Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাভেল এজেন্সি আইন পাস

বিমানের ১২শ’ কোটি টাকার দুর্নীতির সঙ্গে সরকারি দলের লোক জড়িত : দাবি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

অপরাধে ট্রাভেল এজেন্সিকে জরিমানার ও এজেন্সিগুলোর মালিকানা হস্তান্তর এবং দেশ-বিদেশে শাখা খোলার সুযোগ দিয়ে জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) বিল-২০২০’ বিল পাস হয়েছে। গতকাল সোমবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। বিলটির ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করেন বিরোধীদলীয় সদস্যরা। সেই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলটি পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছে বিমানের পাওনা অনাদায়ী থাকে। তারা বিমানকে টাকা দেয় না। জরিমানার ব্যবস্থা আছে, কিন্তু কার্যকর নেই। সংস্থাগুলোর কাছ থেকে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। একই দলের ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বিমানের দুর্নীতির অভিযোগ করে বলেন, এজেন্সিগুলো অনিয়ম করলে তাদের সনদ বাতিলের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু সেটা করা হয় না। বিভিন্ন সময় বিমানের অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে ১২শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেই। এসব দুর্নীতির সঙ্গে সরকারি দলের লোক ও বিমানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বিমানের ইতিহাস সুখকর নয়। ১৯৭২ সালে বিমান প্রতিষ্ঠার পর লাভ করেছে অল্প সময়, অধিকাংশ সময়ই লোকসান দিয়েছে। বিমানের উন্নয়নের প্রধানমন্ত্রী নতুন বিমান আনছেন। এগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। এজেন্সিগুলো টিকিট বিক্রি করে বিমানকে টাকা দেয় না। বিমানের টিকিট পাওয়া যায় না কিন্তু বিমানে উঠলে দেখা যায় সিট ফাঁকা। এসব এজেন্সিগুলোর কারসাজি। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, বিমানের অব্যবস্থাপনা বিএনপির আমলে তৈরি হয়েছিল। বিএনপির আমলে তারা বিমানকে লুটপাটের আখড়া বানিয়েছিল। হাওয়া ভবন তৈরি করে সর্বত্র দুর্নীতির লুটপাট চালানো হয়েছে। এখন বিমানে দুর্নীতি হয় না বলব না, সামান্য হয়। আমরা তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছি। তিনি বলেন, বিমানের টিকিট পাওয়া যায় না- এ অবস্থা ছিল। তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। টিকিটের ব্যবস্থা করেছি। এখন কেউ বলতে পারবে না, বিমানে সিট আছে টিকিট নেই। বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে বসতে না পারার যে অভিযোগ এসেছে সেটা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
বিদ্যমান আইনে অপরাধের জন্য ট্রাভেল এজেন্সিকে জরিমানার সুযোগ নেই। কর্তৃপক্ষ তাদের নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল করে। পাস হওয়া বিলে জরিমানার সুযোগ দেয়া হয়েছে। ট্রাভেল এজেন্সিগুলো যৌক্তিক কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের আবেদন করতে না পারলে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে জরিমানা দিয়ে আবেদন করতে পারবে। বর্তমান আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের আবেদন না করলে ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যেত।
পাস হওয়া বিলে আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে ছয় মাস জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য হবে উল্লেখ করা হয়েছে। অনুমোদন ছাড়া কোনো ট্রাভেল এজেন্সি ঠিকানা পাল্টাতে পারবে না- এমন বিধানও সেখানে যুক্ত করা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, আইনটি অনুমোদিত হলে নবায়ন আবেদন দাখিলে বিলম্ব ও অপরাধের জন্য লাইসেন্স বাতিলের পরিবর্তে বিধি নির্ধারিত জরিমানা আদায় করে সনদ নবায়ন এবং নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে মালিকানা হস্তান্তর দেশে-বিদেশে শাখা অফিস খোলার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে ট্রাভেল এজেন্সি থেকে কাক্সিক্ষত সেবা প্রাপ্তি সহজ হবে। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়। পরে সেটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাভেল এজেন্সি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ