পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তারা বেশ কিছুদিন ধরেই বলে আসছেন, ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার মাস্টারমাইন্ড বা মূল পরিকল্পনাকারী হচ্ছেন এই বাংলাদেশী-বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান তামিম চৌধুরী- যিনি আজ নারায়ণগঞ্জে এক পুলিশি অভিযানে নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশের পুলিশ মহাপরিদর্শক শহিদুল হক বলেছেন, তামিম চৌধুরী নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদীনের ‘নব্য’ অংশের নেতা। তা ছাড়া কোনো কোনো গবেষকের মতে তিনিই ইসলামিক স্টেটের মুখপত্র দাবিক- এ সাক্ষাৎকার প্রদানকারী শেখ আবু ইব্রাহিম আল-হানিফ। তাকে নিয়ে এর মধ্যে বহু আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রে রিপোর্ট বের হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে যতটুকু জানা যায়, তামিম চৌধুরীর জন্ম ১৯৮৬ সালে। তার পিতা-মাতা বাংলাদেশের সিলেটের বিয়ানিবাজারের বাসিন্দা ছিলেন, ১৯৭১-এর পরে তারা কানাডা প্রবাসী হন।
কানাডার ওন্টারিওর উইন্ডসর শহরে বড় হন তামিম এবং সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই স্নাতক ডিগ্রি নেন। উইন্ডসরে যারা তামিমকে চিনতেন তারা তাকে ‘শান্ত স্বভাবের’ বলে বর্ণনা করেছেন।
এর পর তিনি ক্যালগারি শহরে চলে যান এবং সম্ভবত সেখানেই ইসলামী উগ্রপন্থার সাথে জড়িত একটি গোষ্ঠীর সাথে তার ঘনিষ্ঠতা হয়- বলেন ডালহাউসি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণাকেন্দ্রের ফেলো অধ্যাপক অমরনাথ অমরাসিংগম। মি. অমরাসিংগম সিরিয়ায় যাওয়া কানাডীয় জিহাদিদের সম্পর্কে গবেষণা করেছেন। তিনি বলেন, সম্ভবত ২০১২ সালে তামিম চৌধুরী সিরিয়ায় যান।
তার মতে, কানাডা থেকে অন্তত ১৮০ জন অন্য দেশে গিয়ে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন সিরিয়ায় নিহতও হয়েছেন। মি. অমরাসিংগম লিখেছেন, সরাসরি বলা না হলেও তথ্যভিত্তিক অনুমান করা চলে যে তামিম চৌধুরী এবং আবু ইব্রাহিম আল-হানিফ একই লোক।
পরের বছরই ২০১৩ সালের অক্টোবরে তামিম চৌধুরী বাংলাদেশে আসেন। জানা যায়, তার আগে তিনি কানাডায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ‘হয়রানির’ শিকার হন। বাংলাদেশে এসে তামিম চৌধুরী জামাতুল মুজাহিদীনের একটি অংশকে নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে জানা যায়। উল্লেখ্য, জেএমবিকেই বাংলাদেশের একমাত্র সহযোগী এবং ‘প্রকৃত জিহাদি সংগঠন’ বলে মনে করে ইসলামিক স্টেট- এ কথা একাধিকবার তাদের মুখপত্র ‘দাবিক’-এর নানা নিবন্ধে লেখা হয়েছে।
এ বছরই এপ্রিল মাসে ‘দাবিক’-এ এক সাক্ষাৎকারে আবু ইব্রাহিম আল-হানিফ বলেন, তারা বাংলাদেশকে ‘ক্লেদ’ থেকে ‘পরিশুদ্ধ’ করার কাজ করছেন। ‘দাবিক’-এর ওই সাক্ষাৎকারে আল-হানিফকে বেঙ্গল-এ ইসলামিক স্টেট বা ‘খিলাফাহ’র সৈন্যদের আমির বা নেতা বলে পরিচয় দেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, ইসলামিক স্টেট ‘বেঙ্গল’কে কৌশলগত অবস্থানের কারণে খেলাফত ও বৈশ্বিক জিহাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং তারা জিহাদের মাধ্যমে আফগানিস্তান থেকে বার্মা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে ‘মুক্ত’ করতে চায়। দু’বছর আগে থেকে এ সময় পর্যন্ত বাংলাদেশে একাধিক আক্রমণের ঘটনায় সংখ্যালঘু, লেখক, প্রকাশক, ব্লগার, অধ্যাপক, সমকামী অধিকারকর্মী এবং বিদেশী নাগরিককে হত্যা করা হয়।
এরপর গুলশানের হোলি আর্টিজানে হামলায় জঙ্গিদের হাতে নিহত হন ১৭ জন বিদেশীসহ মোট ২০ জন। সেখানে পুলিশের অভিযানে আক্রমণকারীরা সবাই নিহত হয়। বাংলাদেশের পুলিশের মহাপরিদর্শক শহিদুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে তামিম চৌধুরীকে গুলশান ও শোলাকিয়ায় ঈদের দিনের হামলার পেছনে মূলব্যক্তিদের অন্যতম বলে উল্লেখ করেন। তাকে এবং সেনাবাহিনীর বরখাস্তকৃত মেজর জিয়াউল হককে ধরিয়ে দেবার জন্য ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন তিনি। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।