পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিখোঁজের আট দিনেও সাদমান সাকিব রাফির সন্ধান মিলেনি। গত ১৩ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে রাফি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সি ব্লকের ৫/এ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান রাফি। সঙ্গে নিয়ে যান তার ল্যাবটপ ও মোবাইল ফোন সেট। বাসা থেকে বের হয়েই রাফি তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন। নিখোঁজ রাফি মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির (এপিইউ) ত্রিপল ই বিভাগের ছাত্র। গত ১৯ সেপ্টেম্বর লকডাউনের মধ্যে তিনি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেন। সেখান থেকে দ্বিতীয় সেমিস্টার শেষ করার পর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ত্রিপল ই বিভাগের প্রথম সেমিস্টারে ভর্তি হন। নিখোঁজের ঘটনায় তার মা মনোয়ারা হোসেন ভাটারা থানায় একটি জিডি করেছেন।
রাফি নিখোঁজের পর তার বিষয়টি নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তদন্ত করে। রাফির ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ফেসবুক যাচাই বাছাই করে। বাসায় রাফির ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসগুলো তল্লাশি করে গোয়েন্দা সংস্থা।
ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান বলেন, রাফিদের বাসার সামনের এক বাড়ির সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ তল্লাশি করে দেখা গেছে যে ১৩ জানুয়ারি সকাল ৯ টা ২২ মিনিটে তিনি হাতে ল্যাবটপ নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। তবে তিনি মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতে ত্রিপল ই বিভাগের ২ টি সেমিস্টার শেষ করে দেশে ফিরে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে একই সাবজেক্টে ভর্তি হন। এটা নিয়ে তার মধ্যে কোনো হতাশা কাজ করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া বিষয়টি সঙ্গে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা আছে কি না- সে বিষয়ে তার মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ফেসবুক আইডি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
বুধবার নিখোঁজ শিক্ষার্থী সাদমানের মা মনোয়ারা হোসেন বলেন, বুধবার বিকেল ৫টা ৫ মিনিটের দিকে একজন আমাকে ফোন করে জানায়, আমার ছেলেকে ফেনী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাদমান ফেনীতে একটি হাসপাতালে আছে। আপনারা তাড়াতাড়ি চলে আসেন। এ খবর পাওয়ার পরই সাদমানের পরিবার থেকে ফেনীর পথে রওনা দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়। তবে এর মধ্যেই সন্ধ্যা ৬টার দিকে আবারও ওই মোবাইল নম্বর থেকে ফোন আসে সাদমানের মা মনোয়ারা হোসেনের কাছে। তিনি বলেন, ৬টার দিকে আবারও ফোন আসে। ওই সময় আমাকে বলে, আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য জরুরিভিত্তিতে রক্ত লাগবে। এজন্য কিছু টাকা পাঠাতে হবে। আমরা আট হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দেই। কিন্তু টাকা পাঠানোর পর থেকে ওই নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
মা-মেয়ে নিখোঁজঃ গতকাল বুধবার নিখোঁজ আঁখির মামা আবদুল কাইয়ুম বলেন, ঘটনার দিন সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আঁখি তার মেয়েকে টিউশন টিচারের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন বলে বাসা থেকে বের হয়। এসময় আয়াতের একটি স্কুল ব্যাগ এবং আঁখির ভ্যানিটি ব্যাগ ছিল। তারা বের হওয়ার ছয় ঘণ্টা পরে আঁখির শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের ফোন দিয়ে রাত ১০টায় জানান আঁখি ও আয়াতকে তারা খুঁজে পাচ্ছেন না। পরে আঁখি ফোন নাম্বারে বার বার কল দিয়ে বন্ধ পান।
তিনি বলেন, আঁখির স্বামী জিল্লুুর রহমান (৩৩) সৌদি প্রবাসী। আঁখি তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে উত্তরখানে নামাপাড়া এলাকায় থাকতেন। গত ৬ মাস আগে ওমর ফারুক নামে এক যুবক আঁখির ফেসবুক আইডি হ্যাক করেন। তিনি আঁখির আইডি থেকে তার স্বামীর কাছে পাঠানো অনেক স্পর্শকাতর ছবি নিয়ে নেন। পরে এসব ছবি দেখিয়ে আঁখিকে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন। ওমর ফারুক কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের কৈইয়া গ্রামের বাসিন্দা বলে আমরা জানতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, আঁখি এসব বিষয়ে আমাকে জানায়। এরপর আমরা আইডি হ্যাকের বিষয়ে খিলক্ষেত থানায় একটি জিডি করেছিলাম। এরপর ওমর ফারুক নামে ওই ব্যক্তি আঁখিকে আর ব্ল্যাকমেইল করতেন না বলে আমাকে জানায়। কিন্তু জিডি দায়েরের মাসখানেক পর আবারও ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করেন। তার কাছে নানা অঙ্কের টাকা চায়। না দিলে এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। পরে আঁখি ভয় পেয়ে ওমর ফারুকের বিভিন্ন আবদার মেটাতে থাকেন। যেহেতু আঁখির স্বামী তার নামে করা একাউন্টে টাকা পাঠাতো তাই সে সহজেই সবাইকে না জানিয়ে ওমর ফারুকের ব্ল্যাকমেইলে এ বাধ্য হয়ে তাকে টাকা দিতেন বিকাশে।
খিলক্ষেত থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান বলেন, নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক। তিনি বাড়িতে বলে বের হয়েছেন। তার মানে তিনি কারো সঙ্গে কথা বলে ঘর থেকে বের হয়েছেন। কিন্তু ওমর ফারুক নামে একটি ছেলের কথা তার পরিবার বলছেন এবং তাকে আঁখি প্রতিমাসে টাকা দিতেন সেটাও পরিবার বলছে। তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষ বিস্তারিত বলা যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।