Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মালিক-শ্রমিকদেও বৈঠক সমঝোতা ছাড়াই সমাপ্ত

নৌ ধর্মঘট অব্যাহত

প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ চার দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট নিয়ে সরকারের প্রতিনিধিরা এবার লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলেও শ্রম মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক সমঝোতা ছাড়াই শেষ হয়েছে। সমঝোতার বৈঠকে শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে মালিকদের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া না মেলায় সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় শেষ হয়। এতে করে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) শ্রম পরিদপ্তরে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে দাবি পূরণ না হওয়ায় ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহ আলম। বৈঠক শেষে শ্রম পরিদপ্তরের পরিচালক এফ এম আশরাফুজ্জামান বলেন, শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘট নিয়ে মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে ফের বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এই অব্যাহত ধর্মঘটের কারণে বেশিরভাগ পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীরা দুর্ভোগের কবলে পড়েছেন এবং পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। তবে শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট সত্ত্বেও নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে মালিকদের পক্ষ  থেকে সরকারকে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে বিআইডব্লিউটির পরিবহন পরিদর্শক হুমায়ন কবির জানিয়েছেন, ধর্মঘটের মধ্যেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর সদরঘাট থেকে ১০টি লঞ্চ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। আরও কিছু লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন বুধবার ৫০টি লঞ্চ সদরঘাট ছেড়ে যায় বলেও জানান তিনি।
গতকালের সমঝোতা বৈঠকের আগে বৃহস্পতিবার সেগুন বাগিচার স্বাধীনতা হলে এক সংবাদ সম্মেলনে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী সমস্যা সমাধানে আশাবাদ ব্যক্ত করলেও বৈঠক থেকেও কোনো সমাধান আসেনি। শাজাহান খান সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, শ্রমিকরা ধর্মঘট নয়, কর্মবিরতি পালন করছে। ধর্মঘট বা কর্মবিরতি যাই হোক দুর্ভোগ হচ্ছে এটা ঠিক। এ জন্য মালিকদের খামখেয়ালিপনা আছে। ব্যবসায় আয় অনেক বেড়েছে। সেই হিসেবে শ্রমিকদের বেতন বাড়েনি। তবে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া শ্রমিকদেরও এভাবে আন্দোলনে যাওয়া ঠিক হয়নি।
উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে নৌ পরিবহনমন্ত্রী বলেন, এর আগে ২৪ এপ্রিল ধর্মঘটের সময় শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া পূরণে একটা কমিটি করা হয়েছিল। শ্রম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এই কমিটির প্রধান। তবে শ্রমিকদের সুবিধাদি বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল তা বাস্তবায়ন না করে এর বিরুদ্ধে দু’জন কার্গো মালিক হাইকোর্টে যান। মূলত এ কারণেই এবার শ্রমিকরা নতুন করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে নৌযান ধর্মঘটের প্রেক্ষিতে সরকারের নৌমন্ত্রী শাজাহান খান মালিক ও শ্রমিকপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে একটি সমাধানে  পৌঁছে ছিলেন। সেই বৈঠকে সর্বনিম্ন মজুরি ৭ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকায় উন্নীত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। সেই মোতাবেক ধর্মঘট স্থগিত করেছিল শ্রমিকরা। তবে মালিকপক্ষ এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করে বিষয়টি নিয়ে আদালতে রিট আবেদন করে। এবার আবার ২২ আগস্ট মধ্য রাত থেকে শুরু হয়েছে ধর্মঘট।







 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মালিক-শ্রমিকদেও বৈঠক সমঝোতা ছাড়াই সমাপ্ত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ