পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৪ প্যাডেল জাহাজের ৩টিই বন্ধ
নাছিম-উল আলম : আসন্ন ঈদুল আজহার আগে পরে রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ১০ লক্ষাধিক যাত্রী পরিবহনে বেসরকারি নৌযান পরিচালনা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করলেও রাষ্ট্রীয় নৌ-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান-বিআইডব্লিউটিসি এখনো অনেকটা অগোছালো অবস্থায় রয়েছে। তবে সংস্থাটি দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথে যানবাহন পারপারে সবগুলো ফেরি চলাচল নিশ্চিত করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রী পরিবহনে সংস্থাটির ৪টি প্যাডেল জাহাজের ৩টি গতকাল পর্যন্ত বন্ধ ছিল।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বেসরকারি নৌযান পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাকা থেকে বরিশাল, পাটুযাখালী, ভোলা, ঝালকাঠী ও পিরোজপুরের বিভিন্ন রুটে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে পারিমিটধারী সবগুলো নৌযানের চলাচল শুরু করতে যাচ্ছে। তবে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণাঞ্চলমুখি মূল জনশ্রোত শুরু হলেও ৯ তারিখ থেকে ঘরমুখি মানুষের ভিড় সহনীয় পর্যায় অতিক্রম করবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। বেসরকারি নৌযান মালিকগণ ৯ সেপ্টেম্বর থেকেই প্রতিদিন ডবল ট্রিপে যাত্রী পরিবহন শুরু করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানী থেকে প্রতিদিন গড়ে লক্ষাধিক যাত্রী বেসরকারি নৌযানগুলোতে দক্ষিণাঞ্চলে পৌঁছবে। তবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের আরো বিপুলসংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ ঈদের পরদিন পর্যন্তই চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর হয়ে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে প্রিয়জনের কাছে পৌঁছবে। সে লক্ষে বেসরকারি নৌ-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলো সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন একাধিক নৌযান মালিক।
এদিকে রাষ্ট্রীয় নৌ-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান-বিআইডব্লিউটিসির ৪টি প্যাডেল জাহাজের ৩টি গতকাল পর্যন্ত বন্ধ ছিল। এর মধ্যে পিএস মাহসুদ জাহাজটি গত ঈদুল ফিতরের আগে ৪ জুলাই বরিশালের অদূরে বিপরীত দিক থেকে আসা বেসরকারি এমভি সুরভীÑ৭ লঞ্চের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বরিশাল বন্দরে পড়ে আছে গত প্রায় দু’মাস। ঐ দুর্ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিসি, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর ও বিআইডব্লিউটিএ একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করে। কোন কোন কমিটি তার মেয়াদ শেষ হবার পরে তদন্ত শুরু করে। তবে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় দুর্ঘটনার ২০ দিন পরে ২৪ জুলাই একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিসি ও আইডিব্লিউটিএ’কে নিয়ে অরেকটি তদন্ত কমিট গঠন করে। এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হলেও সে কমিটি দুর্ঘটনাস্থল ও দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানটি পরিদর্শনসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে কমিটি গঠনের ১৫ দিন পরে। উচ্চপর্যায়ের ঐ কমিটি নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দাখিল করেনি।
তবে অভিযোগের আঙ্গুল যে নৌযানটির দিকে, দুর্ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই সেই এমভি সুরভীÑ৭’র সার্ভে সনদসহ তার সময়সূচিও পুনর্বহাল করা হয় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে। কিন্তু দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানটি মেরামতে কোনো উদ্যোগ নেই। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বক্তব্য, ‘নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শেষ করতে পারেনি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পিএস মাহসুদের মেরামতে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছে না মন্ত্রণালয়। ফলে দু’মাস আগে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি এ নৌযানটির মেরামতে আরো কতদিন অপেক্ষা করতে হবে তা জানেন না কেউ।
অপরদিকে, সংস্থার নির্ভরযোগ্য প্যাডেল জাহাজ ‘পিএস অষ্ট্রিচ’ গত সপ্তাহখানেক ধরে বন্ধ আছে কারিগরি ত্রুটির কারণে। নৌযানটির সার্ভে সনদসহ এর ডকিং করার মেয়াদ আরো একবছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। জোড়াতালি দিয়ে অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই নৌযানটি পরিচালনা করছে সরকারি নৌ-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানটি। তবে এরই মধ্যে অষ্ট্রিচ-এর প্রধান ইঞ্জিন কর্মকর্তাকেও বদলী করা হয়েছে। এরপর থেকে অষ্ট্রিচ এখনো ঢাকা ঘাটে। সংস্থার অপর প্যাডেল নৌযান পিএস টার্ন দীর্ঘ কালক্ষেপণের পরে গত জুনের প্রথমভাগে ভারী মেরামতে ডকইয়ার্ডে নেয়ার পরে তা এখনো যাত্রী পরিবহনে ফেরেনি। আগামী ৩০ আগস্ট টার্ন সংস্থার ডকইয়ার্ড থেকে ঢাকা ঘাটে পৌঁছার কথা জানিয়েছে সংস্থাটির কারিগরি পরিদপ্তর।
এ অবস্থাতেই ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বিআইডব্লিউটিসি পিএস অষ্ট্রিচ, পিএস টার্ন ও পিএস লেপচার সাহায্যে ঢাকা থেকে চাঁদপুর-বরিশালÑঝালকাঠী-পিরোজপুর হয়ে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ পর্যন্ত নিয়মিত রকেট সার্ভিস পরিচালনা ছাড়াও এমভি বাঙালি ও এমভি মধুমতি নামের নতুন দুটি নৌযানের সাহায্যে ঢাকা-বরিশাল রুটে বিশেষ যাত্রীবাহী সার্ভিস পরিচালনার আশা করছে। তবে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিআইডব্লিউটিসি তার বিশেষ সার্ভিস শুরু করলেও ঈদের পরে কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের জন্য কি ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে তা এখনো পরিষ্কার করে বলতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। দু’একদিনের মধ্যেই বিষয়টি চূড়ান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার জেনারেল মানেজার (বাণিজ্য)।
তবে বিগত বছরগুলোতে ঈদের আগে রাষ্ট্রীয় এ নৌ-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানটি ঘরমুখী মানুষের জন্য পর্যপ্ত নৌযানের ব্যবস্থা করলেও ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের ফেরার মূল ভিড়ের সময় হাত গুটিয়ে ফেলে। বিষয়টি নিয়ে যাত্রী সাধারণের কোনো আর্জি কানে তোলেননি সরকারি এ নৌ-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলগণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।