Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুমেক ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জখম ৩২

প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

খুলনা ব্যুরো : খুলনা মেডিকেল কলেজে (খুমেক) ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ৩২জন রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাস ও হাসপাতালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ডাঃ নমিতা হালদার খুমেক হাসপাতালের নবনির্মিত আইসিইউ ভবন পরিদর্শন করছিলেন। পুলিশ তাকে নিরাপদে লুকিয়ে রাখলেও তার শাড়ীতে জখমের রক্ত লেগেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর জখম ফয়সাল তাজরি, শাহারিয়ার আজিজ ও শেসাদরী নামের তিন শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। বাকীদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সর্বশেষ বিকেল ৫টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঘটনাস্থলে র‌্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।
শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টার দিকে খুমেক ক্যান্টিনে বসেছিলেন ছাত্রলীগ নেতা আকাশ ও অপর গ্রুপের নাঈমসহ কয়েকজন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আকাশ ও নাঈমের মধ্যে বাক-বিত-া; পরে হাতাহাতি হয়। পরে দু’জন দু’দিকে চলেও যায়। খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দু’গ্রুপের ওই দুইজন ছাত্রনেতা মধ্যকার বিরোধ দীর্ঘদিনের। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে নাঈম গ্রুপের নেতৃত্বে ৭০ থেকে ৮০টি মটরসাইকেল যোগে ছাত্র ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা রামদা, চাপাতীসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে কলেজে অপর গ্রুপের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে জয়, রোজ, ইমরান, নাঈম, ফয়সাল তাজরি, ফাহমিদ, নিরঞ্জয়, সাফায়েত, নোমান, শাহারিয়ার আজিজ, শেসাদরী, রাজি বিল্লাহ, সৌরভ, সানী দাশ, ইফতেখার, খালিদ, আরাফাত হোসেন, মেহেদী, কামরুজ্জামান, আকাশ, ইমতিয়াজ, আরাফাত, তানভীর, আসিফ খালিদ, আশানুর, অমিত দাশ, বিপুল দাশ, রাশেদ সরকার, ইনজাজাম হক, স্বমিত্র বৈরাগী ও বাদশা ফাহাদ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখম হন। ঘটনার সময়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। দিগি¦দিক ছুটাছুটি করেন রোগী ও রোগীর দর্শনার্থীরা। এসময়েই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ডাঃ নমিতা হালদার খুমেক হাসপাতালের নবনির্মিত আইসিইউ ভবন পরিদর্শন করছিলেন। ধারালো অস্ত্র হাতে ছুটে আসা সন্ত্রাসীদের দেখে বডিগার্ড পুলিশ সদস্যরা ভবনের এক কোণায় তাকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও কোপাকুপির এক পর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শিক্ষার্থীদের সূত্রটি জানিয়েছে, আকাশ মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেলের এবং নাঈম সভাপতি শেখ শাহজালাল হোসেন সুজনের অনুসারী। এর আগেও, কয়েক দফায় ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, হামলা-মামলার ঘটনাও ঘটেছিল। সর্বশেষ ডাঃ তারিনের উপর হামলার ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল খুলনায়।
পরিস্থিতি শান্ত হলে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল, র‌্যাব-৬ ও কেএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের বলেন, যারাই ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের অবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য পুলিশে বলেছি। হাসপাতালের মধ্যে এমন ঘটনা সহনীয় নয়; দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।
তবে খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বললেন, কলেজে ছাত্রলীগের কোন গ্রুপিং নেই। বহিরাগতরাই হামলা চালিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ অস্থিতিশীল সৃষ্টির একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এটা।
খুমেকের অধ্যক্ষ ডাঃ আব্দুল্যাহ আল মাহবুব বলেন, গুরুতর জখম তিনজন ছাত্রকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত। ঘটনাটির তদন্তে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তুতি চলছে। পরে বিস্তারিত সেই তদন্ত কমিটিই জানাবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুমেক ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জখম ৩২
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ