পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘শহিদ হও, কিন্তু অসম্মানের জীবন মেনে নিও না’
ইনকিলাব ডেস্ক : বর্ণনাতীত সৌন্দর্যের ভূস্বর্গ কাশ্মীরে এখনকার পরিস্থিতি এক কথায় অবর্ণনীয়। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় সে যন্ত্রণাকে স্পর্শ করা যায়, ভাষায় বোধহয় প্রকাশ করা যায় না। কাশ্মীর উপত্যকায় এই পর্বের টানা অস্থিরতার ৫০তম দিনে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) কলকাতায় এসে কাশ্মীর টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক অনুরাধা ভাসিন জামওয়ালের এমনই প্রতিক্রিয়া সাধারণের দিনযাপনের কী অবস্থাÑএই প্রশ্নের জবাবে। ‘স্কুল-কলেজ বন্ধ। কিশোর-তরুণেরা রাস্তাকেই ঘরবাড়ি করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাথর, টিনের ড্রাম দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় তৈরি হয়েছে ব্যারিকেড। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্রতি বার্তা স্পষ্টÑআমাদের এলাকায় তোমাদের চাই না, বলছিলেন অনুরাধা। তিনি জানাচ্ছেন, পথের বিক্ষোভে বাচ্চাদের সঙ্গেই তাদের মায়েরাও শামিল, ‘ভাবুন, কী অবস্থায় পৌঁছলে মায়েরা বাচ্চাদের বলতে পারেন, ‘শহিদ হও, কিন্তু অসম্মানের জীবন মেনে নিও না।’
তার উপলব্ধি, ‘গত কয়েক দশকে অনেক বিক্ষোভ-আন্দোলন দেখেছে কাশ্মীর। কিন্তু এ দফার মতো নিরস্ত্র অবস্থায় হাজার হাজার তরুণের একটানা প্রতিবাদ-প্রতিরোধ, হরতালের ছবি কাশ্মীরের ইতিহাসেও বিরল। ‘কীভাবে এটা সম্ভব হচ্ছে?’ অনুরাধার বক্তব্য, ‘সরকারি তরফে এই আন্দোলনকে যতই জঙ্গি কার্যকলাপ হিসাবে দেখানোর চেষ্টা হোক, পেছনে সীমান্তপারের মদতের কথা বলা হোক, বাকি ভারতকে উপলব্ধি করতে হবে, ঘরে সমস্যা না থাকলে বাইরের মদতে এমন হার-না-মানা মনোভাব তৈরি হতে পারে না। কাশ্মীরের তরুণ প্রজন্মের সামনে আলো নেই। আশা নেই। আছে শুধু অত্যাচারের হাড়হিম অভিজ্ঞতা। আতঙ্কের দিনযাপনকে অস্বীকার করার জেদ চেপে গিয়েছে অল্পবয়সীদের মধ্যে। ঠিক বুরহান ওয়ানির মতোই। ভয়কে জয় করেছে ওরা। বারবার মরার চেয়ে, অপমানিত-অত্যাচারিত হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে শহিদ হতেও প্রস্তুত। এই বাস্তবটা বুঝতে হবে। তার বদলে নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়ে, নিত্যনতুন অস্ত্রে তাদের সজ্জিত করে সরকার উপত্যকার তরুণদের ঠেলে দিচ্ছে আরও বেপরোয়া পথে।’
এই প্রসঙ্গেই এক যুগ পরে উপত্যাকায় ফের বিএসএফ পাঠানোর সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানিয়েছেন অনুরাধা, ‘কাশ্মীরের মানুষের কাছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘৃণিত বিএসএফ’কে উপত্যকায় পাঠিয়ে আরও দূরত্বই তৈরি করল সরকার। অতীতে এই বাহিনীটির অত্যাচার, তাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সরকারকে বিএসএফ প্রত্যাহার করতে হয়েছিল। তাদের ফেরত আনা শান্তির বদলে অশান্তিকে জিইয়ে রাখা, অত্যাচার বাড়ানোরই বার্তা।’ সাম্প্রতিক অস্থিরতাকে কাশ্মীরে ধারাবাহিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে গণজাগরণ হিসাবেই দেখছেন অনুরাধা। শুক্রবার মহাবোধি সোসাইটি হলে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর আয়োজিত কপিল ভট্টাচার্য স্মারক বক্তৃতায় কাশ্মীর টাইমসের নির্বাহী সম্পাদকের বক্তব্যের শিরোনাম ছিলÑ‘রক্তাক্ত কাশ্মীর : রাজনৈতিক সমাধান এবং মানুষের অধিকার’।
বক্তৃতার আগে আলাপচারিতায় অনুরাধা বলেন, ‘শান্তি প্রক্রিয়ায় আস্থা রেখে বার বার প্রতারিত হয়েছেন কাশ্মীরের মানুষ। সরকারি তরফেই সেই প্রক্রিয়া বানচাল করে দেওয়া হয়েছে। উল্টে আরও নির্মম দলন আর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস নেমে এসেছে। ফলে মানুষ আস্থা হারিয়েছেন সরকারে, রংবেরঙের রাজনৈতিক দলে। এখনকার যে আন্দোলন, তাতে নেতা নেই। সবটাই স্বতঃস্ফূর্ত।’ এই স্বতঃস্ফূর্ত গণবিক্ষোভকে অল্প কিছু বেপথু তরুণের উন্মত্ততা বলে দেখানো বাস্তবকে অস্বীকার করা বলেই মনে করেন অনুরাধা। তাঁর কথায়, ‘হাজার হাজার ছেলে রোজ রাস্তায় ব্যারিকেড করছে। তাতে এলিট স্কুলের পড়–য়ারাও আছে। নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি ঘৃণা উগরে দিচ্ছে তারা। এদের হাতে কিন্তু কোনও অস্ত্র নেই। গোটা কাশ্মীরেই সশস্ত্র জঙ্গি সংখ্যায় নগণ্য। গণবিক্ষোভে কোনো কোনো জায়গায় পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটছে ঠিকই। কিন্তু উল্টো দিকে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর সন্ত্রাস অতীতের সব নজিরকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। তাদের হাতে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। কোনও রকম প্ররোচনা ছাড়া নিয়মিতই তারা বিক্ষোভকারীদের বুক-মুখ লক্ষ করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ছে, ছররা গুলিতে ঝাঁঝরা করছে। ৩০০-৪০০ লোক প্রতি দিন আহত হচ্ছে। ভুয়ো সংঘর্ষে হত্যার রক্তে ভেসে যাচ্ছে পথ। বাহিনীর সন্ত্রাসে লাগাম পরানোর কোনও অভিপ্রায়ই দেখা যাচ্ছে না রাজ্য বা দিল্লির সরকারের তরফে। সামরিকীকরণ ছাড়া সরকার যেন কিছুই বুঝছে না।’ (টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত রাজেন্দ্রনাথ বাগের নিবন্ধ থেকে সংক্ষেপিত)
কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে যাচ্ছে পাকিস্তান
ইনকিলাব ডেস্ক
জম্মু ও কাশ্মীরে ‘ভারতের বর্বরতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন’-এর বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে সরব হওয়ার জন্য পাকিস্তানের সংসদের ২২ জন সদস্যকে দায়িত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। গতকাল এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কাশ্মীরের জন্য লড়াই করার লক্ষ্যে এই ২২ জনকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি। এই বিশেষ দলের সঙ্গে কাশ্মীরের মানুষের শক্তি, প্রার্থনা, আইনসভার অনুমোদন এবং সরকারের সমর্থন আছে।’
দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক মহলে কাশ্মীর নিয়ে সরব হতে চাইছে পাকিস্তান। উপত্যকার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও ক্রমাগত ভারতের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে চলেছে পাকিস্তান। তারই ফলশ্রুতিতে এবার শরিফের নয়া উদ্যোগ।
এর আগে গতকাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে কাশ্মীরে অশান্তির জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেন মাহবুবা মুফতি। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘পাকিস্তান খোলাখুলিভাবে কাশ্মীরে অশান্তিতে উস্কানি এবং মদদ দিচ্ছে।
কাশ্মীরের পরিস্থিতির উন্নতির জন্য হুরিয়াত কনফারেন্সসহ সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পক্ষে মত প্রকাশ করলেও টানা ৫০ দিন ধরে চলা কার্ফু তুলে নেয়ার পক্ষে নন মাহবুবা। তার দাবি, স্থানীয় মানুষ ও শিশুদের জীবন রক্ষা করার জন্যই কার্ফ্যু জারি করে রাখা হয়েছে। সূত্র : এবিপি আনন্দ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।