পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান (৫৩) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। মিজানুর রহমান খান মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জাতীয় প্রেসক্লাবে সকাল ১১টায় এবং বেলা ১২টায় কাওরান বাজারে প্রথম আলো অফিসের সামনে ৩য় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠিতে তার দাফন সম্পন্ন হবে।
মিজানুর রহমান খান করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন। করোনার নমুনা পরীক্ষায় গত ২ ডিসেম্বর পজিটিভ রিপোর্ট আসে। প্রথমে গত ৫ ডিসেম্বর তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শারীরিক সমস্যা বাড়লে সেখান থেকে গত ১০ ডিসেম্বর তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জাহিদ আহমেদ সিদ্দিকী জানান, ৯ জানুয়ারি সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তে থাকে। ওই দিন বিকেল পৌনে পাঁচটায় তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট (কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস) দেওয়া হয়। গতকাল সোয়া পাঁচটায় হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান ১৯৬৭ সালের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠির নলছিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। বরিশালের বিএম কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী মিজানুর রহমান খান তিন দশক ধরে সাংবাদিকতা করেছেন। সংবিধান ও আইন নিয়ে লেখালেখি করেন। দেশে সংবিধান ও আইন-আদালত বিষয়ক সাংবাদিকতায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি।
মিজানুর রহমান খানের সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি এসএসসি পাস করার পর, বরিশালের স্থানীয় পত্রিকায়। নব্বইয়ের দশকে দৈনিক খবর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর দৈনিক বাংলাবাজারে প্রধান প্রতিবেদক ও দৈনিক মুক্তকণ্ঠে ক‚টনৈতিক প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। পরে ডেইলি নিউ ন্যাশন, দৈনিক মানবজমিন, দৈনিক যুগান্তরে বিশেষ প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। দৈনিক যুগান্তর ও সমকালে উপসম্পাদক ছিলেন তিনি। এরপর দৈনিক প্রথম আলোতে যোগ দিয়ে সবশেষ যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন মিজানুর রহমান খান।
সংবিধান ও আইন-আদালত বিষয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রচুর কলাম ও মতামত লিখেছেন মিজানুর রহমান খান। সংবিধান, সরকার ব্যবস্থা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ‘১৯৭১: আমেরিকার গোপন দলিল’, ‘সংবিধান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্ক’, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এক অশনি সংকেত’, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের স্বরূপ’ ও ‘মার্কিন দলিলে মুজিব হত্যাকান্ড’।
মিজানুর রহমান খানের মুত্যুতে শোক জানিয়েছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান, বরিশাল সাংবাদিক সমিতি ঢাকার সভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার কাওসার হোসেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।