করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে বিএনপি নেতারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, তারা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কার্যত জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছেন।
গতকাল সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ অভিযোগ করেন। তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এসময় উপস্থিত ছিলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আশা করেছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার সঠিকভাবে করোনা মোকাবিলা করতে পারবে না। কিন্তু আমরা যেভাবে মোকাবিলা করেছি, তা আজ সমগ্র বিশ্বে স্বীকৃত এবং প্রশংসিত। এরপর বিএনপি আশা করেছিল, সঠিক সময়ে টিকা আনা সম্ভবপর নয়। যখন সঠিক সময়ে টিকা চলে এলো, তখন তারা এই টিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের অন্যতম এইু যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব জনগণকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে বলেছেন, এই টিকার ওপর নাকি তাদের আস্থা নাই। অথচ এই টিকার ওপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ পুরো পৃথিবীই আস্থা স্থাপন করেছে। ভারতের কোটি কোটি মানুষকে এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশও এই টিকা কিনে নিয়ে তাদের জনগণকে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তিনি আরও বালখিল্য প্রলাপের মতো বলেছেন যে, ‘এই টিকা প্রথমে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হোক।’ মানুষ বুড়ো হলে অনেক সময় ‘ডিমেনসিয়া’ হয়, তখন তারা আবোল-তাবোল বলেন। আমার সন্দেহ হচ্ছে, তার এ রোগ হলো কিনা!
মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে ড. হাছান বলেন, সরকারের সাফল্যে আপনাদের মুখ ম্লান হয়েছে বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার যে নোংরা খেলায় নেমেছেন, এটি দেশ, জাতি ও জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। জনগণের সঙ্গে এমন প্রতারণা করবেন না।
এসময় বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর ‘বিএনপিকে নিধনের জন্যই আগে টিকা দিতে চেয়েছেন তথ্যমন্ত্রী’ বক্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, টিকা আসার খবরে বিএনপি বলেছিল, ‘এই টিকা নিয়ে লুটপাট হবে। অর্থাৎ শুধুমাত্র ক্ষমতাবানদের টিকা দেওয়া হবে।’ সেটার পরিপ্রেক্ষিতেই বলেছিলাম, যদি বিএনপি আগে টিকা চায়, তাহলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাবো, তাদেরকে আগে দেওয়ার জন্য। এখন রিজভী সাহেবের কথায় মনে হচ্ছে, তারা হয়তো আদৌ টিকা নিতে চান না। তাকে এবং তার মহাসচিবকে বলবো, জনগণকে বিভ্রান্ত করার নোংরা রাজনীতি বন্ধ করুন।
তথ্য মন্ত্রী জানান, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আনা অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন পৃথিবীতে সবচেয়ে কার্যকর টিকাগুলোর অন্যতম এবং আমাদের জলবায়ুতে অত্যন্ত কার্যকর। এটি ভারতে কোটি কোটি মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হচ্ছে। আগাম বুকিংয়ের মাধ্যমে নিয়ে এসে আমাদের দেশেও সরকার প্রয়োজনের নিরিখে অর্থাৎ ফ্রন্ট লাইন ফাইটারদের এই টিকা অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রথমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জনপ্রতিনিধিরা আগে টিকা পাবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমার অধিকার আগে নয়। যারা জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য কাজ করছেন, তাদের অধিকারটা আগে। তবে পথ দেখানোর জন্য ভলান্টিয়ার করতে আমার আপত্তি নাই।
এছাড়া তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস কার্যালয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মন্ত্রীকে বাসসের কর্মকান্ডের অগ্রগতি তুলে ধরেন। মন্ত্রী বাসসের সবাইকে আন্তরিকভাবে কর্মসম্পাদনের আহ্বান জানান।