পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উদ্বেগ আর আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা, নিমতলিসহ আশেপাশের এলাকার মানুষদের। আর এই আতঙ্কের কারন, ব্যাপক ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যালের মজুদ। বারবার দুর্ঘটনার পরও সরানো যাচ্ছে না এসব কারখানা। স্থানান্তরের বিকল্প জায়গা না থাকার অজুহাত দেখিয়ে মালিকরা সরাচ্ছেনা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে ইতিমধ্যে ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশন থেকে পুরনো ঢাকার সব অবৈধ কারখানার তালিকা করা হয়েছে। জানুয়ারী মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ইনকিলাবকে আগামী ছয়মাসের মধ্যে পুরনো ঢাকার সব অবৈধ কেমিক্যাল কারখানা এবং প্লাষ্টিক গোডাউন সরিয়ে নেয়া হবে। বিকল্প জায়গা দেয়ার পরও মালিকদের একগুয়েমির কারনে সরানো যাচ্ছেনা এসব কারখানা। তবে, এবার কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিমতলির পর চকবাজার। ঘটনা ঘটলেই আলোচনা, এরপর সব শেষ। ঘনবসতিপূর্ন পুরান ঢাকা, যেন একটা কেমিক্যাল নগরি। যার সবটাই অবৈধ ব্যবসা। বর্তমানে পুরান ঢাকায় রয়েছে ২৫ হাজার কেমিক্যাল গোডাউন। এর মধ্যে মাত্র আড়াই হাজার কেমিক্যাল গুদামকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে সিটি করপোরেশন। বাকী অবৈধ ব্যবসায়ীদের তথ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় জানলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এখানে প্রায় ২০০ ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবসা চলে। ২০১০ সালের জুন মাসে নিমতলি ট্র্যাজেডির পর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এই এলাকা থেকে অবৈধ রাসায়নিক কারখানা কামরাঙ্গীচর ও কেরানিগঞ্জে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো এখনো সরেনি একটি কারখানাও। ২০১৯ সালে আবার আগুন লাগে চুরিহাট্টা এলাকায়। ঝড়ে পড়ে ৭১টি তাজা প্রান। কারখানা সরাতে আবার গঠিত হয় কমিটি। এবারও সরেনি তারা।
এলাকাবাসীরা জানান, এসব কারখানার কারনে আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। আশঙ্কা আবার বড় কোনো দূর্ঘটনার। তবে, কারখানা মালিকরা বলছেন, ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরানোর মতো বিকল্প কোনো জায়গা তারা পাচ্ছেনা। ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১২৪ জন নিহত হন। নিমতলী ট্র্যাজেডিকে ওয়েকআপ কল› হিসেবে নিতে যখন প্রশাসন ব্যর্থ হলো, তখনি চুড়িহাট্টায় তার বেদনাদায়ক পুনরাবৃত্তি ঘটল। নিমতলীর ঘটনার পর কেমিক্যাল গোডাউনের বিরুদ্ধে কিছুদিন দৌড়ঝাঁপ হওয়ার পর তা আবার থেমে যায়। চকবাজারের চুড়িহাট্টার অগ্নিকান্ডের পর কারণ অনুসন্ধানে সে সময় গঠিত একাধিক সংস্থা তদন্ত প্রতিবেদনে কয়েকটি জরুরি সুপারিশ করা হয়।
আবাসিক এলাকায় আইনত বিপজ্জনক কেমিক্যালের কারবার নিষিদ্ধ হলেও পুরান ঢাকার অলিগলির কমবেশি প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে কেমিক্যাল গোডাউন। বাড়ির মালিকরা সেখানে অধিক টাকার আশায় বছরের পর বছর এসব ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। চুড়িহাট্টার ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী সব কেমিক্যাল কারখানা দ্রæত স্থানান্তরের নির্দেশনা দেন। তারই আলোকে একত্রে সব ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরাতে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে জমি অধিগ্রহণ চলছে। একই সঙ্গে চলতি বছরে টঙ্গী ও শ্যামপুরে শতাধিক গোডাউন স্থানান্তর হবে। সরকার এই কার্যক্রম অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রæত বাস্তবায়ন করুক। প্রয়োজনে পুরান ঢাকায় যারা এসব ব্যবসা অবৈধভাবে পরিচালনা করছেন এবং যারা ভাড়া দিচ্ছেন, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এ ব্যাপারে জনসচেতনতাও জরুরি। এর পাশাপাশি পুরান ঢাকার অপরিকল্পিত স্থাপনা ভেঙে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ পরিকল্পিত নগরায়ণের ব্যাপারেও দীর্ঘমেয়াদে পদক্ষেপ নিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।