Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পানি বাড়ছে বিপজ্জনকভাবে

প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব রিপোর্ট : গঙ্গা নির্ভর সকল নদীর পানি বিপজ্জনক গতিতে বাড়ছে। পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। আজ-কালের মধ্যে পদ্মার পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করবে। গড়াই নদী বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিহারকে বন্যামুক্ত করতে ভারত ফারাক্কার সবগুলো গেট উন্মুক্ত করে দেয়ায় এই বিপজ্জনক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে।
যৌথ নদী কমিশন সূত্র জানায়, ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেইটের মধ্যে এখন ১০৪টি গেইট উন্মুক্ত করে দিয়েছে ভারত। শুধুমাত্র ৫টি গেইট বন্ধ রাখা হয়েছে ভাগীরথী নদীতে ৪০ হাজার কিউসেক পানি ধরে রাখার জন্য। বাকি গেইটগুলো উন্মুক্ত করে দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রতিদিন ১১ লাখ কিউসেক পানি ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এতে করে গঙ্গা নির্ভর পদ্মা ও এর শাখা নদীসমূহের পানিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, ঈশ্বরদী, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধির পাশাপাশি ভাঙছে তীরবর্তীএলাকা। পদ্মায় বিভিন্ন চর ডুবে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন।
গতকাল (শনিবার) দুপুর ৩টার দিকে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার মাত্র ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে দৌলতপুর উপজেলার চিলমারি ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা। একই সঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুয়ায়ী, পানি বৃদ্ধির কারণে পবা, বাঘা ও চারঘাট উপজেলায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এছাড়া পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের চর তারানগর, চরখিদিরপুর, দিয়াড় খিদিরপুর, চর তিতামারী, দিয়াড় শিবনগর, চরবৃন্দাবন, কেশবপুর, চর শ্রীরামপুর ও চর রামপুরের সিংহভাগ জমি এরই মধ্যে পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে মহানগরী ছাড়াও জেলার সীমান্ত ও চর এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তাদের অনেকের বিভিন্ন ফসল ও ঘরবাড়ি ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ বাসস্থান ত্যাগ করে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ভাঙনের বিষয়টি নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধের টি-গ্রেয়েনে পদ্মার পানি প্রবেশ মুখ বন্ধসহ বাঁধের উপর দিনে জনসাধারণের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে নিয়মিত পুলিশ পেট্রোলিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধের মনিটরিং অফিসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী সরদার মো. রুহুল আমিন জানান, পানি আরও ১/২ মিটার বাড়লেও শহররক্ষা বাঁধের কোনো ক্ষতি হবে না। বর্তমানে বাঁধ সুরক্ষিত আছে। ভাঙনের কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের উজানে ভারত যে কয়টি বাঁধ নির্মাণ করেছে তার মধ্যে সবরচেয়ে বড় হচ্ছে গঙ্গা নদীর উপর নির্মিত ফারাক্কা বাঁধ। এছাড়াও তিস্তায় গজলডোবা বাঁধ, মনু নদীতে নলকাথা বাঁধ, যশোরে কোদলা নদীর উপর বাঁধ, খোয়াই নদীর উপর চাকমা ঘাট বাঁধ, বাংলাবন্ধে মহানন্দা নদীর উপর বাঁধ, গোমতি নদীর উপর মহারানি বাঁধ, মহুরি নদীর উপর কলসী বাঁধ, উমিয়াম ও ধালা নদীর উপর মাওপু ড্যাম এবং সারী ও গোয়াইন নদীর উপর মাইন্ডু ড্যাম নির্মাণ করেছে। আর বরাক নদীর উপরেও ভারত নির্মাণ করছে শক্তিশালী স্থাপনা।
ভারত মূলত শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি আটকাতেই এসব বাঁধ নির্মাণ করে। বর্ষায় এসব বাঁধের অধিকাংশ গেইটই উন্মুক্ত রাখা হয়। ফলে এই বাঁধে কারণে শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ চরম পানি সঙ্কটের কবলে পড়ে। আর বর্ষায় এদেশের নদ-নদীগুলো উজান থেকে নেমে আসা পানির ধারণ করতে পারে না। ফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দেয়।
ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এক দফা এবং অনেক এলাকায় দু’দফা বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার এসব ক্ষয়ক্ষতি নিরসনে সরকার যখন হিমশিম খাচ্ছে; ঠিক সেই মুহূর্তে ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দিয়ে বাংলাদেশের দিকে পানি ঠেলে দেয়ায় বাংলাদেশকে আরও এক দফা বন্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। পাউবো’র তথ্য মতে, রাজশাহীতে ১৮ দশমিক ৫০ মিটার থেকে বিপদসীমা শুরু। গতকাল দুপুর ৩টায় পদ্মায় পানি প্রবাহের উচ্চতা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৩৯ সেন্টিমিটার। যা সকালে ছিল ১৮ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার। শুক্রবার বিকাল ছয়টায় পানিপ্রবাহের মাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। ১৮ ঘণ্টায় পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে ৮ সেন্টিমিটার। এরই মধ্যে রাজশাহীর পবার মাঝ চর, চার খানপুর, খিদিরপুর, বাঘার চর আতারপুর, চর লক্ষ্মীপুর, চর নারায়ণপুরসহ ১৫টি চর ডুবে গেছে বন্যায়। এসব এলাকায় বানভাসি মানুষদের মাঝে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।
রাজশাহীতে পদ্মার পানি বাঁধ ছুঁয়েছে
রাজশাহী ব্যুরো : পদ্মায় পানি বাড়ার সাথে সাথে নদী তীরবর্তী ও নগরীর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। গতকাল ১০ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, আজকালের মধ্যে বিপদসীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে আতঙ্কের কারণ নেই। পানির উচ্চতার চেয়ে শহররক্ষা বাঁধ দু’মিটার উঁচু। ইতোমধ্যে পানি নদী উপচে বাঁধের কোল ছুঁতে শুরু করেছে। পূর্বাঞ্চলের তালাইমারী হতে পঞ্চবটি পর্যন্ত বাঁধের নিচের ঘরবাড়িতে হাঁটুপানি। পশ্চিমাঞ্চলের শ্রীরামপুর জিয়ানগর বুলনপুর হারুপুর নবগঙ্গা এলাকাতে পানি উঠেছে। নদীসংলগ্ন সিমলা পার্ক লালনশাহপার্ক পদ্মাগার্ডেন কুমারপাড়া এলাকায় পানি। নদীর তীরের অনেক ফাস্টফুডের দোকানে পানি আসায় তা বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড নগরবাসীকে আশ্বস্ত করলেও মানুষের মনে শঙ্কা কাটছে না। কারণ নদীতে বালি জমতে জমতে এমন অবস্থায় এসে দাড়িয়েছে যে পদ্মার বুক থেকে নগরীর তলদেশ পাঁচ-সাত ফুট নিচে। যদি বাঁধ ভেঙে যায় তবে নগরী পাঁচ থেকে সাত ফুট পানির নিচে তলিয়ে যাবে। নদীর তীরজুড়ে পূর্ব পশ্চিমের আঠারো কিলোমিটার বাঁধের অবস্থা বড্ড নাজুক। অবৈধ দখলের কারণে ও বালি আনার জন্য কেটে রাস্তা করায় বাঁধ দুর্বল হয়েছে। অনেক স্থানে বাঁধের অস্তিত্বই নেই।
মানিকগঞ্জের নতুন করে নদীভাঙন
আরিচা সংবাদদাতা : মানিকগঞ্জে পদ্মা-যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টায় আরিচা পয়েন্টে পানির লেবেল ছিল ৯.৪০ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমা অতিক্রম করার পথে।
এদিকে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী তীরবর্তী এলাকায় আবার নতুন করে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। শিবালয় উপজেলার তেওতা, শিবালয় ও আরুয়া ইউনিয়নের নদী তীরবর্তি এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তেওতা ইউনিয়নের জাফরগঞ্জ, তেওতা, নিহালপুর, মালুচী নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। আরিচা-নিহালপুর সড়ক হুমকির মুখে। যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
শিবালয় ইউনিয়নের দক্ষিণ শিবালয়, অন্যায়পুর, ঝড়িয়ারবাগ, আজিরবাধা, দাশকন্দি, আরুয়া ইউনিয়নের পাটুরিয়া, নয়াকান্দি, মান্দ্রাখোলা, কাজিয়ারট্যাক এলাকার অনেকাংশেই আবার নতুন করে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীভাঙনের কারণে আরিচা পিসিপোল কারখানা এবং দক্ষিণ শিবালয় জামে মসজিদ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। পিসিপোল কারখানার পশ্চিম পাশ দিয়ে রাস্তার অর্ধেক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উক্ত এলাকার কয়েকটি গ্রাম ও একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। শত শত পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। হারিয়ে যাচ্ছে শত শত একর ফসলি জমি।
এছাড়া, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাঁচামারা, বাঘুটিয়া, জিয়নপুর, চরকাটারি, শিবালয় উপজেলার শিবালয়, তেওতা, আরুয়া, ঘিওরের পয়লা, বানিয়াজুরি, বালিয়াখোড়া, হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর, লেছরাগঞ্জ, বালা, আজীমনগর, রামকৃষ্ণপুর প্রভৃতি ইউনিয়নের পদ্মা-যমুনা ও শাখা নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ নতুন এলাকা বিলীন হচ্ছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে স্বাভাবিক ফেরি চলাচলে বিঘœ ঘটছে। ফেরিগুলো ¯্রােতের বিপরীতে চলতে গিয়ে দ্বিগুণ সময় ব্যায় করতে হচ্ছে। ফলে ঘাট এলাকায় যানবাহনের চাপ বাড়ছে।
পানি আরো বৃদ্ধি
কুষ্টিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার : ফারাক্কা বাঁধের দরজা খুলে দেওয়ার প্রভাবে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের দুটি ইউনিয়ন ও পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ সেতু এলাকায় পানি বিপদসীমা আরো কাছাকাছি চলে এসেছে। প্রতি তিন ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার গতি যেভাবে অব্যাহত রয়েছে তাতে করে যে কোন সময় বিপদসীমা অতিক্রিম করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। এদিকে হঠাৎ করে পদ্মায় পানি বাড়ায় দৌলতপুর উপজেলা চিলমারি ও রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চিলমারি ইউনিয়নের ১৮টি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নৈমূল হক জানান, যে গতিতে পানি বাড়ছে তাতে যে কোন সময় বিপদসীমা অতিক্রম করবে।’ আমাদের টিমের সদস্যরা সর্বক্ষণিক মনিটরিং করছে।
এদিকে হঠাৎ করে পদ্মায় পানি বাড়ায় জেলার দৌলতপুর উপজেলা চিলমারি ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রতিটি ঘরেই পানি ঢুকে গেছে। ঘরের মধ্যে মজুদ রাখা পাট ধান মরিচসহ সব কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। এসব এলাকায় তীব্র খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
দৌলতদিয়া উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ জানান, গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহতভাবে পদ্মা নদীর পানি বাড়ায় চিলমারির ১৮ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে এসব মানুষ। সাম্প্রতিকসময়ে বন্যায় এত ক্ষতি হয়নি।
দৌলতপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, চিলমারী ইউনিয়নের ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পানি কমে গেলে পুনরায় পাঠদান দেওয়া হবে।
শিবগঞ্জে বন্যায় ৫ ইউনিয়ন প্লাবিত
শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : ভারত ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। শুরু হয়েছে ভাঙন। উজান থেকে নেমে আসা পানি পদ্মা ও পাগলা নদীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে ৭০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব ইউনিয়নের অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু রাস্তায় কিংবা শহরে কোনো স্বজনের বাড়িতে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত পদ্মা নদীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ সেন্টিমিটার বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি আবদুস সাত্তার জানান। গত কয়েক দিন থেকে পদ্মা ও পাগলা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে পাঁকা, দুর্লভপুর, উজিরপুর, ছত্রাজিতপুর, ঘোড়াপাখিয়া ও মনাকষা ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ব্যাপারে পাঁকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, গত কয়েক দিনের বন্যায় ও এ ইউনিয়নের ৩, ৭, ৮ ও ৯ নম্বরের ওয়ার্ডের ৭০ ভাগ বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়া প্রায় দুই হাজার বিঘা জমির ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। নদী ভাঙনের ফলে প্রায় একহাজার বাড়িঘর সরিয়ে নিয়েছে লোকজন। অনেক পরিবারই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। অপরদিকে উজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন জানান, গত কয়েক দিনের বন্যার পানি বাড়তে থাকায় এ ইউনিয়নের পাঁচশ বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। অন্যদিকে দুর্লভপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রাজিব রাজু বন্যা কবলিত এলাকা থেকে জানান ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ৮শ’ বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে এবং প্রায় ৭শ’ বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

Show all comments
  • Md Mothalib Hossain Hridoy ১৭ আগস্ট, ২০১৭, ২:১১ পিএম says : 0
    Hmmmm
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পানি বাড়ছে বিপজ্জনকভাবে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ