পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গৃহকত্রীকে নির্মম নির্যাতন করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালানো গৃহকর্মী রেখা বারবার নিজের অবস্থান পাল্টাচ্ছে। ঘটনার পর মালিবাগেই অবস্থান করে সে। তারপর যায় ডেমরায়। পুলিশের একাধিক টিম তাকে গ্রেফতারে কাজ করছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। রাজধানীর মালিবাগে নির্মম নির্যাতনের শিকার হন বিলকিস বেগম (৭০)। গৃহকর্মী রেখা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে বাসা থেকে টাকা, সোনা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায় গত মঙ্গলবার। ঘটনাস্থল থেকে সিসি টিভির ফুটেজ সংগহ করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে গৃহকর্মী রেখা বিলকিস বেগমের ওপর বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। ওই গৃহকর্মীকে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন সবাই। একই সঙ্গে একজন বৃদ্ধাকে একা বাসায় গৃহকর্মীর কাছে রেখে যাওয়ায় পর তার সাথে কি ধরনের ব্যবহার করা হয় তাও ফুটে উঠেছে ভিডিওতে। শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ করেছে। ওই গৃহকর্মীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বিলকিস বেগমের স্বজনরা জানান, তিনি (বিলকিস বেগম) মালিবাগের একটি বাসায় থাকেন। তিন বছর ধরে কিডনিসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। বাসার কেউ না থাকায় গৃহকর্মী রেখা তার ওপর এমন নির্যাতন চালিয়েছেন।
সিসি টিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ জানায়, শুরুতে দেখা যায় বিলকিস বেগম খাটের ওপর শুয়ে আছেন। পাশে বসে সেবা করছেন রেখা নামের ওই গৃহকর্মী। শুরুতে বোঝার উপায় নাই। একটু পরেই রেখার প্রকৃত রূপ দেখা যায়।
বিলকিস বেগমকে বাথরুমে নিয়ে যায় রেখা। খুলে ফেলা হয় তার শরীরের সব কাপড়। শীতের সকালে ওই বৃদ্ধার গায়ে বেশি করে পানি ঢালে। পরে জোর করে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসেন বিলকিস বেগম। যে লাঠিতে ভর করে তিনি হাঁটাহাঁটি করেন সেই লাঠি দিয়ে রেখা তাকে মারধর করেন। বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে একপর্যায়ে হাতের কাছে যা পেয়েছে তা দিয়েই চালিয়েছে নির্যাতন।
ভিডিওতে আরো দেখা যায়, আলমারি চাবির জন্য তার বুকের ওপর চেপে বসে। একসময় বটি হাতেও তেড়ে আসেন। তার গলা থেকে সোনার চেইন খুলে নিজের গলায় পরে রেখা। হাত থেকে বালা খুলে নেন। তারপর চাবির সন্ধান পান। কিন্তু খুলতে না পেরে রক্তাক্ত বৃদ্ধাকে টেনে নিয়ে বাধ্য করেন আলমারি খুলে দিতে। আলমারি খুলে সোনা, নগদ টাকা নেয়। এরপর টিভি এবং অন্যান্য মালামাল একটি ব্যাগে করে নিয়ে বাসা থেকে চলে যান। পরে ওই বৃদ্ধার স্বজনরা এসে ঘটনাটি জানতে পেরে পুলিশ খবরদন। রেখার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাকে পাওয়া মাত্রই পুলিশে দেবেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মালিবাগে পিডিবির সাবেক প্রকৌশলী হাজী আব্দুল লতিফ ১৯৮৬ সালে তৈরি করেন বাড়ি। ৯০ সালে পুরো পরিবার নিয়ে খিলগাঁও থেকে চলে আসেন মালিবাগে। তিনি মারা যাবার আগেই বাড়ির ফাঁকা জায়গায় ছোট ছোট ঘর করে ভাড়া দিয়েছিলেন। সেখানেই একটি ঘরে গত বছর শুরুতে স্বামীসহ ভাড়া ওঠে রেখা। এরপর প্রায় ১ বছর বিলকিস বেগমের মেঝ মেয়ে মেহবুবা জাহান বুলবুলির বাসায় কাজ করে রেখা।গত ৭ জানুয়ারি ছেড়ে দেয় কাজ, চলে যায় অন্যখানে। ১৬ জানুয়ারি সার্বক্ষণিক থাকার কথা বলে ফিরে আসেন এ বাসায়। এর দুদিন পর বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে গৃহকত্রী বিলকিস বেগমকে নির্মম নির্যাতন করে নগদ টাকা, স্বর্ণসহ টিভি ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায় সে।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, ঘটনার পর ডেমরায় যায় রেখা। তারপর উত্তরাঞ্চলের ঠাকুরগায়ে নিজ গ্রামের দিকে রওনা দিয়েছে সে। স্থানীয়রা জানায়, রেখার বাবা আফা হোসেন ঋণের দায়ে ৪/৫ বছর আগে পরিবারসহ ঢাকায় পাড়ি জমায়। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তারা বলছেন, দেখামাত্রই পুলিশে দেয়া হবে এই ভয়ংকর গৃহকর্মীকে। বিলকিস বেগম এখনো চিকিৎসাধীন রাজধানীর একটি হাসপাতালে। মাথায় অস্ত্রোপচারের পর কেবিনে আনা হয়েছে তাকে। শঙ্কামুক্ত না হলেও আগের চেয়ে এখন অনেকটাই উন্নতি হয়েছে তার অবস্থা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।