Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আশা পূরণ হলো না বিদেশ যাবার

প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বি.বাড়িয়া হাসপাতালের বেডে ছটফট করছে খোরশেদ আলম
মামলা না তুললে হত্যার হুমকি
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে ঃ বিদেশ যাবার আশা পূরণ হলো না খোরশেদ আলমের। হাড়গোড় ভাঙ্গা ও রগ কাটা হাত পা নিয়ে মারাত্মক যন্ত্রণায় সে এখন হাসপাতালের বেডে ছটফট করছে। একটি সন্ত্রাসী চক্র তার হাত-পায়ের রগ কেটে হাড়গোড় ভেঙ্গে বস্তায় ভরে পানিতে ফেলে দেয়ার চেষ্টাকালে প্রাণে বেঁচে যায় সে। তার বাড়ী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের সদাগরকান্দী গ্রামে। গত ৯ আগস্ট দুর্বৃত্তরা তাকে রাস্তা থেকে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয় এবং হাড়গোড় ভেঙ্গে ফেলে। বিদেশে যাবার ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে যায়।
জানা গেছে, রায়পুরা উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের সদাগরকান্দী গ্রামের সামসু মিয়ার পুত্র খোরশেদ আলমের সাথে বছরখানেক পূর্বে একই গ্রামের পশ্চিমপাড়ার এক ঝগড়াটে মহিলার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে খোরশেদ আলম ঝগড়াটে মহিলাটিকে থাপ্পড় মারে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝগড়াটে মহিলার সন্ত্রাসী আত্মীয়রা গ্রামে এক অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি করলে গ্রামের লোকজন এক দরবারে বসে খোরশেদকে মহিলার কাছে মাফ চাইয়ে দেয় এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করে। এই ঘটনার পর সবকিছু মিটে গেলেও ঝগড়াটে মহিলার আত্মীয়-স্বজনরা সেটা মন থেকে মুছেনি। সাম্প্রতিক কালে খোরশেদ আলম বিদেশ যাবার জন্য টাকা যোগাড় করে। গত ৯ আগস্ট সে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ী যাবার পথে সেই ঝগড়াটে মহিলার বাড়ীর নিকট পৌঁছলে কবির, নূর মোহাম্মদ, রাজু, আল-আমিনসহ ৮/১০জন লোক তাকে ডাক দেয়। খোরশেদ আলম সরল বিশ্বাসে তাদের বাড়ীতে গেলে পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং মুখে কাপড় বেঁধে তাকে নির্বাক করে দেয়। পরে তারা ঠা-া মাথায় চাপাতিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার হাত ও পায়ের রগগুলো কেটে দেয়। এরপর চাপাতির ঘাড়া দিয়ে পিটিয়ে হাত পায়ের হাড়গুলো ভেঙ্গে দেয়। পরে তারা তাকে একটি বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করলে আশেপাশের লোকজন ঘটনা টের পেয়ে যায়। এই অবস্থায় সন্ত্রাসীরা তাকে ফেলে চলে যায়। পরে লোকজন তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নবিনগড় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাবার পর সেখান থেকে তারা রেফার্ড করা হয় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে। সেখান থেকে পুনরায় পঙ্গু হাসপাতালে এবং সর্বশেষ তাকে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সে পক্ষকালাধিক সময় ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ডাক্তাররা জানিয়েছে, খোরশেদ আলম ভাল হলেও জীবনের তরে পঙ্গু হয়ে যাবার আশংকা রয়েছে। এব্যাপারে খোরশেদ আলমের চাচা মুনসুর আলী বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। কিন্তু থানা পুলিশ মামলা নিয়ে গড়িমসি করে। এই ফাঁকে দুর্বৃত্তরা একটি কাউন্টার মামলা দায়ের করে খোরশেদ আলম ও তার আত্মীয় স্বজনের বিরুদ্ধে। পরে ঘটনাক্রমে থানা পুলিশ মনসুর আলীর মামলা রুজু করলেও অদ্যাবধি কোন আসামীকে গ্রেফতার করছে না। উপরন্তু তারা মামলা তুলে নেয়ার জন্য খোরশেদ আলমের আত্মীয়-স্বজনকে চাপ দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে খোরশেদ আলমসহ তার আত্মীয়-স্বজনকে হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আশা পূরণ হলো না বিদেশ যাবার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ