পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : পরপর দুটো ঘটনা, আর তাতেই বিতর্কের শিরোনামে ওড়িষ্যা। কালাহান্ডিতে লাশবাহী গাড়ি না মেলায় স্ত্রীর দেহ কাপড়ে মুড়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার বয়ে নিয়ে গিয়েছেন দানা মানঝি। আদিবাসী মানঝির এই কাহিনি প্রকাশ্যে আসার পরই অস্বস্তিতে পড়েছে নবীন পট্টনায়কের
সরকার। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে বুধবার সকালের আরও একটি ঘটনা। বৃদ্ধার দেহ স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি মেলেনি, তাই বৃদ্ধার দেহের ওপর দাঁড়িয়ে হাড়গোড় ভেঙে দেহ কাপড়ে মুড়ে, বাঁশে ঝুলিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি বালেশ্বরের।
সালামানি বেহেরা নামে বছর আশির এক বৃদ্ধা বুধবার ভোরে বালেশ্বরের সোরো স্টেশনে মালগাড়ির ধাক্কায় মারা যান। তার দেহ সোরো কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। জিআরপিকে এ ব্যাপারে সঙ্গে সঙ্গে জানানো হলেও প্রায় ১২ ঘণ্টা পরে সন্ধ্যার সময় হেলথ সেন্টারে এসে পৌঁছায় তারা। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ বালেশ্বরের জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন ছিল, কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স মেলেনি। সোরোর জিআরপি অ্যাসিসট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর প্রতাপ রুদ্র মিশ্র এক অটোচালককে বলেন, দেহটি স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দিতে, সেখান থেকে ট্রেনে বালেশ্বর পাঠানো হবে। মিশ্রের দাবি, অটোচালক এর জন্য ৩ হাজার ৫০০ টাকা চেয়েছিলেন। অথচ এই কাজের জন্য ১ হাজার টাকার বেশি খরচ করা সম্ভব ছিল না। ফলে বাধ্য হয়েই হেলথ সেন্টারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের দেহটি স্টেশন অবধি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেন তিনি।
কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। দেহ ক্রমেই শক্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে দেহটা বাঁধতে পারছিল না কর্মীরা। সহজ উপায় হিসেবে বৃদ্ধার কোমরের ওপর উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে তারা। মটামট ভাঙতে থাকে হাড়। তার পর পুরোনো একটা বিছানার চাদরে দেহটাকে পুঁটলি বেঁধে বাঁশে বেঁধে স্টেশনের দিকে রওনা দেয় তারা। দুই কিলোমিটার পথ উজিয়ে স্টেশনে যাওয়ার পর এভাবেই ট্রেনে করে দেহটি বালেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনা শুনে হতবাক বেহারার ছেলে রবীন্দ্র বারিক। বলেন, ‘ওরা তো আর একটু মানবিক হতে পারত। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করব, কিন্তু তাতে কে ব্যবস্থা নেবে!’
তবে পরপর দুটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক তড়িঘড়ি ‘মহাপ্রয়াণ’ নামে একটি প্রকল্প চালু করে দিয়েছেন। এতে ৩০টি জেলা হাসপাতাল ও তিনটি মেডিক্যাল কলেজে বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স ও শববাহী গাড়ি মিলবে। আদিবাসী দানা মানঝির কাঁধে করে দেহ বয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে পট্টনায়েকের বক্তব্য, ‘খুবই দুঃখজনক। আমি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সক্রিয় হয়েছে মানবাধিকার কমিশনও। ওড়িষ্যা মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ইন্সপেক্টর জেনারেল, জিআরপি ও বালাসোরের জেলা শাসককে নোটিস পাঠিয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে চার সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কালাহান্ডির ঘটনায় দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দানা মানঝির ঘটনায় কালাহান্ডি জেলা প্রশাসনও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
সূত্র : টাইমস অব ইনডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।