পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসন্ন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)-এর ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় দ্বিতীয়বারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ বা গ্রাজুয়েশনের মানদন্ড পূরণ ও উত্তরণের সুপারিশ লাভ করতে চলেছে বাংলাদেশ।উত্তরণ প্রক্রিয়াকে মসৃণ ও টেকসই করার লক্ষ্যে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক সুযোগসুবিধাসমূহ আরও বেশী সময় অব্যাহত রাখার জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছে। আসন্ন ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আয়োজিত এক্সপার্ট গ্রুপ সভার এক বৈঠকে বাংলাদেশ গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএন-সিডিপি’র নিকট এই আহবান জানায়।
অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত উক্ত বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) জুয়েনা আজিজ। বৈঠকে একটি উপস্থাপনার মাধ্যমে স¤প্রতিক সময়ে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভ‚তপূর্ব উন্নয়ন এবং স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ অবস্থান তুলে ধরেন ইআরডি’র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।
সভায় আশা প্রকাশ করা হয়, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য সিডিপি’র ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের সকল মানদন্ড পূরণ করবে। একই সঙ্গে উক্ত উত্তরণ প্রক্রিয়াকে টেকসই ও মসৃণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের পক্ষ হতে সিডিপি’র নিকট ২০২১ সাল থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদী প্রস্তুতিকালীন সময় প্রদানের আহবান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গত ২০১৮ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত সিডিপি’র সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় প্রথমবারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের মানদন্ড পূরণে সক্ষম হয়েছিল। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোন দেশ পরপর দু’টি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদন্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের সুপারিশ লাভ করে।
সিডিপি’র প্রবিধান অনুযায়ী উত্তরণের সুপারিশ লাভের পর একটি দেশ তিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত প্রস্তুতিকালীন সময় ভোগ করতে পারে। আগামী মাসে ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় উত্তরণের সুপারিশ লাভের পর পাঁচ বছর প্রস্তুতিকাল শেষে বাংলাদেশের গ্রাজুয়েশন ২০২৬ সালে কার্যকর হবে।
প্রস্তুতিকালীন এই সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রাপ্ত সকল সুযোগসুবিধা ভোগ করতে পারবে। তাছাড়া বর্তমান নিয়মে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর আরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
বাংলাদেশের বক্তব্য উপস্থাপনকালে ইআরডি সচিব উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ এমন একটি সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হতে চলেছে যখন সমগ্র জাতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে।
তিনি উপস্থাপনায় সামষ্টিক অর্থনীতি ও আর্থসামাজিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ সা¤প্রতিক বছরগুলোতে যে অভ‚তপূর্ব সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে তার উপর আলোকপাত করেন। একইসঙ্গে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পর বাংলাদেশের জন্য যে সমস্ত সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে তা কাজে লাগানোর জন্য সরকার সকল পক্ষকে সাথে নিয়ে কি কি ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে/গ্রহণ করবে তাও তিনি তার উপস্থাপনায় তুলে ধরেন।
ইআরডি সচিব মহোদয় তার উপস্থাপনায় উত্তরণ পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক সুযোগ সুবিধাসমূহ অব্যাহত রাখা, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ অর্জনের লক্ষ্যে উন্নয়ন অর্থায়নের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক মহলের নিকট আহবান জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা, জেনেভায় বাংলাদেশের জাতিসংঘ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ইআরডি’র যুগ্মসচিব ও সাপোর্ট টু সাস্টেইনেবল গ্রাজুয়েশন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ফরিদ আজিজসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সমূহের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিডিপি’র সভাপতি হোসে আন্তনিও অকাম্পো সহ সিডিপি’র উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন গতিধারার ভূয়সী প্রশংসা করেন।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।