পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ভাবনী উদ্যোগ “ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকারকে সামনে রেখে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) আগামী ২০২১ সালের বিজয়ের মাস উপলক্ষে ১৭৩ টি উপজেলা শুভ উদ্বোধনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এর ফলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিদ্যুৎ শক্তিকে কাজে লাগানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার আমার গ্রাম-আমার শহর বাস্তবায়নের কাজ তরান্বিত ও সহজ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রাপ্ত আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন, গৃহহীন অসহায় জনগণকে পুনর্বাসিত করার জন্য ১ হাজার ১৯২টি প্রকল্প-গ্রামে ৮৫ হাজার ৫৭০টি পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন(অবঃ) ইনকিলাবকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়্ন তথা ভিশন ২০২১ অর্জনপূর্বক ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন। ২০৩০ সালের মধ্যে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য, আধুনিক এবং টেকসই বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়ন করে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে সারা দেশে নিরলসভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আগামীতেও দিবে।
জানা গেছে, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুৎ সুবিধার ফলশ্রুতিতে পল্লী জনপদের ব্যাপক জনগোষ্ঠী মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে। গ্রামের শিক্ষার্থীরা শহরের আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতি, উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের যোগ্যতা, দক্ষতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারাদেশে প্রায় ৫৬ হাজার ১৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২কোটি ৫১ হাজার ২৮৯ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের কারণে কম্পিউটার, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও অন্যান্য আধুনিক উপকরণ ব্যবহারে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে ব্যাপক ভূমিকার রাখছে। ইতোমধ্যে আরইবির আওতাধীন ৪৬২টি উপজেলার গ্রীডভূক্ত এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে ২৮৮টি উপজেলার শতভাগ বিদ্যুতায়নের শুভ উদ্বোধন করেছেন। ১৭৩ টি উপজেলা বিজয়ের মাসেই শুভ উদ্বোধনের প্রস্তুতি নো হয়েছে। বর্তমানে আরইবি’র সারাদেশে গ্রাহক সংখ্যা ৩ কোটি ৫ লাখ, যা জাতীয় গ্রাহক সংখ্যার প্রায় ৮০ %। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৩০ বছরে মাত্র ৭৪ লাখ গ্রাহককে সংযোগ প্রদান করা হয়েছিল। অপরদিকে, বর্তমান সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পৌনে ১২ বছরে ২ কোটি ৩১ লাখ গ্রাহক সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। ২০০৮ সাল পর্যন্ত যেখানে পল্লী অঞ্চলের মাত্র ২৭শতাংশ জনগণ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করত সেখানে আজ ৯৯ শতাংশ জনগণ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। দুর্গম, প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে অবস্থিত অফগ্রিড ০১ টি উপজেলাসহ (পটুয়াখালির রাঙ্গাবালি) ১০৫৯ টি গ্রামে চলমান শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। ২৯ টি গ্রাম যেগুলো কিনা বেশিরভাগই দুর্গম পাহাড়ি, উপকূলীয় এলাকা ও চরাঞ্চলে অবস্থিত, সেখানে সোলার মিনিগ্রিডের মাধ্যমে মুজিববর্ষেই বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে আরইবি বদ্ধপরিকর। আরইবির সেবা বর্ষ হিসেবে ঘোষিত মুজিববর্ষেই শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা সম্ভবপর হবে। তবে, শুধুমাত্র শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেই আত্মতৃপ্তিতে না ভুগে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, বাণিজ্য, মানবসম্পদ উন্নয়ন, আইসিটিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষেত্রসমূহের প্রতিষ্ঠা এবং বিকাশের ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সুখী, সসৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে আরইবি বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছে এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করছে। কৃষিখাতের বিকাশকল্পে বর্তমানে ৩ লাখ ৫৩ হাজার সেচ গ্রাহকের মাঝে আরইবি কর্তৃক বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে দেশের প্রায় ৫৫ লাখ হাজার ৫৬ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে এবং এতে দেশে খাদ্য উৎপাদন ব্যাপক পরিমাণে বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়েছে। কৃষিখাত যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে খাদ্যশস্যসহ বিভিন্ন শস্যের বহুমুখীকরণ সম্ভব হয়েছে। কৃষিখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে সেচ নীতিমালা সহজীকরণ হয়েছে। ডিজেল চালিত যন্ত্রপাতি অপেক্ষা বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতি অধিক কার্যকর।
পল্লী অঞ্চলে বসবাসরত অসহায়, গরিব, দুঃস্থ মানুষের চিকিৎসার জন্য স্থাপিত প্রায় ১৪,০০০ কমিউনিটি ক্লিনিকের সবগুলোতেই আরইবি’র উদ্যোগে পবিস-এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের ফলে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে, মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস পাচ্ছে তথা গ্রামীণ জনগণের স্বাস্থ্য সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারী ও বেসরকারী ১৯৯৩টি হাসপাতালেও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। এতে গ্রামীণ চিকিৎসা সেবা সূলভ ও সহজতর হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা সম্প্রসারিত হওয়ায় সরকার কর্তৃক গ্রামে বসবাসরত জনগণের তথ্য ও সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৪ হাজার ৫৫৪ টি ইউনিয়ন পরিষদ তথ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।