা এলাকার শত শত পরিবার তাদের ঘরবাড়ী ও মালামাল সড়িয়ে নিতেও হিমশিম খাচ্ছে।
ওই এলাকায় গত শনিবার দুপুর পর্যন্ত ভাঙনের তীব্রতায় নদী রাজবাড়ী শহর রক্ষা বেড়ি বাঁধ থেকে মাত্র দশ ফুটের মধ্যে চলে এসেছে। যে কোনো সময় ওই বাঁধটি ভেঙে যাবার উপক্রম হয়েছে। সেইসাথে ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় করেও রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না ওই ইউনিয়নের উড়াকান্দা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় ভবন। ২৫ লাখেরও বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওই ভবনটি পানির দরে বিক্রির উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। অসহায় পরিবার গুলো স্কুল মাঠ, সরকারি রাস্তা এবং নিকট স্বজনদের বাড়ীতে ওই সব মালামাল রেখে কোন রকমে মাথা গুজে বসবাস করছেন।
এখানে বেড়িবাঁধের থেকে নদী মাত্র দশ ফুট দুরে অবস্থান করছে। যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে যে কোনো সময় বেঁড়িবাঁধ ভেঙে যাবে। এখনি উদ্যোগ না নিলে ওই ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে না। দুই দিন ধরে ফারাক্কার পানির প্রভাব এখানে পড়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ও শিবগঞ্জ উপজেলা সংবাদাতা : ফারাক্কা বাঁধের বেশিরভাগ গেট খুলে দেয়ায় পদ্মা ও মহানন্দা নদীর পানি গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফুলেফেঁপে উঠেছে নদীগুলির পানি। ফলে এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ, আম বাগান ও বাড়িঘর। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ শহিদুল আলম জানান, পদ্মা ও মহানন্দা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। পদ্মা প্রথম যে স্থান দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে সেখানে অবস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাংখা পয়েন্টে পানি শনিবার ২২.৩৮ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। এখানে বিপদসীমা ২২.৫ মিটার। অর্থাৎ এখনও পদ্মা বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটিার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর মহানন্দার বিপদসীমা ২১ মিটার যা শনিবার ২০.৮৪ মিটার অর্থাৎ ১৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তুলনায় শনিবার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে পদ্মায় ৬ সেন্টিমিটার ও মহানন্দায় ২ সেন্টিমিটার। ২৪ ঘন্টায় পদ্মায় ১৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার আর মহানন্দায় ১২ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এক্ষেত্রে তিনি শনিবারের পানি বৃদ্ধিকে কম বলেন তিনি। বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে তিনি জানান, গঙ্গা বেসিনে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফারাক্কা পয়েন্টে শুক্রবার রাত ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৯ ঘন্টায় পানি বেড়েছে মাত্র ১ সে.মি.। বিপদসীমা অতিক্রম না করলে বন্যা বলা যায় না বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ফারাক্কা গেট সারা বছরই খোলা থাকলেও এবার বেশীরভাগ গেট খুলে দেয়ায় হঠাৎ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ফরিদপুরের তীর সংরক্ষণ বাঁধের ৪০ মিটার ধস
ফরিদপুর জেলা সাংবাদদাতা : ফরিদপুরের পদ্মার পাড় ধলার মোড়ে তীর সংরক্ষণের বাঁধের ৪০ মিটার ধসে পড়েছে। হঠাৎ করে শনিবার রাতে পদ্মার তীর সংরক্ষণ বাঁধের সিসি ব্লক ৪০ মিটার অংশ ধসে যায়। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী জহিরুল হক জানান, দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, খুব দ্রতই সিসি ব্লক ধসের স্থানে ফেলে সংস্কার করা হবে। ১০ বছর পূর্বে এই সিসি ব্লকের কাজটি করা হয়েছিল।
এলাকাবাসী জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে ধলার মোড়ের ৪০ মিটার সিসি ব্লক ধসে পড়েছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের পরে সংস্কার করার কথা থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড তা সংস্কার করেননি। সংস্কারের নামে প্রতিবছর কোটি কোটি হাতিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। এলাকাবাসী আরো বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন টেন্ডারের কাজগুলি দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেওয়ায় ফরিদপুরের পদ্মা নদীতে কিছুটা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অনেকেই বলছে এ পানি স্বাভাবিক বর্ষার পানি।
লালপুরে শত শত ঘরবাড়ি পদ্মাগর্ভে বিলীনের আশঙ্কা
নাটোর জেলা সংবাদদাতা : ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে পদ্মা নদীতে। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ থেকে ১০ সেন্টিমিটার। নাটোরের লালপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ঘরবাড়ী ভাঙনের মুখে পড়েছে।
পদ্মায় পানি বৃদ্ধির কারণে বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটছে পদ্মা পাড়ের মানুষদের। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে লালপুর উপজেলার লালপুর সদর ইউনিয়ন, ২নং ঈশ্বরদী ইউনিয়ন, ৫নং বিলমাড়িয়া ও ৮নং দুড়দুড়ীয়া ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী গ্রাম গুলো প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর চরজাজিরা, নওসারা সুলতানপুর, দিয়ার শংকরপুর, দিয়াড়বাহাদিপুর, চাকলারচরসহ বেশ কয়েকটি চরের ফসল ডুবে গেছে। লালপুর উপজেলার ২নং ঈশ্বরদী ইউনিয়নের তিলকপুর, লক্ষ্মীপুরসহ নদীতীরবর্তী এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ শতশত ঘরবাড়ী পদ্মা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলের পানি পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম জহুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, পাকশি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের মাত্রা ১৪.২৫। পানি বৃদ্ধির হার এরকম থাকলে হয়তো আগামী ২/১ দিনের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
কুষ্টিয়ায় বানভাসিদের চরম দুর্ভোগ
কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার : ফারাক্কা বাঁধের সব দরজা একসাথে খুলে দেওয়ার ফলে কুষ্টিয়া জেলায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে বানভাসিদের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। দুর্গত এলাকায় সরকারিভাবে ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে কিছু চাল বিতরণ করা হলেও চাহিদার তুলনায় তা খুবই কম। ফলে দুর্গত এলাকায় এখনও কাটেনি খাদ্য সংকট। এদিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, ভেড়ামার বানভাসি মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহালেও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন বন্যায় মানুষের খুব একটা ক্ষতি হয়নি।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীর পানি সামান্য হলেও কমতে শুরু করেছে বলে দাবি করেছে। রোববার সকালে হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। শনিবার বিকেলে যা ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড পানি কমার কথা জানালেও এলাকাবাসী বলছেন বন্যার পানি কমেনি আরোও বেড়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

Show all comments
  • এস এম শিপন ২৯ আগস্ট, ২০১৬, ১০:৪৫ এএম says : 0
    বন্ধু মানে ফারাক্কা খুলে দেউয়া
    Total Reply(0) Reply
  • Abdullah Al Mamun ২৯ আগস্ট, ২০১৬, ১১:০৪ এএম says : 0
    বন্ধু দেশের উপহার,,,
    Total Reply(0) Reply
  • ফিরোজ ২৯ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৫৫ এএম says : 0
    পানি তো আর থামাতে পারবো না। তাই আসুন সবাই মিলে এই বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াই।
    Total Reply(0) Reply
  • সুমন ২৯ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৫৬ এএম says : 0
    দ্রুত তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হোক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্লাবিত হচ্ছে বিভিন্ন এলাকা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ