Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকা ওয়াসা রোল মডেল

সংবাদ সম্মেলনে তাকসিম এ খান, এবার ঢাকার পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব পেল দুই সিটি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেছেন, ঢাকা ওয়াসা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশনকারী একটি সেরা সংস্থা। এই কাজে সংস্থাটি বিশ্বের জন্য রোল মডেল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পানি সরবরাহ সংস্থা গবেষণার জন্য ঢাকা ওয়াসায় আসছে। রাজধানীর পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে পেল দুই সিটি কর্পোরেশন। এটি এতদিন ওয়াসা দেখভাল করেছে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর ওয়াসা ভবনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসা থেকে সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৮৮ সালে জারি হওয়া একটি ভুল প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার বৃষ্টির পানি অপসারণের দায়িত্ব¡ ঢাকা ওয়াসাকে দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির পানি অপসারণের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার ছিল না। দেশের অন্যান্য শহরেও এই দায়িত্ব ওয়াসার কাছে নেই। সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনই দায়িত্বটি পালন করছে। কিন্তু ঢাকায় শুধু ব্যতিক্রম। ১৯৮৮ সালের ৬ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব কাজী আব্দুল মতিনের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর থেকে ঢাকা মহানগরীর বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা মিউনিসিপাল করপোরেশনের ওপর ন্যস্ত করার স্থলে ঢাকা ওয়াসার ওপর ন্যস্ত করার সরকারি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ওই বছর থেকে রাজধানী ঢাকার বৃষ্টির পানির নিরসনের দায়িত্ব ছিল ঢাকা ওয়াসার। কিন্তু এই দীর্ঘ ৩২ বছর ওয়াসা সেই দায়িত্ব পালন করেনি বলে অভিযোগ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও নগর বিশ্লেষকদের। যে কারণে সামান্য বৃষ্টিতে নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এর পরেও এই ব্যর্থতার দায় ঢাকা ওয়াসা নিতে চাচ্ছে না।

ব্যবস্থপনা পরিচালক বলেন, ১৯৮৮ সালে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর থেকে এই দায়িত্ব নিয়ে ঢাকা ওয়াসাকে দেওয়া হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপনেই বলা আছে দায়িত্বটি সিটি করপোরেশনের কাছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু একটি ভুল প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসাকে দেওয়া হয়।

বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতে পুরো রাজধানী বৃষ্টি পানিতে ডুবে থাকে, তাই সংস্থাটি এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে এখন সিটি করপোরেশনকে দিতে চায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ওয়াসার দায়িত্ব নয়। আমাদের সব টেকনিক্যাল সাপোর্ট আমরা সিটি করপোরেশনকে দিয়ে দেবো। আইন অনুযায়ী এই দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। বিষয়টি অনুধাবন করার পর ২০১২ সালে আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানাই। তখন মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে দেয়। কিন্তু সেই কমিটির রেজাল্ট আলোর মুখ দেখেনি। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে আরও একটি কমিটি গঠন করা হয়। ২০১৬ সালে মেয়র আনিসুল হক আমাদের সঙ্গে একমত হয়ে এই দায়িত্ব তিনি নিতে চেয়েছিলেন। ওয়াসার মালিকানাধীন খালের পর এবার বৃষ্টির পানিও নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করতে চায় সংস্থাটি। এতে সংস্থাটির অর্ধেকের চেয়ে কাজ কমে গেছে। এ অবস্থায় ঢাকা ওয়াসা সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণে যেতে চায় কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে এমডি বলেন, এটা মন্ত্রণালয়ও বলতে পারবে না। ওয়াসার অধীনে থাকাবস্থায় ঢাকার খালগুলো ধীরে ধীরে মৃত ও অকেজ হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ করে আসছিলেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। প্রকৌশলী তাকসিম বলেন, একটি খালের বহুবিধ ব্যবহার থাকলেও ওয়াসার দায়িত্ব ছিল কেবল খাল ব্যবহার করে পানি সরিয়ে দেয়া। ফলে খালগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া খাল নিয়ে আলাদা কোনো বাজেটও ওয়াসার ছিল না। তিনি বলেন, আমরা কেবল খাল থেকে সলিড বর্জ্য নিষ্কাশন করতাম। অথচ একটা খাল হতে পারে সুন্দর জলাশয়, খাল হতে পারে নৌপথ, আবার খালের দুই ধারে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা যায়। এর কোনোটিই করার অধিকার আমাদের ছিল না। এসব কারণে খালের পূর্ণাঙ্গ রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়নি।

অনুষ্ঠানে ওয়াসার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদ হোসেন, পরিচালক (উন্নয়ন) আবুল কাশেম, পরিচালক (কারিগরি) শহীদ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ