রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃজেলা ছিনতাই ও ডাকাত দলের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. সিদ্দুকুর রহমান, মো. নুরু মিয়া, মো. হেমায়েত হোসেন ওরফে হিমু ও মো. আবুল বাশার। তারা দিনের বেলায় ফেরিওয়ালা সেজে ডাকাতি, চুরি ও ছিনতাইয়ের জন্য প্রস্তুতি নেয়। আর গভীর রাতে বা সুবিধামতো চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি করে থাকে তারা। গতকাল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এমন তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল ডিএমপি গোয়েন্দা অফিসের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, গত শনিবার গাজীপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, একটি মোটরসাইকেল, একটি তালা কাটার কার্টার, একটি লাগেজ, ১৯টি কাটা তালা, ছয়টি অ্যান্ড্রয়েড ডেমো মোবাইল ফোন, ১৬টি এয়ারটেল সিম, দুইটি ডেবিট কার্ড ও চারটি এনআইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, মিরপুর এলাকায় চুরির ঘটনায় গত বুধবার মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ ওই মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে। সেই মামলার সূত্র ধরেই এ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, এ চক্রের মূল কাজ হল গাড়ি ছিনতাই। ছিনতাইকৃত গাড়ি দিয়ে ঢাকার আশেপাশে আশুলিয়া, গাজীপুর ও ঢাকার উত্তরায় বাজার ও দোকান-পাট লুট করে। এই চক্রের আরও কিছু সদস্য আছে। তাদের কাজ হলো রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রাইভেটকার কিংবা মোটরসাইকেল ছিনতাই করা। সেই গাড়িটি তারা ছিনতাই ও চুরির কাজে ব্যবহার করত। চুরি ছিনতাই এর কাজ শেষ হলে নিজেরা বাঁচতে কোন এক নির্জন স্থানে গাড়ি ফেলে রেখে চলে যেত এ চক্রটি।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, এই চক্রটি বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চুরি ও ছিনতাই করে। গ্রেফতারকৃতরা ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চুরি ও ছিনতাই করত। চুরি-ছিনতাই করাকালে যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য তারা রাতের বেলা বেছে নেয়। রাস্তার পাশে বিভিন্ন দোকানে বিশেষ করে মোবাইল দোকানগুলোতে চুরি করত চক্রটি। কোন দোকানে চুরি করলে সবকিছু নিয়ে নিত, কোনটা আসল আর কোনটা নকল তখনও তাদের দেখার সুযোগ থাকত না। গাড়ি চুরি বা ছিনতাই রোধে গাড়িতে ট্র্যাকার মেশিন ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানান ডিবির এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ী চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারি পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস বলেন, গ্রেফতারকৃতরা অত্যন্ত কৌশলে দিনের বেলায় ফেরিওয়ালা সেজে গাড়ীর মালিকদের গাড়ী কোথায় রাখে, কোন দোকান ও বাড়ীতে নিরাপত্তাকর্মী নেই এবং চুরি করার আগমন ও প্রস্থান পথ রেকি করে। পরবর্তী সময়ে ওই চক্রটি গভীর রাতে বা সুবিধামতো সময়ে কার্টার দ্বারা বিভিন্ন বাড়ী ও দোকানের তালা কেটে টাকা, গাড়ী, মোবাইলসহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে দ্রুত গাড়ীযোগে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।