Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাভাবিক হয়নি পরিবেশ : ঘটনা খোলাসা করেনি কর্তৃপক্ষ

প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী আনোয়ারায় ডাই এমোনিয়া ফসফেট (ড্যাপ-১) সার কারখানায় এমোনিয়া প্লান্টের ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণের দু’দিন পরও সেখানকার পরিবেশ স্বাভাবিক হয়নি। বাতাসে কমেনি এমোনিয়ার মাত্রা। দুর্ঘটনা কবলিত আশেপাশের দুই কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন পুকুর-জলাশয়ের প্রায় সব মাছ মরে ভেসে উঠেছে। মরে গেছে পাখি, পোকা-মাকড়সহ জলজ প্রাণি। গবাদিপশুও মারা যাচ্ছে। বিবর্ণ হয়ে গেছে গাছপালা। বাতাসে এখনো এমোনিয়া গ্যাসের গন্ধ মিলছে। ফলে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যায় পড়ছেন স্থানীয়রা। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছে তারা। তবে কবে কারখানার উৎপাদন শুরু হবে জানাতে পারেননি তারা।
এমোনিয়া সারকারখানায় দুর্ঘটনার পর এমোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার শত শত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লেও এ ঘটনায় সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে কারখানার আশপাশের এলাকার পরিবেশে। দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর থেকে এলাকায় নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠে। মরে ভেসে উঠে পুকুর-ডোবা জলাশয়ের মাছ। যেসব জলাধারে গ্যাস পড়েছে গতকাল (বুধবার)ও সেখান থেকে মরা মাছ ভেসে উঠে। এছাড়াও এমোনিয়া গ্যাস বাতাসে মিশে যাওয়ায় ক্রমেই বিবর্ণ প্রকৃতির চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আর দুই দিনেও স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছে না স্থানীয়রা। এ ঘটনার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে তারা। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবী, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে কবে নাগাদ এই কারখানায় আবারও উৎপাদন শুরু হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কর্মকর্তারা। এদিকে বিসিআইসি ও জেলা প্রশাসন গঠিত দু’টি কমিটি তদন্ত কাজ চালাচ্ছে। এ ঘটনায় গ্যাসে অসুস্থ হয়ে ভর্তি হওয়া অনেকেই ছেড়ে গেছেন হাসপাতাল।
গ্যাস নিঃসরণকারী ট্যাংকটি ৫০ ফুট দূরে সরে গেলেও সেটি বিস্ফোরিত হয়েছিল নাকি ফুটো হয়ে এ ঘটনা ঘটেছে তা খোলাসা করেনি কর্তৃপক্ষ। তারা প্রথমে বলেছে, গ্যাস লিকেজ হয়েছে। এরপর লোকজনকে গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। আশপাশের পরিবেশের ক্ষতি হবে না এমন আশ্বাসও দেয়া হয়েছিল কর্তৃপক্ষের তরফে। কিন্তু বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ট্যাঙ্কারটি লিকেজ নয়, বিস্ফোরিত হয়ে অন্তত ৫০ গজ দূরে ছিটকে পড়েছে।
ড্যাপ সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমল কান্তি বড়–য়া এবং বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ এন্ড করপোরেশনের (বিসিআইসির) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল দু’জনের কেউই কীভাবে এ ঘটনা ঘটল তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি। কারণ খতিয়ে দেখতে কমিটি করা হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন, যদিও ৫শ’ মেট্রিক টন এমোনিয়া ধারণক্ষমতার ট্যাঙ্কটি বিস্ফোরিত হয় বলে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা বলছেন। ঘটনার একদিন পর আশপাশে গ্যাসের ঝাঁঝ কমে এলেও ঘটনাস্থলে ঝাঁঝালো গন্ধ রয়েছে বলে ওই কারখানার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাভাবিক হয়নি পরিবেশ : ঘটনা খোলাসা করেনি কর্তৃপক্ষ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ