Inqilab Logo

শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

তানোরে গভীর নলকূপ সমিতিতেই স্বস্তি

প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

তানোর উপজেলা সংবাদদাতা ঃ রাজশাহীর তানোরে স্থানীয় সাংসদ (এমপি) ও কৃষিবিদ ওমর ফারুক চৌধূরীর নির্দেশে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ সমিতির মাধ্যমে পরিচালনা করার পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। তানোরের ২টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১৫টি গভীর নলকূপ পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে পরিচালিত গভীর নলকূপে সেচ খরচ প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। ফলে সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকূপ পরিচালনা কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ও কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। কৃষকদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। সাধারণ কৃষকরা সাংসদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে চির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। অথচ এতোদিন সাধারণ কৃষকদের কাছে অপারেটরগণ ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। এলাকার কৃষকরা প্রতিটি গভীর নলকূপ সমিতির মাধ্যমে পরিচালনা করার দাবি করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তানোরে বিএমডিএ’র ৫৬০টি গভীর নলকূপ রয়েছে। প্রতিটি গভীর নলকূপের স্কীমে গড়ে প্রায় দুশ’ বিঘা জমিতে (চাষাবাদ) সেচ দেয়া হয়। এসব গভীর নলকূপ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে প্রতি বছর অপারেটর নিয়োগ করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক পরিচয়ের একশ্রেণির হোমড়া-চোমড়া প্রভাব বিস্তার করে অপারেটর নিয়োগের পর সেচ নিয়ে শুরু করে বাণিজ্য। তারা কৃষকদের জিম্মি করে সেচের জন্য তিন থেকে চারগুণ টাকা আদায় করেন। এসব নিয়ে প্রতিবছরই কৃষকদের সঙ্গে অপারেটরদের বিরোধ এমনকি হামলা ও মামলা পর্যন্ত পৌঁছায়। বিনা পুঁজিতে অধিক মুনাফা হওয়ায় প্রতিবছরই অপারেটর নিয়োগ পেতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা শুরু করেন দেনদরবার। এতে অপাটের নিয়োগ পেতে প্রকৃত কৃষকরা হয় বঞ্চিত, কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সাংসদগণ পড়েন চরম বিপাকে। এদিকে সাধারণ কৃষকের কথা মাথায় রেখে স্থানীয় সাংসদ (এমপি) ও কৃষিবিদ ওমর ফারুক চৌধূরী অভিনব পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ব্যক্তি বিশেষ বা এককভাবে নয় সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকূপ পরিচালনা করতে প্রতিটি নলকূপের জন্য ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এসব কমিটি গভীর নলকূপ দেখভাল করবে, আর অপারেটর শুধু পরিচালনা করবে এবং প্রতিবছর রেজুলেশনের মাধ্যমে আয়-ব্যয়ের হিসেব সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিল করবেন। এদিকে সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকূপ পরিচালনা করায় কৃষকের সেচ খরচ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে বন্ধ হয়েছে অপারেটরদের সেচ নিয়ে বাণিজ্য ও কৃষকদের হয়রানি। তানোরে সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকূপ পরিচালনা এখন অন্যদের কাছে মডেলে পরিণত হয়েছে। বিএমডিএ ইতিমধ্যে গোদাগাড়ী, মোহনপুর, মান্দা ও পবা উপজেলায় সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকূপ পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে। এব্যাপারে বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সাংসদ মহোদয়ের এই পরিকল্পনা যুগোপযোগী ও প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, এভাবে গভীর নলকূপ পরিচালনা করায় একদিকে কৃষকেরা যেমন লাভবান হচ্ছেন, তেমনি অন্যদিকে অপারেটর নিয়োগ করা নিয়ে জটিলতার নিরসন হয়েছে। তিনি উপজেলার সকল কৃষকদেরই এভাবে সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকূপ পরিচালনার জন্য সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকূপ পরিচালনা করায় এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ফিরে এসেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তানোরে গভীর নলকূপ সমিতিতেই স্বস্তি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ