পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সম্মেলন কক্ষে ইলেকট্রনিক ডাটা ট্রাকিংসহ জনসংখ্যাভিত্তিক জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রীনিং কর্মসূচি প্রকল্পের উদ্যোগে জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ সপ্তাহ (১৯-২৫ জানুয়ারি) উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর। এছাড়াও এদিন জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রীনিং কর্মসূচি উন্নয়ন বিষয়ক একটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়–য়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. এএইচএম এনায়েত হোসাইন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব সিদ্দিকা আক্তার, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম। বক্তব্য রাখেন, প্রো-ভিসি প্রফেসর ডা. মো. জাহিদ হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডীন প্রফেসর ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান, নবজাতক বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা প্রমুখ। সভার উদ্দেশ্য ও বাংলাদেশে জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রীনিং এবং প্রতিরোধ কার্যক্রম বিষয়ে তথ্যসমৃদ্ধ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর আশরাফুন্নেসা। সভায় ভার্চুয়ালি ও সরাসরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর, বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ কর্মকর্তা, চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা স্তন ক্যান্সার ও জরায়ু-মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে জনসেচেতনা বৃদ্ধি ও সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে সমন্বিত কার্যক্রমের উপর অধিক গুরুত্বারোপ করেন। তারা স্তন ক্যান্সার ও জরায়ু-মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে আগেভাগেই রোগ দু’টি চিহ্নিত করা, এ বিষয়ে সেবার কার্যক্রম কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত করা, সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রচার-প্রচারণামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি করা, স্ক্রীনিং কার্যক্রম আরো বিস্তৃত করা, প্রতিরোধমূলক ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমের উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন।
মো. আলী নূর বলেন, বাংলাদেশে জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সারের মৃত্যুর হার শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে প্রচÐ মানসিক শক্তি নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ বড় ধরণের চ্যালেঞ্জিং বিষয় হলেও অসাধ্য নয়। সমন্বিতভাবে এই রোগ দু’টি মোকাবেলা করতে হবে। কিশোরীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হবে।
ডা. কনক কান্তি বড়–য়া বলেন, জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার আগেভাগে নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক রোগীই দীর্ঘায়ু লাভ ও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারেন। এই রোগ দু’টি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সার্জনদেরসহ সকলকে অর্ন্তভুক্ত করে সমন্বিতভাবে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা নিশ্চিত করা গেলে মাতৃ মৃত্যু হার হ্রাস পাবে।
এদিকে, ইলেকট্রনিক ডাটা ট্রাকিংসহ জনসংখ্যাভিত্তিক জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রীনিং কর্মসূচি প্রকল্পের সূত্রে জানা যায়, জরায়ু-মুখ ক্যান্সার বিশ্ব জুড়ে নারীদের ক্যান্সারের মধ্যে চতুর্থতম এবং ক্যান্সারজনিত কারণে মৃত্যুর চতুর্থতম শীর্ষ কারণ। বাংলাদেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত মহিলাদের মধ্যে জরায়ু-মুখের ক্যান্সারের স্থান দ্বিতীয়। বাংলাদেশে ২০১৮ সালে নতুনভাবে জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ৮ হাজার ৬৮ জন এবং একই বছরে ৫ হাজার ২ শত ১৪ জন নারী মারা যান। এদেশে নারীদের যত ক্যান্সার হয় তার ১২ শতাংশ হলো জরায়ু-মুখ ক্যান্সার। ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় ক্যান্সার। বাংলাদেশে প্রতি বছর নতুনভাবে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় ১২ হাজার ৭শ’ ৬৪ জন এবং যাদের মধ্যে মারা যায় ৬ হাজার ৮শ’ ৪৬ জন। এদেশে মহিলাদের যত ক্যান্সার হয় তারমধ্যে ১৯ শতাংশ হলো স্তন ক্যান্সার। জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর বেঁচে থাকা অনেকাংশেই নির্ভর করে সনাক্তের সময় ক্যান্সারটি কোন স্টেজে আছে তার উপর। প্রাইমারি স্টেজে ক্যান্সারের চিকিৎসা খুব কার্যকর, এতে চিকিৎসার ফলাফল অনেক ভালো হয় এবং এটা কম ব্যয়বহুল।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে জরায়ু-মুখ ক্যান্সার নির্ণয়ে মোট ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৩শ’ ৭৬ জন মহিলার ভায়া টেস্ট করা হয় এবং যাদের মধ্যে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫শ’ ৬৩ জন পজেটিভ পাওয়া যায় এবং গত ৩ বছরে স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ে ১০ লাখ ৬১ হাজার ৬ শত ১০ জন মহিলার সিবিই টেস্ট করা হয় এবং যাদের মধ্যে ২৬ হাজার ৫৭ জন মহিলার পজেটিভ পাওয়া যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।