পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুন্ড থেকে : সীতাকুন্ডে দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে একই দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন ভাটিয়ারী ও সলিমপুরের অর্ধলাখ মানুষ। তাদের একটাই কথা কিছুতেই তারা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অধীনে বাস করবেন না। তাই বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি ভাটিয়ারীকে চ্যাপ্টার এরিয়া ঘোষণার যে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করেছে তা বন্ধ করতে হবে। এই দাবি নিয়ে এলাকাবাসী কখনো রাজপথে মিছিল করেছে, কখনো প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আবার কখনো সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া বাতিলের আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু তাতেও কোন সুফল না মেলায় আদালতের দ্বারস্থও হয়েছেন তারা। পাশাপাশি চলছে লাগাতার কর্মসূচি। আর এই কর্মসূচিতে দলমত নির্বিশেষে যোগ দিচ্ছেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। ফলে বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র চরম কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দীর্ঘকাল আগে ভাটিয়ারীর পূর্ব অংশের কয়েক হাজার একর ভূমি অধিগ্রহণ করে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি গড়ে তুলেছিলো। সে থেকে ঐ এলাকা সেনাবাহিনীর সংরক্ষিত এলাকায় পরিণত হয়। ভাটিয়ারীর পূর্ব পার্শ্বে পাহাড়-লেক ও বিএমএ এলাকা ও পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর ও জাহাজ ভাঙা শিল্প হওয়ায় এমনিতেই এলাকায় জনবসতি গড়ে তোলার জায়গা কম। এরই মধ্যে ১৯৯৩ সালে ভাটিয়ারী ও সলিমপুরের ৩টি মৌজার ৫৯৮ একর ভূমি নতুন করে অধিগ্রহণ করে চ্যাপ্টার এরিয়া করার পরিকল্পনা করে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড। এই পরিকল্পনা জানাজানি হবার পর সে সময়ের ভাটিয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মুছা আহমেদ চৌধুরী চ্যাপ্টার এরিয়ার পরিকল্পনা প্রতিরোধে দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন শুরু করেন। সেই আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে তখন এই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর এলাকাবাসীও বেশ কিছুদিন নিশ্চিন্তে ছিলো। কিন্তু ২০০৭ সালে হঠাৎ আবার ঐ এলাকা অধিগ্রহণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদকে নোটিশ দেয়া হয়। এতে নতুন করে বিষয়টি আলোচনায় আসে এবং এলাকায় ফের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে সে সময় আবার আন্দোলন চলতে থাকে। ২০০৯ সালে চ্যাপ্টার এরিয়া প্রতিরোধ কমিটির তৎকালীন নেতৃবৃন্দ এই প্রক্রিয়া বন্ধে আইনগত লড়াই শুরু করে আদালতের দ্বারস্থ হলে আদালত এই কার্যক্রম স্থগিত করেন। ফলে আবার আন্দোলন থেমে যায়। কিন্তু আন্দোলন থামলে চ্যাপ্টার এরিয়া বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করেনি সংশ্লিষ্টরা। এরপরও বারবার মামলাটি আদালতে উঠতে থাকে। আর প্রতিবারই এলাকাবাসী এর বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। চ্যাপ্টার এরিয়া প্রতিরোধ কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোঃ কাজী শওকত ইকবাল ইনকিলাবকে বলেন, ভাটিয়ারীকে চ্যাপ্টার এরিয়া না করার দাবিতে আমরা দীর্ঘ প্রায় ২ যুগ ধরে আন্দোলন করে আসছি। ১৯৯৩ সালে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ভাটিয়ারী মৌজা, জঙ্গল ভাটিয়ারী ও জঙ্গল সোনাইছড়ি মৌজার ৫৯৮ একর ভূমি নতুন করে অধিগ্রহণ করে চ্যাপ্টার এরিয়া করার প্রক্রিয়া শুরু করলে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মুছা আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে এলাকাবাসী প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু করে। এরপর সে প্রক্রিয়া বন্ধ হলেও মাঝে মধ্যেই এই প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু হয় এবং উত্তেজনা বাড়তে থাকে। যেমনটা হয়েছে এবারও। অনেকদিন পর আবার এই মামলাটি হাইকোর্টের শুনানির জন্য তালিকায় ৫২ নম্বর সিরিয়ালে আছে। তিনি বলেন, এ কারণে এলাকাবাসী দলমত নির্বিশেষে আবারো মাঠে নেমেছে। গত শুক্রবার ভাটিয়ারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। এর আগেও আমরা এলাকাবাসীর পক্ষে চ্যাপ্টার এরিয়া প্রতিরোধ কমিটি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়ে প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধের আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু কেন যেন এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হচ্ছে না। তিনি বলেন, এই ৩টি মৌজার অর্ধলাখ মানুষের একটাই দাবি এই এলাকা যেন চ্যাপ্টার এরিয়া না করা হয়। এ জন্য তিনি এলাকাবাসীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। প্রতিরোধ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আ’লীগ নেতা আবদুস সালাম বলেন, ভাটিয়ারীবাসী ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অধীনে বাস করতে চায় না বলেই এত আন্দোলন সংগ্রাম। আমরা চাই জনমতকে গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যেন এই প্রক্রিয়া থেকে সরে আসে। তিনিও এ বিষয়টি গুরুত্বে সাথে গ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।