পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চীনের সাথে ঋণচুক্তির অপেক্ষায় বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এ ইতোমধ্যে সরকারের মেগা এ প্রকল্পের জন্য ঋণ অনুমোদন করেছে চীনা এক্সিম ব্যাংক। বাকি শুধু ঋণচুক্তি। সংশ্লিষ্টরা জানান, কতিপয় কর্মকর্তার ভারতপ্রীতির কারণেই মূলত চীনের সাথে ঋণচুক্তি হতে দেরি হচ্ছে। অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও একই কারণে ঢিলেমি করছেন। তা না হলে মেগা এ প্রকল্পের কাজ চলতি মাসেই শুরু করা সম্ভব ছিল। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সচিব মোসাম্মাৎ নাসিমা বেগম বলেন, আলোচনা চলছে। যে কোনো সময় ঋণচুক্তি হয়ে যাবে।
২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাস হয় ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। এতে মোট ব্যয় ধরা হয় ১৬ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা দিবে চীনের এক্সিম ব্যাংক এবং বাকি ৫ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা জোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসিকে নিয়োগ করে সেতু বিভাগ। সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকায় তাদের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করার কথা। এক্সপ্রেসওয়েটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। সে হিসেবে প্রকল্প বাস্তবায়নকাল অবশিষ্ট মাত্র দেড় বছর। এখনো কাজ শুরু না হওয়ায় নির্ধারিত মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সেতু বিভাগের প্রকৌশলীরা। তারা জানান, কাজটি বাস্তবায়ন করতে অন্তত চার বছর সময় প্রয়োজন। যদি চলতি বছরেও কাজ শুরু হয়, তাহলে শেষ করতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত লেগে যাবে। অর্থাৎ দুই বছর বেশি সময় লাগবে।
সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, জি টু জি পদ্ধতিতে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে অর্থায়ন করছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। তবে একনেকে অনুমোদনের প্রায় সাড়ে তিন বছর পার হলেও এখনো ব্যাংকটির সঙ্গে ঋণচুক্তিই সম্পন্ন করতে পারেনি বাংলাদেশ সরকার। মূল ডিপিপি অনুযায়ী, ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ ব্যয় ১৬ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। এতে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় পড়বে ৭০৪ কোটি টাকা। তবে অনুমোদনের সাড়ে তিন বছর পরও নির্মাণকাজ শুরু না হওয়ায় এ ব্যয় আরো বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল দেরি হলে তা প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়িয়ে দেয়। উন্নয়ন করার জন্য ঠিকাদারদের সঙ্গে যে চুক্তি করা হয়, তাতে ‘প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট’ নামের একটা বিষয় থাকে। সাধারণত কাজের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার ১৮ মাস পর থেকে প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট শুরু হয়। মূল্যস্ফীতির কারণে পণ্য, সেবা ও জনবল বাবদ যে খরচ বাড়ে, তা প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে সমন্বয় করা হয়। এক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নে যত দেরি হবে, মূল্য সমন্বয়ের কারণে ততই বাড়বে বাস্তবায়ন ব্যয়। ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটিও এ সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক শাহাবুদ্দিন খান বলেন, এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। ইতোমধ্যে চীন সরকার এ ঋণ অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে এক্সিম ব্যাংক ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করবে। যেহেতু ঋণ অনুমোদন হয়ে গেছে, এখন ঠিকাদার শুধু ঋণ চুক্তির অপেক্ষা করছেন। এরপরই ঠিকাদার মোবিলাইজেশন কাজ শুরু করবেন। তিনি বলেন, আমরা কাজ শুরু করার চার বছরের মধ্যেই প্রকল্পটি শেষ করার চেষ্টা করব। আগামী ফেব্রæয়ারিতেই কাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করছি। প্রথম দুই-তিন মাস মোবিলাইজেশনের কাজ করতে হবে। এর পরই শুরু হবে মূল কাজ। তিনি বলেন, আমরা বেশকিছু কাজ আগেই করে রেখেছি। জমি অধিগ্রহণ করা হয়ে গেছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নকশা তৈরির কাজও প্রায় শেষ। ভৌত কাজ শুরু করার আগে যেসব প্রাথমিক কাজ করতে হয়, সেগুলোর প্রায় সবই শেষ হয়ে গেছে। এসব কাজ ঠিকাদার নিজেদের টাকাতেই করেছেন। যখন ঋণ চুক্তি হবে, তার পরই এ টাকা ঠিকাদারকে পরিশোধ করা হবে।
সাভার ইপিজেড থেকে আশুলিয়া-বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর হয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বিমানবন্দর মোড় পার হয়ে চলমান ঢাকা-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসয়েটি। সাভার, আশুলিয়া, নবীনগর ও ইপিজেড সংলগ্ন শিল্প এলাকার যানজট নিরসন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়ন করবে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এটি ব্যবহার করে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২০টি এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচ-ছয়টি জেলার মানুষ সহজে এবং দ্রুততার সঙ্গে ঢাকায় প্রবেশ করতে পারবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সরাসরি সংযুক্ত হয়ে রফতানি পণ্য পরিবহনেও রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ডিপিপিতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ফাইন্যান্সিয়াল আইআরআর এবং ইকোনমিক আইআরআরের পরিমাণ হবে যথাক্রমে ১৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ ও ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। ফাইন্যান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক বেনিফিট কস্ট রেশিওর পরিমাণ দাঁড়াবে যথাক্রমে ১ দশমিক শূন্য ৬ এবং ১ দশমিক ১৩। জিডিপিতে শূন্য দশমিক ২১৭ শতাংশ প্রভাব ফেলবে এ এক্সপ্রেসওয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।